ইনসাইড বাংলাদেশ

যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশ নীতি: ওয়াশিংটন এবং বারিধারা কি একই পথে


প্রকাশ: 23/10/2023


Thumbnail

মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস গতকাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তার কি কথা হয়েছে সে ব্যাপারে আমরা কিছু জানিনা। কিন্তু গণমাধ্যমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূত জানতে চেয়েছে যে আমরা ২৮ অক্টোবর রাস্তা-ঘাট বন্ধ করে দেবো কিনা। গণমাধ্যমে এই সংবাদ প্রকাশের পর রাতে মার্কিন দূতাবাস থেকে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়ে তাতে বলা হয়েছে যে, তারা এটা বলেনি। বরং মার্কিন রাষ্ট্রদূত সভা-সমাবেশ নির্বিঘ্নে করা যাবে কিনা সে প্রশ্ন করেছেন। 

মার্কিন রাষ্ট্রদূত কি বলেছেন এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কি শুনেছেন সেটি তাদের বিষয়। কিন্তু মূল বিষয় হলো যে মার্কিন রাষ্ট্রদূত একটি রাজনৈতিক দলের জনসভা হবে কি হবে না, জনসভায় সরকার কি করবে না করবে ইত্যাদি বিষয় নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে বৈঠক করতে পারেন কিনা। পিটার ডি হাস আগেও দেখা গেছে যে ১০ ডিসেম্বর সমাবেশ নিয়েও তিনি বক্তব্য রেখেছেন। মার্কিন দূতাবাস সাম্প্রতিক সময় বিভিন্ন ধরনের বিষয়ে যে ভাবে ভূমিকা রাখছে তা নিয়ে অনেক প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।

সাম্পতিক সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জি-২০ সম্মেলন এবং ওয়াশিংটনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনর সাথে মিটিং করেছেন। সেখানকার পরিবেশ ছিল অন্যরকম। তাছাড়া ওয়াশিংটনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভানের সাথেও বৈঠক করেছেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে যে, ওয়াশিংটনের হোয়াইট হাউস এবং মার্কিন প্রশাসন বাংলাদেশের ব্যাপারে যে দৃষ্টিভঙ্গি এবং অবস্থান নিচ্ছে, একই অবস্থন কি বারিধারায় মার্কিন দূতাবাস নিচ্ছে? এই প্রশ্নটি উঠেছে কারণে বাংলাদেশের অনেকগুলো বিষয় নিয়ে মার্কিন দূতাবাসের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তারা যে সমস্ত কর্মকান্ড করছে তা অনেকেই কূটনৈতিক সূলভ নয় বলে অভিহিত করছে। যদিও মার্কিন দূতাবাসের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যা কিছু করা হচ্ছে সব কিছুিই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য করা হচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জনগণের অধিকার দেখতে চায়, বাংলাদেশে ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে এই পরিস্থিতিটি দৃশ্যমান করতে চায়। কিন্ত এরকম পরিস্থিতি বাস্তবায়ন করতে গিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত কি বাড়াবাড়ি করছেন না? বিশেষ করে মায়ের ডাকের মতো একটি বিতর্কিত সংগঠনের নেতার বাসায় পিটার হাসের যাওয়া কিংবা বিএনপি নেতাদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করা অথবা বিএনপির সমাবেশ নিয়ে তার উৎকণ্ঠা এবং উত্তেজনা বেশ কিছু প্রশ্নের অবতারণা করেছে। এ প্রশ্ন গুলোর যথাযথ উত্তর সকলের জন্যই অত্যন্ত জরুরী।

পিটার ডি হাস আসার পর থেকেই মার্কিন দূতাবাস বিভিন্ন বিষয়ে অত্যন্ত সক্রিয় এবং অনেক ক্ষেত্রেই তারা কূটনৈতিক শিষ্ঠাচারের সীমা লঙ্ঘন করছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এখন দেখার বিষয় হলো ওয়াশিংটনের সবুজ সংকেতই কি মার্কিন রাষ্ট্রদূত এটি করছেন? নাকি মার্কিন রাষ্ট্রদূতের আলাদা আগ্রহ রয়েছে। তিনি বাংলাদেশে একটা কিছু করে দেখানোর জন্য এসব করছেন। তবে বিভিন্ন মহল বলছেন, একজন রাষ্ট্রদূত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার বাইরে কোন কিছুই করতে পারে না। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে দেখা গেছে, একটি টেলিভিশনে গিয়ে সাক্ষাতকারে তিনি বলেছেন, গণমাধ্যমও ভিসা নীতির আওতায় আসবে। এরপর এনিয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হলে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মূখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বিষয়টিকে অন্যভাবে ব্যাখ্যা করেন। এ নিয়েও অনেক জল ঘোলা করা হয়েছে। তাহলে মার্কিন এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য কি পিটার ডি হাস বাড়াবাড়ি করছেন? তিনি কি তার ওপর অর্পিত ম্যান্ডেটের বাইরে গিয়ে কোন বিশেষ পক্ষকে কি সুবিধা দিতে চাইছেন। এই প্রশ্নগুলো ক্রমশ বড় হয়ে উঠছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭