ইনসাইড পলিটিক্স

‘দোহাই লাগে বেইমানি করে কেউ নির্বাচনে যাবেন না’


প্রকাশ: 12/10/2023


Thumbnail

বিএনপি তার শরিক দলগুলোর সঙ্গে টানা বৈঠক করছে। গতকাল সন্ধ্যা থেকে বিভিন্ন সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বৈঠকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া অংশগ্রহণ করছেন। তিনি মূলত নীতিনির্ধারণে বক্তব্য দিচ্ছেন। আগামী চূড়ান্ত আন্দোলনের কৌশল নির্ধারণের জন্য এই বৈঠকে বিএনপি তার কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করছে। সরকার পতনের লক্ষে একদফা আন্দোলনকে কিভাবে চূড়ান্ত পরিণতির দিকে নিয়ে যাওয়া সম্ভব সে নিয়ে বিএনপি সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। আজও সন্ধ্যা থেকে এই বৈঠক শুরু হয়েছে। দুই দিনের বৈঠকের পর বিএনপি তার কর্মসূচি চূড়ান্ত করবে। 

আগামী ১৮ অক্টোবর বিএনপি ঢাকায় যে মহাসমাবেশ ডেকেছে সেই মহাসমাবেশের মাধ্যমে বিএনপি তার চূড়ান্ত কর্মসূচি ঘোষণা করবে বলে জানা গেছে। তবে তার আগে সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে শপথ পাঠ করাচ্ছে। সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোকে তারেক জিয়া বলছেন যে, আপনারা শপথ গ্রহণ করুন যে আপনারা বেইমানি করবেন না। যারা বেইমানি করবে তাদেরকে ইতিহাস ক্ষমা করবে না। এ ধরনের শপথ গ্রহণের মাধ্যমে তারেক জিয়া তার একনায়কতন্ত্র এবং কর্তৃত্ববাদী চেহারায় উন্মুক্ত করছেন বলে অনেকে মনে করছেন।

বিএনপির বিভিন্ন সূত্র গুলো বলছে, তারেক জিয়ার ধারণা যে সামনের দিনগুলোতে যখন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে সেই কর্মসূচিতে সরকার নানা রকম টোপ দেবে। সরকার একটি একতরফা নির্বাচন করতে চাইছে বলেও বিএনপির বিভিন্ন নেতারা মনে করেন। আর এরকম নির্বাচন করার জন্য নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরপরই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে নানা রকম প্রলোভন দেখানো হবে, তাদেরকে নির্বাচনে আসার জন্য নানান রকমের প্রণোদনা প্যাকেজও দেওয়া হতে পারে বলে মন্তব্য করা হয়েছে। এই সমস্ত গ্রহণ করে কেউ যেন ওই জোটের সাথে ঐক্য বা ঐক্যের সাথে বিশ্বাস ঘাতক না করে সেই বার্তাটি দিচ্ছেন লন্ডনে পলাতক তারেক জিয়া এবং বিএনপির অন্যান্য নেতারা। 

বিএনপি গতকালের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া তারা কোন অবস্থাতেই নির্বাচনে যাবে না। এমনকি যদি আন্তর্জাতিক মহল বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদেরকে নির্বাচনে যাওয়ার অনুরোধ করে সেক্ষেত্রেও তারা নির্বাচনে যাবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায় তাদের একমাত্র লক্ষ্য এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা কোনো রকম আপস সমঝোতা করবে না। এই সময়ের মধ্যে যারা আপস-সমঝোতা করবে তারা হবে জাতীয় বেঈমান। 

বিএনপির মধ্যে নানা রকম সন্দেহ ক্রমশ দানা বেঁধে উঠছে। বিশেষ করে তৃণমূল বিএনপি আত্মপ্রকাশের পর বিএনপির অনেকেই মনে করছেন যে যখনই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে এবং যে মুহূর্তে সরকার নির্বাচনের জন্য সকল রাজনৈতিক দলকে আহ্বান জানাবে তখন বিএনপির মধ্য থেকে অনেকে তৃণমূল বিএনপিতে যোগদান করতে পারে। আবার যে ৩৪ টি শরিক দলকে নিয়ে বিএনপি আন্দোলন করছে তাদেরও অনেকে নির্বাচনের টোপ গিলতে পারে। আর এরকম একটি পরিস্থিতি যেন না হয় সেই জন্যই বিএনপির শরিকদের সঙ্গে টানা বৈঠক করছেন। টানা বৈঠকের মাধ্যমে তাদের কাছ থেকে আসলে এক ধরনের মুচলেকা নিচ্ছেন যে তারা বেইমানি করবেন না। কিন্তু শরিকদের মধ্যে কোনো কোনো নেতার মধ্যে এ নিয়ে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। তারা বলছেন যে শরিকরা কখনো বেইমানি করে না। অতীতের তারেক জিয়াই বেইমানি করেছে। বিশেষ করে ২০১৮’র নির্বাচনে যাওয়াটা ছিল তারেক জিয়ার অর্থ লোভ। আর এ কারণেই শরিকরা মনে করেন যে তারা ঠিক আছেন। কিন্তু তারেক জিয়া শেষ পর্যন্ত ঠিক থাকবেন কিনা? তবে বিএনপিতে এখন ভবিষ্যতে যেন কেউ নির্বাচনের প্রলোভনের কাছে পরাস্ত না হয় সেটি ঠেকানোই বিএনপির এখন প্রধান লক্ষ্যে পরিণত হয়েছে। 


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭