ইনসাইড পলিটিক্স

রাজনীতিতে পরিত্যক্ত হলেন তারা


প্রকাশ: 20/10/2023


Thumbnail

গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় এরা রাজনীতির মাঠে বেশ দাপটে ছিলেন। তারাই ছিলেন বিরোধী দলের পক্ষে নীতিনির্ধারক। কিন্তু এবার রাজনীতির মাঠে তারা পরিত্যক্ত। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তাদের খবর নিচ্ছেন না। বিএনপি তাদের কাছ থেকে শত হাত দূরে। এই সমস্ত রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এখন রীতিমতো আবর্জনায় পরিণত হয়েছেন। তারা রাজনীতিতে অপাংতেয়। কারা এরা? এদের মধ্যে রয়েছেন;

ড. কামাল হোসেন: ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বেই গতবার বিএনপি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিল। গঠন করেছিল জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রধান হয়েছিলেন ড. কামাল হোসেন। ড. কামাল হোসেন ওই নির্বাচনের আগে সংলাপেও নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপ করার পর তিনি বিরোধী দলের প্রধান নেতায় পরিণত হয়েছিলেন। কিন্তু ওই নির্বাচনের পর বিএনপির পক্ষ থেকেই বলা হচ্ছিল যে. ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জোট  করাটা ছিল মহা ভুল। আর এই ভুলের জন্যই বিএনপিকে মাশুল দিতে হচ্ছে। বিএনপি এরপর থেকে ড. কামাল হোসেনকে এড়িয়ে যায়। ড. কামাল হোসেন এখন মাঝে মাঝে দু চারটা বিবৃতি দেন বটে কিন্তু রাজনীতিতে তিনি গুরুত্বহীন এক ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছেন। ইতোমধ্যে তার নিজের দলও ভেঙে গেছে। বয়স ভারে জর্জরিত তিনি। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে তাকে কেউ এখন ডাকেও না, তার খোঁজখবরও নেয় না।

অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী: অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ, বিএনপির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। বিএনপির প্রথম মহাসচিব। কিন্তু বিএনপির মনোনয়নে রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর বিএনপির সঙ্গে তার দূরত্ব তৈরি হয়েছিল এবং সেখান থেকে তিনি নতুন রাজনৈতিক ধারা সূচনা করেন। বিকল্প ধারার রাজনীতির মাঠে খুব একটা গুরুত্ব বহন না করলেও তিনি কখনো সরকারের পক্ষে কখনো বিপক্ষে যেয়ে নানা রকম ডিগবাজির কারণে আলোচিত। গত নির্বাচনের আগে বিএনপির যে বৃহত্তর জোট গঠন করতে চেয়েছিল সেই জোটে প্রথম অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী-ই ছিলেন সরব। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তারেক জিয়ার নির্দেশে তাকে জোট থেকে বাদ দেওয়া হয়। এরপর তিনি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটে অংশগ্রহণ করেন এবং তার ছেলে মাহি বি চৌধুরী নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেন। এখন অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী রাজনীতির মাঠে নিষ্ক্রিয়। সারাজীবন বিএনপির রাজনীতি করেছেন কিন্তু বিএনপিরই কেউ তার খোঁজখবর নেয় না, তার থেকে এড়িয়ে যায়। বয়সের কারণে নিজেও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে খুব একটা যুক্ত নন তিনি।

রেজা কিবরিয়া: রেজা কিবরিয়া যেন হঠাৎ আলোর ঝলকানির মতো আওয়ামী লীগের সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়ার পুত্র হিসেবেই রাজনীতিতে তিনি আলোচিত হয়েছিলেন। কিন্তু রাজনীতিতে এসে তিনি খুব একটা সাফল্যের পরিচয় দিতে পারেননি। বিভিন্ন সময় তাকে বিভিন্ন দলের নেতা হিসাবে দেখা গেছে কিন্তু নেতা হিসাবে তিনি নিজেকে প্রমান করতে পারেননি। এখন রেজা কিবরিয়া রাজনীতিতে প্রায় নির্বাসিত।

অধ্যাপক আবু সাইয়িদ: অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের টিকিটে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। হয়েছিলেন তথ্যপ্রতিমন্ত্রী। ২০০১ এর নির্বাচনে তিনি পরাজিত হন এবং এক-এগারো সময় তার বিভ্রম ঘটে। এই বিভ্রমের ফলেই তিনি পথ হারান। একসময় তিনি রাজনীতিতে ঠিকানা বিহীন হয়ে পড়েন। ২০১৮’র নির্বাচনের আগে তিনি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগ দেন। ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে তিনি পাবনার একটি আসনে  নির্বাচন করে শোচনীয় ভাবে পরাজিত হন। আর তারপর তিনি বিভিন্ন সময়ে এদিক ওদিক করেছেন। গণফোরাম ভাঙ্গার ক্ষেত্রে যারা ভূমিকা পালন করেছে তাদের মধ্যে তিনি অন্যতম। এখন তিনি বিশ্বাসের সংকটে ভুগছেন। বিএনপির বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপযাজক হয়ে যান বটে কিন্তু রাজনীতিতে তিনি এখন পরিত্যক্ত এক নেতায় পরিণত হয়েছেন।

মোস্তফা মোহসীন মন্টু: মোস্তফা মোহসীন মন্টুও দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। কিন্তু ১৯৯১ সালে ড. কামাল হোসেনের সাথে তিনি গণফোরামে চলে যান। এখন তিনি গণফোরামের একাংশের নেতা বটে। তবে রাজনীতিতে তিনিও গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছেন।

এই সমস্ত ব্যক্তিদের সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু ভুল রাজনীতির কারণে রাজনীতিতেই তারা এখন ঠিকানা হীন হয়ে পড়েছেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭