ইনসাইড বাংলাদেশ

নির্বাচনের আগে আর কোনো মার্কিন নিষেধাজ্ঞা নয়


প্রকাশ: 21/10/2023


Thumbnail

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ দেখতে চায়। আর এই কারণে একের পর এক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নানারকম বিধিনিষেধ আরোপ করছে। বিভিন্ন মার্কিন কূটনীতিক ঢাকা সফর করছেন। সর্বশেষ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছিলেন উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আখতার। তিনি বাংলাদেশে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন সহ বিভিন্ন নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলেন। তার এই সফরের পর সরকারের বিভিন্ন মহল থেকে বলা হচ্ছে নির্বাচনের আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ওপর আর কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে না। 

ইতোমধ্যে গত ২৪ মে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করা হয়েছে। ২২ সেপ্টেম্বর পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার ঘোষণা করেন যে, এই ভিসা নীতি কার্যকর শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে কয়েকজনের ভিসা বাতিল করা হয়েছে বলে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। এরপর বিভিন্ন মহলে বাংলাদেশের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আরও নানারকম নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে দেওয়া হয়। বিভিন্ন বুদ্ধিজীবীরা আগামী দিনগুলোতে কি কি ধরনের নিষেধাজ্ঞা আসবে—এমন তথ্য প্রকাশ করতে থাকেন। অনেকেই বলা শুরু করেন যে, কিছু ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা বা স্যাংশন আরোপ করা হচ্ছে। কিন্তু আফরিন আখতারের সফরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উর্ধতন কর্মকর্তা বাংলা ইনসাইডারকে জানিয়েছেন যে, নির্বাচনের আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে কোনো রকম নিষেধাজ্ঞা দেবে না। বরং তারা এখন বাংলাদেশের নির্বাচন কোন পদ্ধতিতে কিভাবে সম্পন্ন হয় সেদিকে নজর রাখতে চায়। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার জন্য পাঁচ দফা সুপারিশ দিয়েছে যে সুপারিশের প্রথম দফায় সংলাপের কথা বলা হয়েছে। সংলাপ নিয়ে প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল যার যার অবস্থান থেকে কথা বলছে। আওয়ামী লীগ শর্তহীন সংলাপে আগ্রহী অন্যদিকে বিএনপি বলছে, আওয়ামী লীগ সরকার পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিলেই কেবল সংলাপ হতে পারে। এরকম পরিস্থিতিতে সংলাপ নিয়ে অনিশ্চিয়তা রয়েছে। বিএনপি ইতোমধ্যে ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বড় ধরনের সমাবেশের আয়োজন শুরু করেছে। সবকিছু মিলিয়ে রাজনীতিতে একটি উত্তপ্ত পরিস্থিতি চলছে। এর মধ্যে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা যদি দেওয়া হয় তাহলে পরে তা একটি পক্ষপাতপূর্ণ হতে পারে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। এই কারণেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে চায়। 

মার্কিন কূটনীতিক কর্মকর্তা আফরিন আখতার বলেছেন, আগামী তিন মাস বাংলাদেশের ওপর তারা কঠোর নজর রাখবেন। এই নজরদারির মধ্যে দিয়ে তারা দেখবেন যে, অবাধ, সুষ্ঠু ও নির্বাচনের পথে কারা বাধা এবং কি ধরনের বাধা সৃষ্টি করেছে।

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, নির্বাচন তফসিল ঘোষণা এবং সরকার কিভাবে নির্বাচন পরিচালনা করতে চায় সেটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আগে দেখতে চায় এবং এই নির্বাচন পরিচালনার পরই তারা নির্বাচনের ব্যাপারে তাদের অবস্থান জানাবে। ইতোমধ্যেই ইউরোপীয় ইউনিয়ন তার অবস্থান পরিবর্তন করেছে। তারা প্রথমে বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনে পর্যবেক্ষক না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু তারপর তারা নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছে যে, তারা একটি ছোট আকারের পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে। কেউই বাংলাদেশে আগ বাড়িয়ে কোনো রকমের নিষেধাজ্ঞা বা কঠোর অবস্থানে যেতে চায় না। বরং পশ্চিমা দেশগুলো দেখতে চায় যে, আগামী নির্বাচন কিভাবে অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনে যদি ৫০ শতাংশ বা তার কাছাকাছি ভোট গ্রহণ হয় এবং নির্বাচন যদি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং পক্ষপাতহীন হয়, জনগণ যদি তাদের স্বাধীন মত প্রকাশের সুযোগ পায় তাহলে এই নির্বাচনকে আন্তর্জাতিক মহল স্বীকৃতি দেবে। আর এই কারণেই নির্বাচনের আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আগাম কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করবে না বলেই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো আশ্বস্ত করেছেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭