ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

যে কারণে মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধজাহাজ পাঠালো চীন


প্রকাশ: 24/10/2023


Thumbnail

ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যকার চলমান যুদ্ধ ঘিরে চলছে চরম উত্তেজনা। আর এই উত্তেজনার মধ্যেই মধ্যপ্রাচ্যে ছয়টি যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়েছে চীন। মধ্যপ্রাচ্যে পাঠানো এ ‍যুদ্ধজাহাজগুলোর মধ্যে ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী যুদ্ধজাহাজ জিবোও রয়েছে। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। অনেকেই বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অবস্থান ও ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন প্রকাশেই এমনটি করেছে তারা। তবে এসব জল্পনা-কল্পনা উড়িয়ে দিয়েছে বেইজিং। তারা জানিয়েছে, তারা তাদের নিয়মিত টহল ও প্রীতি সফরের অংশ হিসেবেই মধ্যপ্রাচ্যে এসব যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়েছে। এর সঙ্গে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের কোনো সম্পর্ক নেই।

শনিবার (১৪ অক্টোবর) চীনা সেনাবাহিনীর এসব যুদ্ধ জাহাজ অজ্ঞাত গন্তব্যের উদ্দেশে মাস্কাট উপকূল ছেড়ে যায়। চীনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মতে এসব যুদ্ধ জাহাজ গত বুধবার (১৮ অক্টোবর) পাঁচ দিনের সফরে কুয়েতের শুওয়াইখ বন্দরে নোঙর করেছে। নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবেই এসব যুদ্ধ জাহাজ কুয়েতে অবস্থান করছে।

চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) নৌবাহিনী আগেই জানিয়েছিল, গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ার উরুমকি, গাইডেড মিসাইল ফ্রিগেট লিনি ও কৌশলগত সহায়ক জাহাজ ডংপিংহুর সমন্বয়ে গঠিত ৪৫তম চীনা নৌবহর এডেন উপসাগর ও সোমালিয়ার জলসীমায় ৪৪তম নৌবহরের সঙ্গে টহল অভিযানে অংশ নেবে।

কিন্তু এ যুদ্ধজাহাজের বিষয়টি নিয়েই পশ্চিমা গণমাধ্যম ব্যাপক গুজব ছড়াচ্ছে। বলা হচ্ছে, ইসরায়েল-হামাসের মধ্যে চলমান যুদ্ধের কারণেই চীন এমন পদক্ষেপ নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান এবং ফিলিস্তিনকে সমর্থনের উদ্দেশ্যেই তারা এই যুদ্ধজাহাজগুলো পাঠিয়েছে বলে তাদের মত। তবে ওয়াশিংটনে নিযুক্ত চীনা দূতাবাসের মুখপাত্র লিউ পেঙ্গু পশ্চিমাদের এমন দাবি প্রত্যাখান করেছেন।

রোববার (২২ অক্টোবর) রুশ সংবাদমাধ্যম স্পুটনিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে লিউ পেঙ্গু বলেন, পিএলএ নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজের ওই বহর একটি নিয়মিত টহল মিশনের জন্য মধ্যপ্রাচ্যে যাত্রা করেছে ও সংশ্লিষ্ট দেশগুলোতে বন্ধুত্বপূর্ণ সফর করছে। এই সত্যকে শ্রদ্ধা দেখানোর পাশাপাশি সব পক্ষকে ভিত্তিহীন প্রচার বন্ধ করা উচিত।

তিনি আরও বলেন, বিদেশি গণমাধ্যম ও পশ্চিমা রাজনীতিকরা প্রথমে ইসরায়েলকে সমর্থন না দেওয়ার কারণে চীনকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে। আর এখন তারা এই অঞ্চলে আমাদের নিয়মিত সামরিক টহল মিশন নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে। এটা চীনকে সংঘাতে জড়িয়ে ফেলার অপচেষ্টা ছাড়া কিছুই না।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেকোনো জরুরি পরিস্থিতিতে দ্রুত সাড়া দেওয়ার জন্য মধ্যপ্রাচ্যে মোতায়েন করা বহরটি কাজে লাগাতে পারবে চীন। উদাহরণস্বরূপ, চলতি বছরের শুরুতে সুদানে সংঘাত শুরু হলে চীনা নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে চীনা নৌবহর বেশ সহায়ক হয়েছিল। এ ধরনের যেকোনো পরিস্থিতির উদ্ভব হলে ওই সামরিক জাহাজগুলো দ্রুত কাজে যুক্ত হতে পারবে।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের আকস্মিক অভিযানের পর নতুন করে ফিলিস্তিন-সংঘাত শুরু হয়েছে। গত দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজা উপত্যকায় বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। যে হামলা এরই মধ্যে কয়েক হাজার বাড়িঘর ধ্বংস করেছে এবং পাঁচ হাজারের বেশি নিরীহ ফিলিস্তিনির প্রাণ কেড়ে নিয়েছে।

এই সংঘাতের ক্ষেত্রে বিশ্ব কার্যত দুইভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। অসম এই লড়াইয়ে ইসরায়েলকে নগ্ন সমর্থন দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র পশ্চিমারা। অন্যদিকে ইসরায়েলি নির্বিচার হামলার নিন্দা জানিয়ে নিপীড়িত ফিলিস্তিনিদের পক্ষে সমর্থন জানিয়েছে চীন ও রাশিয়া।

তবে সাংহাই ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ ইউনিভার্সিটির মিডল ইস্ট স্টাডিজ ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ডিং লং গ্লোবাল টাইমসকে বলেন, আন্তর্জাতিক বিরোধ সমাধানের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের মতো চীন কখনোই সামরিক হস্তক্ষেপ বেছে নেবে না।

সূত্র: গ্লোবাল টাইমস



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭