ইনসাইড বাংলাদেশ

শেখ রাসেলের জন্মদিন আজ


প্রকাশ: 18/10/2023


Thumbnail

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ সন্তান শেখ রাসেলকে মারা যাওয়ার আগে ‘আল্লার দোহায় দিয়ে খুনিদের আর্তি জানিয়ে ছিলেন তাকে না মারার জন্য’। সেদিন রাসেলের এই আর্তচিৎকারে খোদার আরশ কেঁপে উঠলেও টলাতে পারেনি খুনী পাষাণদের মন। বাড়ির অন্যান্য সদস্যদের হত্যা করার পর একজন মেজর শেখ রাসেলকে বাসার নিচ থেকে দোতলায় নিয়ে গিয়ে রিভলবারের গুলিতে ঠান্ডা মাথায় হত্যা করে। ফলে অকালেই থেমে যায় অপরিণত রাসেলের জীবন।

১৯৭৫সালের ১৫ আগস্ট ভোর রাতে মসজিদের মাইকে যখন ‘আসসালাতু খাইরু মিন আন নাও’ বলে আযান হচ্ছিল তখনই নৃসংস ভাবে এই হত্যাকান্ডে মেতে উঠে খুনিরা। ৩২ নম্বরের দোতলা থেকে সিঁড়ি বেয়ে রক্তের স্রোত নিচতলা পর্যন্ত পৌছে। রাসেলকে মারার আগে রাসেলের মর্মস্পর্শী আর্তিতে একজন সৈন্যের মন গলায় সে তাকে বাড়ির গেটে সেন্ট্রিবক্সে লুকিয়ে রাখে। তার পরও রক্ষা পায়নি সে। ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে ঘিরে কিছু ঘটনা ও বাংলাদেশ’ গ্রন্থে এমন বর্ণনা উঠে এসেছে। শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানা জার্মান অবস্থান করায় তারা প্রাণে বেঁচে যান।

জাতির পিতার অত্যন্ত প্রিয় ব্যক্তিত্ব ছিল খ্যাতনামা দার্শনিক ও নোবেলজয়ী বারট্রান্ড রাসেল। শেখ রাসেল জন্মের পর বারট্রান্ড রাসেলের নামানুসারে তার নাম রাখা হয় শেখ রাসেল। পরিবারটির সর্বকনিষ্ঠ এই সদস্য মা, বাবা, ভাই, বোন সবার চোখে ছিল নয়নের মনি। বিশেষ করে বড় বোন শেখ হাসিনা এই দিনটি এলেই অত্যন্ত আবেগ আপ্লুত হয়ে যান। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা কালে শেখ রাসেলের কথা মনে করে অনেক দিন আবেগ প্রবণ হয়েছেন এবং টিস্যু দিয়ে চোখের পানি মুছতে দেখা গেছে। শেখ হাসিনাকে ‘হাসু আপা’ বলে সম্মোধন করতেন ছোট্ট রাসেল। শেখ রাসেলের মুখে এই ডাক শেখ হাসিনা শেষ কবে শুনেছেন তা হয়তো তার মনে নেই। কিন্তু শেখ রাসেলের স্মৃতি তাকে প্রতিনিয়তই কষ্ট দেয়। 

জাতির পিতার সর্বকনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের আজ ৬০ তম জন্মদিন। শিশু রাসেলের জীবন সম্পর্কে শিশু-কিশোরদের কাছে তুলে ধরতে তার জন্মদিনকে ‘শেখ রাসেল দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয়ভাবে তৃতীয়বারের মতো ‘শেখ রাসেল দিবস ২০২৩’ পালনের প্রতিপাদ্য ‘শেখ রাসেল দীপ্তিময়, নির্ভীক নির্মল দুর্জয়’।

শেখ রাসেল দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট ভাই শেখ রাসেল ১৯৬৪ সালের এই দিনে ধানমন্ডির ঐতিহাসিক স্মৃতি-বিজড়িত বঙ্গবন্ধু ভবনে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট মানবতার শত্রু ঘৃণ্য ঘাতকদের নির্মম বুলেট থেকে রক্ষা পাননি শিশু শেখ রাসেল। বঙ্গবন্ধুর সাথে নরপিশাচরা নির্মমভাবে তাকেও হত্যা করেছিল। তিনি ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র ছিলেন।

শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

শহীদ শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৮ টায় বনানী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত শেখ রাসেলসহ ১৫ আগস্টে নিহত সকল শহীদদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ, ফাতেহা পাঠ, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে।

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগ, সহযোগী সংগঠন এবং বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক বিবৃতিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের শুভ জন্মদিন ‘শেখ রাসেল দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্য সারাদেশে দলীয় নেতা-কর্মী, সমর্থক ও সর্বস্তরের জনগণের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।

তিনি এ উপলক্ষ্যে কর্মসূচি পালনের জন্য সারাদেশে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনসমূহের সকল স্তরের নেতাকর্মীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। 

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে দিনব্যাপী কর্মসূচি হাতে নিয়েছে মেট্রোরেল পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। এর মধ্যে রয়েছে পথশিশুদের মেট্রোরেলে ভ্রমণের ব্যবস্থা।

ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক স্বাক্ষরিত এক কার্যবিবরণী থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

ওই কার্যবিবরণীতে বলা হয়, শেখ রাসেল দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে আগামী ১৮ অক্টোবর সকাল ১০টায় সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সংস্থার এতিম ও পথশিশুদের আগারগাঁও থেকে উত্তরা উত্তর মেট্রোরেল স্টেশন এবং বিপরীতক্রমে মেট্রোরেল ভ্রমণের ব্যবস্থা করা হবে। এ ছাড়া ডিএমটিসিএল মেট্রোরেল প্রদর্শনী ও তথ্য কেন্দ্রে কেক কাটা এবং সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা হবে।

অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের ডিএমটিসিএলের পক্ষ হতে ১০০টি টি-শার্ট, ১০০টি ক্যাপ ও প্রয়োজনীয় সংখ্যক প্ল্যাকার্ড সরবরাহ করা হবে। ভ্রমণ শেষে আগারগাঁও মেট্রোরেল স্টেশন থেকে প্রত্যাবর্তনের সময় পথশিশুদের দুপুরের খাবারের প্যাকেট দেওয়া হবে।

সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) কোম্পানি পথশিশুদের মেট্রোরেল ভ্রমণের টিকিটের ব্যয় নির্বাহ করবে। উত্তরা উত্তর মেট্রোরেল স্টেশন থেকে মেট্রোরেল প্রদর্শনী ও তথ্য কেন্দ্রে এবং বিপরীতক্রমে পথশিশুদের যাতায়াতের ব্যবস্থা করবে বিআরটিসি।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭