ইনসাইড পলিটিক্স

নির্বাচন প্রতিহত করার কৌশল ঠিক করছে বিএনপি


প্রকাশ: 16/10/2023


Thumbnail

নির্বাচন কমিশন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে মাঠ পর্যায়ে নির্বাচন কর্মকর্তা এবং নির্বাচনী অফিস গুলোর নিরাপত্তা চেয়েছে। এটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এটি চাওয়ার মধ্য দিয়ে আগামী নির্বাচনে যে সহিংসতা হতে পারে এবং নির্বাচন প্রতিহতের জন্য যে সক্রিয় গোষ্ঠী চেষ্টা করতে পারে সেই আভাস পাওয়া গেছে। 

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, নির্বাচন কমিশন জেনে বুঝেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে এই আবেদন করেছে। বিএনপি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্তে ক্রমশ দৃঢ় হচ্ছে। এমনকি যাই ঘটুক না কেন, যে পরিস্থিতি তৈরি হোক না কেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার না হলে তারা নির্বাচনে যাবে না—এমন একটি অনড় অবস্থান গ্রহণ করেছে। বিএনপির মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে যে বিএনপি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে না যায় সেক্ষেত্রে নির্বাচন তারা কিভাবে প্রতিহত করবে? আওয়ামী লীগ আরেকটি ২০১৪ বা ২০১৮’র মতো নির্বাচন করে টানা চতুর্থ বারের মতো ক্ষমতায় আসবে। তখন বিএনপির সামনে কোন পথ খোলা থাকবে না। আর এই কারণেই বিএনপি এখন নির্বাচন প্রতিহতের আন্দোলন করার জন্যই গুরুত্ব দিচ্ছে এবং সেইভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে। সেই প্রস্তুতির অংশ হিসাবে দেশে যে সমস্ত ভোট কেন্দ্র গুলো আছে, নির্বাচনী অফিস গুলো সেগুলোতে তারা ঘেরাও অবরোধ এবং সহিংস তৎপরতা চালাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিএনপির একাধিক সূত্রগুলো বলছে, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার সাথে সাথে জেলা নির্বাচন অফিস, নির্বাচন কার্যালয় ইত্যাদি ঘেরাও এর কর্মসূচি বিএনপি দিতে পারে। এটির মাধ্যমে নির্বাচনী কর্মকর্তাদের মধ্যে ভয় ঢুকিয়ে দিতে পারে। তারা যেন নির্বাচনের দায়িত্ব পালনে অপারগতা প্রকাশ করে, নির্বাচনের দায়িত্ব পালন কর্মসূচি থেকে সরে আসছে সেটি বিএনপির লক্ষ্য। আর এই লক্ষ্যেই তারা কাজ করছে।

বিএনপির নেতারাও স্বীকার করেছেন, তাদের প্রথম লক্ষ্য হলো সরকারকে কোণঠাসা করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদাই করা। দ্বিতীয় লক্ষ্য হলো তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া যে নির্বাচন হবে সে নির্বাচন প্রতিহত করা। প্রথম উদ্যোগে বিএনপি সফল হবে না। এটা বলাই বাহুল্য। কারণ আন্দোলন এমন একটি পর্যায়ে আগামী কিছুদিনের মধ্যেই নিয়ে যাওয়া সম্ভব না যেখানে সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নেয়। কারণ বিএনপির হাতে সময় আছে কুড়ি দিন মাত্র। এই কুড়ি দিনের মধ্যে সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থায় বাধ্য করা অসম্ভব। আর এটি বিএনপি জেনে বুঝেই মূল মনোযোগ দিচ্ছে নির্বাচন প্রতিহত করার বিষয়ে।

বিএনপির পরিকল্পনা হলো যখন নির্বাচনে তফসিল ঘোষণা করা হবে তখন থেকেই বিএনপি জ্বালাও, ভাঙচুর, অবরোধ, অবস্থান কর্মসূচি গ্রহণ করবে। এই সমস্ত কর্মসূচির মধ্য দিয়ে তারা মূলত নির্বাচনের সঙ্গে যারা সংশ্লিষ্ট তাদের মনে ভীতির সঞ্চার করবে। এই ভীতির মাধ্যমে তারা এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি করতে চায় যে পরিস্থিতিতে নির্বাচন কমিশন এবং নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ভয় পেয়ে যায়। আর তৃতীয় ধাপে রয়েছে শেষ পর্যন্ত যদি যেকোনো প্রকারে সরকার একটি নির্বাচন করে তাহলে নির্বাচনের পর ওই সরকারকে আন্তর্জাতিক মহল যেন স্বীকৃতি না দেয়, ওই সরকারের বিরুদ্ধে যেন বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে সে ব্যাপারে দেন দরবার করবে এবং আন্তর্জাতিক মহলে এটি নিয়ে লবিং করবে। এই সময়ও তারা দেশে বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সৃষ্টির চেষ্টা করবে।  তবে এই তিন ধাপের মধ্যে বিএনপির এখন সবচেয়ে মনোযোগ হলো নির্বাচন প্রতিহত করার কৌশল নির্ধারণ করা। আর এই কৌশল নির্ধারণ করতে গিয়ে বিএনপির প্রধান টার্গেট হচ্ছে মাঠ পর্যায়ে নির্বাচন কর্মকর্তারা।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭