ইনসাইড পলিটিক্স

কৌশলের খেলায় হেরে যাচ্ছে বিএনপি?


প্রকাশ: 18/10/2023


Thumbnail

বিএনপি কি তাহলে কৌশলের খেলায় হেরে যাচ্ছে? আন্দোলনের মাধ্যমে সরকার পতন, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বাস্তবায়ন ইত্যাদির দাবিতে বিএনপির চূড়ান্ত আন্দোলন। কিন্তু সময় দ্রুত গড়িয়ে যাচ্ছে। বিএনপি আন্দোলনের জন্য যাদের ওপর নির্ভরশীল তাদেরকেও সরকার এখন গুরুত্ব দিচ্ছে না। ফলে কৌশলের খেলায় বিএনপি কি তালগোল পাকিয়ে ফেলছে? বিএনপি কি আবার আরেকটি পরাজয়ের মুখোমুখি দাঁড়াচ্ছে? 

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তফসিল ঘোষণার বাকি তিন সপ্তাহ সময়। আগামী ১০ নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর বড় ধরনের আন্দোলনের বাস্তব পরিস্থিতি বাংলাদেশে নেই। বিশেষ করে বিএনপি এই ধরনের আন্দোলন গড়ে তোলার মতো সক্ষমতা অর্জন করেনি। অর্থাৎ নির্বাচনের তফসিলের আগেই বিএনপিকে যা খুশি তাই করতে হবে। বিএনপির জন্য দুটি বিকল্প ছিল। একটি হলো সরকারের সাথে আলাপ আলোচনার দরজা খোলা রেখে একটি সমঝোতায় পৌঁছে নির্বাচন করা এবং এবার নির্বাচন করলে বিএনপির একটি সম্মানজনক আসন পেত বলেই অনেকে ধারণা করছে।

বিএনপির দ্বিতীয় বিকল্প আন্দোলন। যে আন্দোলনের কর্মসূচি এখন বিএনপি পালন করছে। কিন্তু এই আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়ে আর যাই হোক না কেন সরকারকে তাদের দাবি আদায় বাধ্য করা অসম্ভব ব্যাপার। আর এরকম বাস্তবতায় বিএনপির জন্য এখন সবচেয়ে বড় সংকট দেখা দিচ্ছে যে, দলটি কি করবে? ইতোমধ্যে বিএনপির পক্ষ থেকে একটি কঠোর অবস্থান জানানো হয়েছে। তারা বলছে যে, কোনো অবস্থাতেই তারা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় সরকারের অধীনে বা শেখ হাসিনার অধীনে অংশগ্রহণ করবে না। কিন্তু নির্বাচন থেকে দূরে থাকলে বিএনপি কি লাভবান হবে? এ ব্যাপারে কি বিএনপির রাজনৈতিক হিসেব নিকেশ সঠিক আছে। 

অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলছেন, ২০১৩ সালে বিএনপি অনেক শক্তিশালী ছিল। বর্তমান সময়ের চেয়েও বিএনপি তখন সংগঠিত ছিল। বেগম খালেদা জিয়া বিএনপির নেতৃত্বে ছিলেন। সেই সময় বিএনপি আন্দোলন করে সফল হয়নি। এখন কিভাবে সফল হবেন? এর উত্তরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা বলছেন যে, এর মূল কারণ হলো বিশ্ব বাস্তবতা। সেই সময় ওই নির্বাচনের ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ দেশগুলোর এক ধরনের উপেক্ষা ছিল। কিন্তু এবারের নির্বাচনের ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ পশ্চিমা দেশগুলোর ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। কিন্তু রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যতই আগ্রহ থাকুক নির্বাচনের তফসিল যখন ঘোষণা করা হবে এবং নির্বাচনে যখন বিভিন্ন প্রার্থীরা মাঠে নামবেন তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কি নির্বাচন বাধা দিতে পারবে? এবারের নির্বাচন আর যাই হোক আওয়ামী লীগ ২০১৪’র মতো করে করবে না। আর সেটা যদি না করে তাহলে সেই নির্বাচনকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা পশ্চিমা দেশগুলো অস্বীকার করবে কিভাবে? সেই নির্বাচন গুলোকে স্বীকৃতি দিতে অসম্মতি জানালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন উঠবে। আর তাই কৌশলের খেলায় বিএনপি হেরে যাচ্ছে কিনা বা তালগোল পাকাচ্ছে কিনা সেটি নিয়ে কারও কারও মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে।

বিএনপি সাধারণ ভাবে যে রাজনৈতিক হিসেব কষছে তাতে তারা মনে করছে যে, তারা যদি নির্বাচনে বর্জন করে আর নির্বাচন বর্জন করে যদি রাস্তায় আন্দোলন করে তাহলে জনগণ ভোট কেন্দ্রে যাবে না, ভোট হবে না এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ওই নির্বাচনকে স্বীকৃতি দেবে না বা এই ধরনের নির্বাচনের আগেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ পশ্চিমা দেশগুলো এমন কিছু পদক্ষেপ নেবে যে পদক্ষেপের ফলে নির্বাচনই বানচাল হয়ে যাবে। কিন্তু বাস্তবে এই রাজনৈতিক হিসাব কি সম্ভব? 

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, আওয়ামী লীগ যেকোনো মূল্যে নির্বাচন করতে চায়। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর রাজনৈতিক আবহ পাল্টে যাবে। বিভিন্ন ব্যক্তি এবং রাজনৈতিক দল নির্বাচনের জন্য মাঠে নামবেন। তখন যে নির্বাচনী আবহাওয়া সেই আবহাওয়ায় রাজনৈতিক আন্দোলন তলিয়ে যেতে পারে। তাহলে কি আবার ভুল পথে বিএনপি সর্বস্ব খোয়াচ্ছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭