ইনসাইড পলিটিক্স

সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে পঞ্চপাণ্ডব


প্রকাশ: 17/10/2023


Thumbnail

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে রীতিমতো স্নায়ু যুদ্ধ চলছে। আর এই স্নায়ু যুদ্ধে আওয়ামী লীগের প্রকাশ্য প্রতিপক্ষ বিএনপি। কিন্তু পর্দার আড়ালে রয়েছে আসল প্রতিপক্ষরা। বিএনপি রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলা করছে, আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করছে। কিন্তু বিএনপির এই আন্দোলনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক পশ্চিমা দেশগুলোর  আস্থাভাজন অনুগ্রহভাজন কিছু সুশীল সমাজের ব্যক্তিরা। এই সুশীল ব্যক্তিরাই এখন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষ হিসাবে দাঁড়িয়েছে।

সুশীল সমাজের মধ্যে পঞ্চপাণ্ডবের উদয় হয়েছে, যে পঞ্চপাণ্ডব আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে প্রতিহত করার জন্য, একটি অনির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় আনার জন্য রীতিমতো যুদ্ধে নেমেছে। তাদের প্রধান লক্ষ্য হলো যেকোনো প্রক্রিয়ায় যেন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে প্রতিহত করা যায়। নির্বাচন প্রতিহত করলে আপনাআপনি ভাবে এটি অনির্বাচিত সরকার আসবে। অনির্বাচিত সরকার ৫ থেকে ১০ বছর দেশ পরিচালনা করবে এবং তারপর সংবিধান পরিবর্তন, রাষ্ট্র কাঠামো মেরামত ইত্যাদি নানা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে অবশেষে তারা নির্বাচন দেবেন। নির্বাচন হয়ে যাবে অনিশ্চিত। বাংলাদেশ আবার একটি অনির্বাচিত অসাংবিধানিক যুগে প্রবেশ করবে। বিএনপি আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করার ক্ষমতা শক্তি রাখে না। বিএনপির নেতারা নিজেরাও জানেন। আর এ কারণেই তারা আন্দোলনের জন্য বার বার পশ্চিমা দেশগুলোর দ্বারস্থ হচ্ছে। আর পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে বিএনপির সম্পর্কের যে সেতুবন্ধন তৈরি হয়েছে তার ভিত্তি করে দিয়েছেন এই পঞ্চপাণ্ডব। 

কারা আসলে আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিপক্ষ, কারা শত্রু। এই প্রশ্নের উত্তরে আওয়ামী লীগের নেতারাও স্বীকার করেছেন যে পঞ্চপাণ্ডব এখন আওয়ামী লীগের প্রধান শক্র। এই পঞ্চপাণ্ডব কারা? আসুন দেখে নেওয়া যাক;

ড. মুহাম্মদ ইউনূস: ড. মুহাম্মদ ইউনূস আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে যুদ্ধের অন্যতম প্রধান সেনাপতি হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছেন। বিশেষ করে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা, শ্রম আদালতের মামলা চলমান থাকার পর তিনি সরকার হটানোর জন্য রীতিমতো জেহাদ ঘোষণা করেছেন। বিভিন্ন জায়গায় তিনি সরকারের বিরুদ্ধে নানা রকম সমালোচনামূলক বক্তব্য দিচ্ছেন এবং আন্তর্জাতিক মহলকে বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে প্রভাবিত করার ক্ষেত্রে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।

ড. আলী রিয়াজ: সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে যারা যুদ্ধ করছেন তাদের অন্যতম হলেন আলী রিয়াজ। ইলিনয় স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক এখন সরকার বিরোধী প্রধান থিঙ্ক ট্যাঙ্ক। কিছুদিন আগেই তিনি ঢাকায় বে অফ বেঙ্গল সংগঠনের নামে সরকারের বিভিন্ন দুর্বলতা গুলোকে তুলে ধরেছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নীতি নির্ধারক মহলে যারা সরকারের বিরুদ্ধে নেতিবাচক বক্তব্যের বিষ ছড়াচ্ছেন তাদের মধ্যে আলী রিয়াজ অন্যতম এবং তিনি বিএনপিরও একজন থিঙ্ক ট্যাঙ্ক বটে। 

আদিলুর রহমান খান: আদিলুর রহমান খান আদালত থেকে জামিন পেয়ে কারা মুক্ত হয়েই পরদিনই গেছেন মার্কিন দূতাবাসের সাথে দেখা করতে। এ থেকেই বোঝা যায় যে তার দৌড় কোথায় এবং তার তৎপরতার উৎস কোন বিন্দুতে। আদিলুর রহমান-শুভ্র ২০১৩ সালের মে মাসে হেফাজতের কাণ্ডের সময় গুজব ছড়িয়ে ছিলেন এবং মিথ্যা তথ্য পরিবেশন করার জন্য তার বিরুদ্ধে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। হাইকোর্টে তার জামিন দেওয়া হয়েছে। হাইকোর্টে যে বিচারক তাকে জামিন দিয়েছেন তা নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছে। আর হাইকোর্ট থেকে মুক্তি পেয়ে তার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার মধ্য দিয়ে একটি বিষয়ে সুস্পষ্ট ভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে তিনি আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে যুদ্ধে একজন পণ্ডপাণ্ডব। 

জিল্লুর রহমান: জিল্লুর রহমান হলেন তৃতীয় মাত্রার উপস্থাপক। একটি উন্নয়ন সংস্থা নামে তিনি আসলে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ বিরোধী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করছেন। সরকারের বিরুদ্ধে অসত্য বিভ্রান্তিকর, নানা তথ্য বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক ফোরামে উপস্থাপন করছেন। তিনিও আওয়ামী লীগ সরকারকে হঠাতে যে পঞ্চপাণ্ডব তৈরি হয়েছে তাদের অন্যতম।

বদিউল আলম মজুমদার: বদিউল আলম মজুমদার পঞ্চপাণ্ডবের শেষ ব্যক্তি। তিনি আগে থেকেই সরকারের বিরুদ্ধে নানা রকম তৎপরতায় লিপ্ত। এখন তিনি এ নিয়ে আরও প্রকাশ্য অবস্থান গ্রহণ করেছেন। সুশীল সমাজের যে দু’একজন প্রতিনিধি প্রকাশ্যে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি উচ্চারণ করেন তাদের মধ্যে বদিউল আলম মজুমদার অন্যতম।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭