এডিটর’স মাইন্ড

প্রশাসনে বিএনপি-জামায়াতপন্থীদের প্রকাশ্য তৎপরতা


প্রকাশ: 12/10/2023


Thumbnail

গত কয়েকদিন ধরেই প্রশাসনের চেহারা পাল্টে যেতে শুরু করেছে। বিএনপি-জামায়াতপন্থীরা এতদিন যারা নিষ্ক্রিয় ছিলেন, চুপচাপ ছিলেন, কেউ কেউ আওয়ামী লীগ সেজে ছিলেন তারা এখন প্রকাশ্য হচ্ছেন। প্রকাশ্যে সরকারের বিরোধিতা করছেন। বিভিন্ন ফাইলের কাজ ধীর গতি করছেন। কোথাও কোথাও উন্নয়ন অগ্রগতি এবং নির্বাচনী ইস্তেহার সংক্রান্ত কর্মকান্ড গুলোর ফাইলে বাধাগ্রস্ত করছেন। 

একমাস ধরে প্রশাসনের মধ্যে বিএনপি-জামায়াতপন্থীরা সক্রিয় হচ্ছিল। এখন তারা প্রচন্ড সক্রিয় আকার ধারণ করেছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে যারা পদোন্নতি বঞ্চিত তারা। প্রশাসনের সচিব পর্যায়ে যে সমস্ত জামায়াত এবং বিএনপিপন্থীরা রয়েছেন তারা এখন ধীরে চলো নীতি গ্রহণ করছেন। নির্বাচনের আগে তারা হঠাৎ করেই নিরপেক্ষ অবস্থানে চলে গেছেন। প্রকাশ্য তারা ঘোষণা দিয়ে বলছেন যে আমরা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী কোনো পক্ষের না। 

অন্তত দুইটি মন্ত্রালয়ের সচিবরা সরকারের দুটি নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত আটকে রেখেছেন। তাদের এই সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন কর্মকান্ড প্রায় থেমে আছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এই দুইজনই এতদিন নিজেদেরকে আওয়ামী লীগের বলে প্রচার করছিলেন। কিন্তু এখন তারা নিজেদেরকে নিরপেক্ষ প্রমাণের চেষ্টায় ব্যর্থ। এদের একজন তার নিজস্ব ব্যক্তিদের কাছে বলছেন যে দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসলে তিনি মন্ত্রিপরিষদ সচিব হবেন। সেই আশায় তিনি এখন নিরপেক্ষ হয়েছেন। অত্যন্ত স্পর্শকাতর একটি দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি কিভাবে এই মন্তব্য করেন তা নিয়ে সচিবালয়ে বিস্ময় সৃষ্টি হয়েছে।  

সচিবদের পরে অতিরিক্ত সচিব রয়েছে এবং বাংলাদেশে বর্তমানে অতিরিক্ত সচিবের আধিক্য সর্বজন বিদিত। এই অতিরিক্ত সচিবদের বেশিরভাগই মনে করেন যে তারা পদোন্নতি বঞ্চিত। তাদেরকে যথাযথ যোগ্যতা অনুযায়ী পদায়ন করা হয়নি। সচিব হওয়ার যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও তারা রাজনৈতিক কারণে বঞ্চিত হয়েছেন। এরা এখন সরকার বিরোধী হয়ে উঠেছেন। সরকারের যে কোনো সিদ্ধান্ত তারা আটকে দিচ্ছেন। শুধু সিদ্ধান্ত আটকে দেওয়া নয় বরং তারা প্রকাশ্যেই এখন সরকারের সমালোচনা করছেন। সামনের দিনগুলোতে কি হবে এনিয়ে তারা বিভিন্ন রকম আলাপ আলোচনা করছেন। 

বিভিন্ন বিএনপি এবং জামায়াতের প্রাক্তন এবং অবসরপ্রাপ্ত সচিবদের সঙ্গেও তাদের যোগাযোগের খবর পাওয়া যাচ্ছে। এই সমস্ত যোগাযোগের প্রেক্ষিতেই তারা আগের চেয়ে বেশি সাহস পাচ্ছেন বলে অনেকে মনে করেন। প্রশাসনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে যে তারা এখন মনে করছেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতির কারণে প্রশাসন নজরদারিতে আছে। এই সময় আওয়ামী লীগের পক্ষ অবলম্বন করা বা আওয়ামী লীগের স্বার্থ সংরক্ষণ করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হবে। 

প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তাদের সন্তান-সন্ততি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করে। তাদের আত্মীয় স্বজন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে থাকে। প্রশাসনের বেশ কিছু উর্ধতন কর্মকর্তার মার্কিন গ্রীন কার্ডও রয়েছে। তারা এখন ভয়ে নিরপেক্ষ হচ্ছেন। তবে প্রশাসনের যারা সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে তারা মনে করছেন যে ভিসা নীতি বা ভিসা নীতির ভয় একটা অজুহাত মাত্র। আসল কারণ হলো যে এই সমস্ত প্রশাসনের ব্যক্তিরা সব সময় বিএনপি-জামায়াতপন্থী ছিল এবং তারা বিএনপি-জামায়াতের স্বার্থ রক্ষার জন্যই ঘাপটি মেরেছিল। এখন তারা প্রকাশ্যে হচ্ছে। প্রশাসনে এই সক্রিয় বিএনপি-জামায়াতপন্থীদেরকে নির্বাচনের আগে সরকার কিভাবে সামাল দেবে সেটি এখন বড় প্রশ্ন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭