ইনসাইড পলিটিক্স

বেগম জিয়ার সম্ভাব্য পরিণতি ঘিরে বিএনপির প্রস্তুতি


প্রকাশ: 15/10/2023


Thumbnail

বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে আসন্ন দুর্গাপূজার কারণে বিএনপি আন্দোলনের কর্মসূচি সীমিত রেখেছে। দুর্গাপূজায় যেন কোনরকম সন্ত্রাস সহিংসতার ঘটনা না ঘটে সেটি নিশ্চিত করার জন্যই বিএনপির নেতাকর্মীদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন দলের  মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কিন্তু বিএনপির বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে অন্য কথা। তারা বলছেন, বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ভালো না এবং শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটছে। বিভিন্ন সময় বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটার কারণে তাকে সিসিইউতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আর এই কারণেই বেগম জিয়ার যেকোনো সময় যেকোনো কিছু ঘটে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। আর এই সম্ভাব্য পরিণতিকে ঘিরেই বিএনপি এখন প্রস্তুতি নিচ্ছে।

বিএনপি মনে করছে যে এখন যদি কর্মসূচি দিয়ে মাঠ গরম করার চেয়ে বেগম খালেদা জিয়ার কি হয়? এটির পরে সর্বশক্তি নিয়োগ করা যায় তাহলে এক ঢিলে দুই পাখি মারা সম্ভব হবে। একদিকে তারা বেগম খালেদা জিয়ার কোনো সম্ভাব্য পরিণতির ফলে সাধারণ জনগণের মধ্যে যে আবেগ অনুভূতি সৃষ্টি হবে সেই আবেগ অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে মাঠ গরম করতে পারবে। অন্যদিকে বেগম খালেদা জিয়াকে ঘিরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির আন্দোলনকেও বেগবান করতে পারে। এরকম একটি কৌশল নিয়ে বিএনপি এগোচ্ছে। 

বিএনপির বিভিন্ন নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা মনে করছেন বেগম খালেদা জিয়ার যে অবস্থা তাতে তার জীবন সংকটপূর্ণ এবং যেকোনো সময় একটা কিছু ঘটতে পারে। এরকম কিছু ঘটার সাথে সাথে বিএনপির নেতাকর্মীরা যে যেখানে আছে রাস্তায় নেমে যাবে। বিএনপির মূল টার্গেট হলো বেগম খালেদা জিয়ার কিছু হওয়ার সাথে সাথে রাজপথ, সড়কপথ সবকিছু দখল করে নেওয়া এবং ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড করে দেওয়া। এটার ফলে বিএনপি দেখাতে পারবে যে এটা নির্বাচনের জন্য সহিংসতা নয় বরং জনগণের ক্ষোভের স্বতঃস্ফূর্ত বহিঃপ্রকাশ। 

নির্বাচন কেন্দ্রিক আন্দোলনে বিএনপি সন্ত্রাস সহিংসতা করতে পারবেন না। এটি আন্তর্জাতিক মহলের গাইডলাইন। কিন্তু খালেদা জিয়ার কিছু হলে যদি বিএনপির ভাষায় স্বতঃস্ফূর্ত জনগণ রাস্তায় নামে তাহলে তার দায় দায়িত্ব নেই। এই কারণেই বিএনপি তাদের ক্যাডার এবং সংগঠনের কর্মীদেরকে প্রস্তুত রেখেছে যেন এরকম কোনো পরিস্থিতি হওয়ার সাথে সাথে তারা রাস্তায় নামতে পারে, গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, নাশকতা করতে পারে। সে ব্যাপারে নির্দেশনাও দিয়ে রাখা হয়েছে।

বিএনপির টার্গেট হলো সচিবালয় মন্ত্রিপাড়া সহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা গুলোতে ঘেরাও এবং সেখানে নাশকতার সৃষ্টি করা। রাজপথ, সড়কপথ সবকিছু অচল করে দেওয়া। তবে সরকারের দায়িত্বশীল মহল গুলো বলছে যে বিএনপির এই ধরনের জ্বালাও পোড়াও এর হুমকি বা পরিকল্পনা সম্পর্কে সরকার ভালো মতোই অবগত এবং এ ব্যাপারে সরকারের যথাযথ প্রস্তুতিও আছে। বিএনপি অনেক কিছুই করতে চায়। কিন্তু করার মতো সাংগঠনিক শক্তি তাদের নেই। 

সরকারের পক্ষ থেকেও বেগম খালেদা জিয়ার সম্ভাব্য পরিণতির প্রেক্ষাপটে যে পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে সেই পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। বিএনপি এর আগেও বেগম খালেদা জিয়া যখন গ্রেপ্তার হয়েছিল তখন তারা সারা দেশ অচল পরিকল্পনা নিয়েছিল। কিন্তু সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি। এখনো বিএনপি যে পরিকল্পনা করছে সে পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবে বলে সরকার মনে করছে না। তবে বিএনপির নেতারা মনে করছেন খালেদা জিয়ার ইস্যু তাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকার দাবিকে  জোরালো করবে এবং এই আন্দোলনকে বেগমান করতে সহায়তা করবে। দুটি ইস্যুকে এক বিন্দুতে মেলানোর লক্ষ্য নিয়েই কাজ করছে বিএনপি।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭