ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

গাজায় কি পানি আছে?


প্রকাশ: 16/10/2023


Thumbnail

গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর দিনরাত বোমাবর্ষণ চলছে। ঘর থেকে বের হলেই মৃত্যুর শঙ্কা। এর মধ্যে নির্দেশ এসেছে বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নেওয়ার। ‘নিরাপদ আশ্রয়ের’ খোঁজে দিগ্‌বিদিক ছুটছে লাখ লাখ মানুষ। খাবার, পানি ও ওষুধের তীব্র সংকট চলছে। গতকাল রোববার পর্যন্ত এটাই ছিল গাজার পরিস্থিতি। 

হামাসের হামলার জবাবে গাজায় পাল্টা হামলা শুরুর একদিন পর সেখানে বিদ্যুৎ, পানি, খাবার ও ওষুধের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। জ্বালানী শেষ হয়ে যাওয়ায় অন্ধকারে ডুবে যাওয়া পুরো উপত্যকায় মানবেতর জীবনযাপন করছে লাখ লাখ মানুষ। গতকাল রোববার গাজার দক্ষিণাঞ্চলে পানির লাইন পুনরায় সচল করে দেওয়া হয়েছে বলে ইসরায়েল দাবি করলেও সেখানকার বাসিন্দারা বলছেন, তারা এখনও পানি পাননি। জ্বালানির অভাবে পাম্প চালানো যাচ্ছে না।

সোমবার সকালের দিকে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেনের কর্মকর্তা জেসন লি পশ্চিম তীরের রামাল্লা থেকে জানান, গাজায় পানি ফুরিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, সেভ দ্য চিলড্রেনের কাছে দক্ষিণ গাজার কিছু অংশে আবারও পানির সরবরাহ সচল করে দেওয়া হয়েছে বলে তথ্য এসেছে। কিন্তু পানি পাম্প করার জন্য জ্বালানি বা বিদ্যুতের দরকার হলেও এখানে তা নেই। যে কারণে সাধারণ জনগণের কাছে পানি সরবরাহ করা যাচ্ছে না।

ফিলিস্তিনে নিযুক্ত জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) সোমবার বিবিসিকে বলেছে, রাফাহ সীমান্তে তাদের কার্যালয় থেকে ৬ হাজার বাস্তুচ্যুত মানুষের মাঝে পানি বিতরণ করা হয়। এখন জনপ্রতি মাত্র এক লিটার পানি দেওয়া হচ্ছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া পোস্টে সংস্থাটি বলেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ লাখ মানুষের প্রায় এক চতুর্থাংশই তাদের আশ্রয়কেন্দ্রে চলে গেছেন। এসব মানুষের বেশিরভাগই রাফাহা সীমান্তে ইউএনআরডব্লিউএর স্কুলে আশ্রয় নিয়েছেন, যেখানে ‘বিশুদ্ধ পানি আসলে ফুরিয়ে গেছে।’

ইসরায়েল সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার পর গাজায় সুপেয় পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। জাতিসংঘ বলছে, গাজার বাসিন্দাদের জন্য সুপেয় পানি এখন জীবন-মৃত্যুর প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। গাজার ২০ লাখ মানুষের জন্য সুপেয় পানি সরবরাহ করতে হলে গাজায় জ্বালানি প্রয়োজন। এক সপ্তাহ ধরে গাজায় কোনো ত্রাণসহায়তা ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না বলেও জানিয়েছে জাতিসংঘ।

এর আগে, রোববার জাতিসংঘের মানবিকতাবিষয়ক সমন্বয় কার্যালয় (ওসিএইচএ) জানায়, ইসরায়েল পূর্ব খান ইউনিস এলাকায় পুনরায় আংশিক পানি সরবরাহ শুরু করেছে। কিন্তু এই সরবরাহের পরিমাণ এবং ফলাফল পরিষ্কার নয়।

ওসিএইচএ বলেছে, গাজার শেষ সচল সামুদ্রিক পানি বিশুদ্ধকরণ প্ল্যান্টটি রোববার বন্ধ হয়ে গেছে। কিছু মানুষ কৃষি কূপ থেকে সংগ্রহ করা লোনা পানি পান করছে।

সংস্থাটি বলেছে, এই মুহূর্তে বিশুদ্ধ পানির প্রধান সরবরাহকারী হয়ে উঠেছেন বেসরকারি বিক্রেতারা। এসব বিক্রেতাদের বেশিরভাগই সৌরশক্তি চালিত ছোট ছোট বিশুদ্ধকরণ প্ল্যান্ট পরিচালনা করেন।

পানি শোধনাগার ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থা অচল হওয়ার পর থেকে গাজার বাসিন্দারা সুপেয় পানির তীব্র সংকটে পড়েছেন। কুয়া থেকে দূষিত পানি পান করতে বাধ্য হচ্ছেন অনেকে। এতে পানিবাহিত বিভিন্ন রোগ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে।

গাজায় কর্মরত দোভাষী জেসন শাওয়া বলেন, তিনি পানির ট্যাঙ্কারগুলোর দিকে নজর রাখছিলেন। তিনি অর্থের বিনিময়ে এক ঘন মিটার আকারের একটি পাত্রে পানি নিয়েছেন। নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে এই পানি ব্যবহার করলে দুদিন চলা যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি।




প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭