ইনসাইড বাংলাদেশ

বিশ্ব ডিম দিবসে ভোক্তার পুষ্টির বারোটা বেজেছে


প্রকাশ: 13/10/2023


Thumbnail


সারা বিশ্বে যখন বিশ্ব ডিম দিবস পালন হচ্ছে তখন বাংলাদেশে ডিম নিয়ে তেলেসমাতি চলছে। ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট তাদের ইচ্ছেমতো ডিমের দাম বাড়িয়ে ভোক্তার পুষ্টি গ্রহণে বারোটা বাজিয়েছে। কিছুদিন আগেও এক হালি (৪টা) ডিম ৩৮ থেকে ৪০টাকায় বিক্রি হতো সেখানে বর্তমানে স্থান ভেদে ৫২ থেকে ৫৫টাকা বিক্রি হচ্ছে।

সারাবিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও আজ বিশ্ব ডিম দিবস পালন করা হচ্ছে। ডিমের গুণগতমান সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে আজ শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) ‘বিশ্ব ডিম দিবস’ পালিত হচ্ছে। এবারের প্রতিপাদ্য ‘ডিমে পুষ্টি ডিমে শক্তি, ডিমে আছে রোগমুক্তি’।

দিবসটি উপলক্ষে এবার তেমন কোনো আয়োজন নেই। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ছোট পরিসরে আলোচনা সভার আয়োজন করেছে।

ডিমকে বলা হয়ে থাকে পরিপূর্ণ খাদ্য। সারা পৃথিবীতে মাত্র কয়েকটি খাদ্যকে ‘সুপার ফুড’ হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়- যার মধ্যে ডিম অন্যতম। বর্তমানে বাংলাদেশে ডিমের বাৎসরিক প্রাপ্যতা মাথাপিছু ১৩৫টি, গত বছর এই সংখ্যা ছিল ১৩৬টি।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (উৎপাদন) ড. এ বি এম খালেদুজ্জামান  গণমাধ্যমকে  বলেন, এ বছর ডিমের প্রাপ্যতা কিছুটা কমেছে। গত বছর প্রাপ্যতা ১৩৬টি ছিল, এবার ১৩৫টি। ফিডের ক্রাইসিসের কারণে জনপ্রতি প্রাপ্যতা একটু কমেছে। যেহেতু কিছু খামার সমস্যায় পড়েছে, তাই এবার প্রাপ্যতা বাড়েনি।

ডিমের সিন্ডিকেট ভাঙ্গার জন্য সরকার অনেক চেষ্টা করছে। ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে ভোক্তা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালাচ্ছে, বেশী দামে ডিম বিক্রির জন্য জরিমানা করছে। ব্যবসায়ীদের সাথে বসে আলোচনার ভিত্তিতে ডিমের দাম নির্ধারণ করে দিচ্ছে। তারপরও ব্যবসায়ীরা নিজেদের অবস্থানে অনঢ়। কোন কোন ব্যবসায়ী বলছে, যে জরিমানা দিয়েছি, সে জরিমানার টাকা কে দেবে? এটা তো আমাদের ব্যবসা করে পাবলিকের কাছ থেকেই তুলতে হবে।  

জিগাতলায় সববাস করেন লিখন খন্দকার। দোকানে গেছেন পণ্য কিনতে। ডিমের কথা বলতেই তিনি বলেন, আমরা যারা নিন্মমধ্যবিত্ত তারা মাছ, মাংস অনেক সময় কিনতে পানি না। এই ডিমই ছিল এক মাত্র ভরসা। কিন্তু এখন এই ডিমও আস্তে আস্তে খাদ্য তালিকা থেকে বাদ পড়ছে। দুধ, ডিম ধীরে ধীরে বড় লোকের খাদ্য তালিকায় চলে যাচ্ছে। তিনি বলেন, এ দেশের মানুষ এমনিতেই পুষ্টিহীন তার মধ্যে একের পর এক খাদ্য তালিকা থেকে পুষ্টিুযুক্ত পণ্য বাদদিলে এক সময় এ দেশের অধিকাংশ মানুষ পুষ্টিহীনতায় ভুগবে।

ঢাকায় ডিমের পাইকারি ও খুচরা বাজার সূত্রে জানা গেছে, গতকাল প্রতি ১০০ পিস বাদামি ডিম বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ২১০ এবং প্রতি ১০০ পিস সাদা ডিম বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ১৪০ টাকা, যা পরিবহন খরচ যোগ হয়ে খুচরা ব্যবসায়ীদের হাতে দাম পড়েছে ১ হাজার ২৩০ এবং ১ হাজার ১৬০ টাকা। খুচরা পর্যায়ে প্রতি হালি বিক্রি হয়েছে ৫৫ এবং প্রতি ডজন ১৬০ টাকায়। সাদা ডিমের হালি ৫০ টাকা। ডিমের বাজারদর নিয়ন্ত্রণে সরকার কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ১৫ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দিলেও এখন পর্যন্ত সেসব ডিম আসেনি।

ডিমের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে তেজগাঁওয়ের ডিম ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আমানত উল্লাহ বলেন, ‘গত সপ্তাহে টানা বৃষ্টিতে ক্ষতির কারণে বাজারে শাকসবজির দাম বেড়েছে। এতে ডিমের চাহিদা বাড়ায় দাম কিছুটা বেড়েছে। তবে সরবরাহ পর্যাপ্ত রয়েছে।’

১৯৯৬ সালে অনুষ্ঠিত আইইসি ভিয়েনা কনফারেন্স থেকে দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে বিশ্বব্যাপী চলছে একটি ইতিবাচক ক্যাম্পেইন। যার মধ্যদিয়ে বিশ্বের মানুষের পুষ্টি চাহিদা পূরণে ডিমের প্রয়োজনীয়তার বার্তাটি সবার কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে- প্রতি বছর অক্টোবরের দ্বিতীয় শুক্রবারে বিশ্বজুড়ে উদযাপিত হয় ‘বিশ্ব ডিম দিবস’।

 

 

 

 

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭