ইনসাইড পলিটিক্স

দ্বিতীয় এবং তৃতীয় শ্রেণীর নেতাদেরকেও নেতৃত্বের জন্য প্রস্তুত করছে বিএনপি


প্রকাশ: 14/10/2023


Thumbnail

সামনে বিএনপি কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করবে। এই কর্মসূচি চলবে নির্বাচন পর্যন্ত এবং নির্বাচনের পরও। বিএনপি মনে করছে যে সরকার শেষ পর্যন্ত নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মানবে না। আর এই দাবি না মানলে তারা আন্দোলনের পথেই হাঁটবে। কিন্তু এই আন্দোলন করতে গেলে সামনে অনেক বাধা বিপত্তি আসতে পারে, দলের সিনিয়র নেতারা গ্রেপ্তারের মুখে পড়তে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে সরকার বিএনপির ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে। বিএনপির একাধিক নেতার বিরুদ্ধে চলমান মামলা গুলোকে সক্রিয় করা হয়েছে। এ সমস্ত মামলায় অনেক বিএনপি নেতা দণ্ডিত হচ্ছেন। এছাড়াও যাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে সেই সমস্ত নেতাদেরকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। 

সাম্প্রতিক সময়ে শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সামনের দিনগুলোতে আরও যারা ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি জামিন নেননি তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল করা হবে বলে সরকারের দায়িত্ব সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে। এছাড়া যাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে মামলা রয়েছে সেই মামলা গুলো সরকার দ্রুত নিষ্পত্তি করবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরকম একটি পরিস্থিতির মধ্যে বিএনপির নেতারা নতুন কৌশল গ্রহণ করেছেন। বিএনপি মনে করছে যে পর্যায়ক্রমে তাদের সমস্ত সিনিয়র নেতারা কারান্তরীণ হতে পারেন। তাদেরকে সরকার গ্রেপ্তার করতে পারেন। বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ ধরনের বক্তব্য প্রকাশ্যে দিয়েছেন। আর এই রকম পরিস্থিতি হলে আন্দোলন যেন থেমে না যায়, আন্দোলনের গতি যেন বন্ধ না হয়ে যায় সেই জন্য বিএনপি প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে। বিএনপির দ্বিতীয় এবং তৃতীয় পর্যায়ের নেতাদেরকেও প্রস্তুত করা হচ্ছে যেন সিনিয়র নেতারা গ্রেপ্তার হলে তারা আন্দোলনের দিক নির্দেশনা দিতে পারেন এবং আন্দোলন চালিয়ে নিতে পারেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, বিএনপির প্রথম স্তরের স্থায়ী কমিটির সদস্য সদস্যরা রয়েছেন। এদের মধ্যে সবারই মামলা রয়েছে এবং এই সমস্ত মামলা গুলো এখন চলমান। এই মামলাগুলোতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, মির্জা আব্বাসের মতো নেতারা গ্রেপ্তার হয়ে যেতে পারেন। তাহলে কি হবে? এরপরে দ্বিতীয় স্তরে রাখা হয়েছে দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের। যারা বিকল্প নেতৃত্ব হিসেবে হাল ধরবেন। এদেরও বিভিন্ন নেতার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। এরা যদি শেষ পর্যন্ত আটক হন সেক্ষেত্রে তৃতীয় স্তরের নেতাদেরকে তৈরি করা হচ্ছে। এদের সবার সঙ্গে লন্ডনে পলাতক তারেক জিয়ার যোগাযোগ স্থাপন করা হয়েছে এবং লন্ডন থেকে যে নির্দেশনা দিবে সেই নির্দেশনা
প্রতিপালন করবেন এই স্তরের নেতারা।

বিএনপির সূত্রগুলো বলছে, বিএনপির আন্দোলনের কর্মসূচি তৈরি হচ্ছে লন্ডন থেকে। সেখান থেকে যে নির্দেশনা আসছে সেই নির্দেশনা অনুযায়ী এখানকার দায়িত্ব প্রাপ্ত নেতারা কর্মসূচি ঘোষণা করছেন। এরকম একটি পর্যায়ে যখন কর্মসূচি ঘোষণা করেন নেতারা গ্রেপ্তার হবেন তখন দ্বিতীয় স্তরের নেতারা কর্মসূচি গ্রহণ করবেন। দ্বিতীয় স্তরের নেতারা গ্রেপ্তার হলে তৃতীয় স্তরের নেতাদেরকে কর্মসূচির বার্তা পাঠানো হবে এবং তারা সেই কর্মসূচি পালন করবেন। 

বিএনপি মনে করছে ২০১৩’র আন্দোলনের অন্যতম ব্যর্থতার দিক ছিল বিকল্প নেতৃত্ব তৈরি না করা। দলের সিনিয়র নেতারা গ্রেপ্তার হলে কারা হাল ধরবেন, কারা কর্মসূচিকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন, মাঠে কর্মসূচির জন্য কারা বার্তা দেবেন সে ব্যাপারে তাদের পরিষ্কার ধারণা ছিল না। সেই পরিস্থিতি থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য এবার বিএনপি কৌশল পাল্টাচ্ছে। বিএনপির একেবারে তৃণমূল পর্যন্ত নেতাদেরকেও প্রস্তুত রাখা হয়েছে যেন প্রয়োজন হলে তারাও নেতৃত্ব দিতে পারেন।

বিএনপির একজন নেতা বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক জিয়া তারেক জিয়ার অনুপস্থিতির কারণে বিএনপির মধ্যে এক ধরনের বোধোদয় ঘটেছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দল চালাচ্ছেন। তিনি যদি দল চালাতে পারেন তাহলে অন্যরা পারবেন না কেন? এই প্রশ্ন থেকেই বিএনপির মধ্যে এখন বিকল্প নেতৃত্ব তৈরি করা এবং একাধিক ব্যক্তি গ্রেপ্তার হলেও আন্দোলন যাতে চালিয়ে নেওয়া যায় সেরকম প্রস্তুতি রাখা হচ্ছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭