ইনসাইড পলিটিক্স

তারেক জিয়াকে দেশে ফিরিয়ে আনার নতুন উদ্যোগ নিয়েছে সরকার


প্রকাশ: 20/10/2023


Thumbnail

একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার দণ্ডিত তারেক জিয়াকে লন্ডন থেকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসার নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার। এ ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যুক্তরাজ্য সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে চতুর্থ বারের মতো চিঠি দিয়েছে। তারেক জিয়া বিদেশে বসে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যে সমস্ত অপকর্ম এবং অনিয়ম গুলো করছে সে ব্যাপারেও অবহিত করা হয়েছে। পাশাপাশি যে সমস্ত মামলায় তারেক জিয়া দণ্ডিত হয়েছে সেই সমস্ত মামলার রায়ের সত্যায়িত অনুলিপি পাঠানো হয়েছে। একই সাথে সরকার ইন্টারপোলের কাছে তারেকের নাম লাল তালিকাভুক্ত করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে। উল্লেখ্য, এর আগেও দুইবার তারেক জিয়ার নাম ইন্টারপোলের রেডআলার তালিকায় ছিল। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে সেই তালিকা থেকে নাম সরিয়ে ফেলা হয়। এখন নতুন করে তারেক জিয়ার নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য সরকারের পক্ষ থেকে আবেদন জানানো হচ্ছে। 

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, নির্বাচনের আগে বিএনপির ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য সরকারের এটি নতুন উদ্যোগ। তাছাড়া সরকার মনে করছে যে, তারেক জিয়াকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে এসে আইনের বিধি বিধান কার্যকর করলে এটি সরকারের জন্য ইতিবাচক পদক্ষেপ হবে। বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার ব্যাপারে সরকারের অসম্মতির পর তারেক জিয়াকে দেশে ফিরিয়ে আনা নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের কঠোর অবস্থানের ইঙ্গিত বলে কোনো কোনো মহল মনে করছে। ২০০৭ সালের এক-এগারোর সময় তারেক জিয়া গ্রেপ্তার হন। হাওয়া ভবনের মাধ্যমে সীমাহীন দুর্নীতি, নৈরাজ্য এবং লুটপাটের কারণে তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ ছিল। গ্রেপ্তারের পর যৌথবাহিনীর কাছে তারেক জিয়া তার অপকর্মের কথা স্বীকার করেন এবং এ ব্যাপারে গিয়াস উদ্দিন মামুনের দ্বারা তিনি প্ররোচিত হয়েছেন এমন বক্তব্য দেন। বেগম খালেদা জিয়ার বিশেষ অনুরোধে ২০০৮ সালে তারেক জিয়াকে বিশেষ বিবেচনায় জামিন দেওয়া হয় এবং তারেক জিয়া মুচলেকা দেন যে, তিনি আর কখনো রাজনীতি করবেন না। এই মুচলেকা দিয়েই তিনি লন্ডনে যান। কিন্তু লন্ডনে গিয়ে তিনি আর দেশে ফিরে আসেননি। এখন তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছেন।

একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, লন্ডনে তিনি রাজনৈতিক আশ্রয় রয়েছেন। রাজনৈতিক আশ্রয় থাকলেও তিনি সেখানে রাজকীয় বিলাসী জীবন যাপন করেন। কিংস্টনে তার বিলাস বহুল বাড়ি রয়েছে। এছাড়াও তিনি ব্লু অ্যান্ড হোয়াইট নামে একটি কোম্পানির মালিক এবং সেই কোম্পানি রহস্যময় ভাবে অর্থ উপার্জন করে।

মূলত তারেক জিয়া জীবন ধারণ করেন চাঁদাবাজির মাধ্যমে। এটি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নিজেই স্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, বিভিন্ন ব্যক্তির সহায়তায় তারেক জিয়া লন্ডনে চলাফেরা করার খরচ যোগান। তবে তারেক জিয়া নিজে লন্ডন পুলিশের কাছে এক মুচলেকায় দাবি করেছেন যে, তার আয়ের প্রধান উৎস হলো জুয়া। বিভিন্ন সময় তাকে বিভিন্ন ক্যাসিনোতে দেখা গেছে।

সাম্প্রতিক সময়ে সরকারের বিরুদ্ধে নানা রকম অপতৎপরতায় তারেক জিয়াই প্রধান ভূমিকা রাখছেন বলে সরকার নিশ্চিত হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাজ্য সফর করেন এবং সেখানে যুক্তরাজ্যের একাধিক নীতিনির্ধারকের সঙ্গে তারেক জিয়াকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। এই আলোচনার প্রেক্ষাপটে তারেক জিয়াকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য আবারও আনুষ্ঠানিক চিঠি দিয়েছে সরকার।  

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, যুক্তরাজ্য বাংলাদেশ মিশন এই চিঠি নিয়ে কাজ করবে এবং তারা আশা করছে যুুক্তরাজ্য এ ব্যাপারে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত জানাবে। কারণ একজন দণ্ডিত ব্যক্তিকে এভাবে রাখা কোনোভাবেই সমীচীন নয়। সরকার মনে করছে, নির্বাচনের আগে তারেক জিয়া আরও ভয়ঙ্কর অপতৎপরতা চালাতে পারে। দেশের বাইরে বসে বিভিন্ন সাইবার সন্ত্রাসীদেরকে অর্থায়ন করে তারেক জিয়া একের পর এক বাংলাদেশের সরকার, রাষ্ট্র এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করাচ্ছেন। তাছাড়া লন্ডনে বসে তিনি সরকার পতনের জন্য নানা রকম ষড়যন্ত্র করছেন বলেও সরকার মনে করে। এরকম অবস্থাতে তারেককে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়টিকে এখন সরকার অগ্রাধিকার দিচ্ছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭