ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপি কি করতে চাচ্ছে


প্রকাশ: 25/10/2023


Thumbnail

আগামী ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশ ডেকেছে বিএনপি। মহাসমাবেশ নিয়ে বিএনপির নেতারা পরস্পর বিরোধী কথাবার্তা বলছেন। বিএনপির বক্তব্যের মধ্যে সমন্বয়হীনতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। একেক সময় বিএনপির একেক নেতা একেক রকম মন্তব্য করছেন। যেমন- বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ১৮ অক্টোবরের সমাবেশে বলেছিলেন, ২৮ অক্টোবর হবে আন্দোলনের মহাযাত্রা এবং সেখান থেকেই চূড়ান্ত আন্দোলন হবে। 

এরপর বিএনপির নেতাদের বিভিন্ন বক্তব্য থেকে স্পষ্ট মনে হয় যে, ২৮ অক্টোবর তারা ঢাকায় এসে নয়াপল্টনে অবস্থান গ্রহণ করবেন এবং সেখান থেকে তারা সড়ক অবরোধ, ঢাকা অভিমুখে পদযাত্রা সহ নানা রকম কর্মসূচি দিয়ে সরকারের চূড়ান্ত পতনের লক্ষ্যে আন্দোলনের লাগাতার কর্মসূচি প্রদান করবে। কিন্তু এর কদিন পরেই বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ঢাকা অবরোধ বা অন্যরকম কোনো কর্মসূচি দেওয়ার পরিকল্পনা তাদের নেই। ২৮ অক্টোবর তারা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করবে। এখানে কর্মীরা অবস্থান করবে না। আবার তার পরদিনই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকারের পতনের এখন মাত্র কয়েকটা দিন বাকি আছে। এর মধ্যেই বিএনপির নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ২৮ অক্টোবর থেকে ৩ অক্টোবরের মধ্যে নাকি সরকারের পতন ঘটবে। বিএনপির অবস্থান কি, বক্তব্যই বা কি? এবং তারা আসলে কি করতে যাচ্ছে? 

বিএনপির বিভিন্ন দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, বিএনপি আসলে নিজেরাও জানে না, তারা কি করতে চাচ্ছে? বিএনপির বিভিন্ন নেতাদের সাথে কথা বলে দেখা গেছে যে, বিএনপির কর্মসূচি বা নির্দেশনা গুলো আসছে দুটো জায়গা থেকে। প্রথমত লন্ডন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া বিএনপিকে কি কি পদক্ষেপ নিতে হবে, কি ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে সে ব্যাপারে পরামর্শ দেন। আর দ্বিতীয়ত বিএনপির ব্যাপারে পরামর্শ দেয় পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা। যারা বিএনপি কত দূর যেতে পারবে, কি করতে পারবে ইত্যাদি সম্পর্কে একটি ধারণা দেয়। আর এই দুটি পরামর্শকে এক করেই বিএনপি কর্মসূচি দেয়।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পর্যন্ত আসলে জানেন না যে কোন ধরনের কর্মসূচি দেওয়া হচ্ছে এবং বিএনপি আসলে কি করতে কি করতে যাচ্ছে? তবে বিভিন্ন সূত্র থেকে আভাস পাওয়া গেছে যে বিএনপি ২৮ অক্টোবরের কর্মসূচির ব্যাপারে কিছু কৌশলগত অবস্থান রয়েছে। 

প্রথমত, বিএনপি ঢাকাতে নয়াপল্টনের কার্যালয়ে সমাবেশ করার ব্যাপারে অনড় অবস্থান গ্রহণ করবে। সরকার যদি সেখানে বাধা দেয় তাহলে যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি হবে সে রাজনৈতিক পরিস্থিতির দায় দায়িত্ব তারা সরকারের ওপর চাপাতে চাইবে।

দ্বিতীয়, এর ফলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মহল এবং পশ্চিমা দেশগুলো সরকারকে সমালোচনা করবে এবং সরকারের বিরুদ্ধে একটা বার্তা দিবে।

তৃতীয়ত, বিএনপি এই সমাবেশ করতে না দেওয়ার প্রতিবাদে ঢাকা অভিমুখে গণমিছিল বা ঢাকার বিভিন্ন প্রবেশ মুখে অবস্থান কর্মসূচির মতো কর্মসূচি দেবে। অর্থাৎ ২৮ অক্টোবর বিএনপি সমাবেশ করতে পারুক না পারুক রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে তুলবে এবং এই ২৮ অক্টোবরের দিন থেকেই বিএনপি সারা বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি দিয়ে কার্যত সরকারকে অচল করে দেওয়ার চেষ্টা করবে। 

বিএনপির বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, বিভিন্ন পশ্চিমা মুরুব্বিরা তাদেরকে পরামর্শ দিচ্ছে যে এমন ভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে যেন সমস্ত দায় দায়িত্ব সরকারের ওপর বর্তায়। যেমন- বিএনপি ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনের সমাবেশ করতে চায়। সরকার যদি নয়া পল্টনে সমাবেশ করতে না দেয়, তাদেরকে যদি গোলাপবাগে সমাবেশ করতে দেয় তবুও তারা পল্টনের দিকে উপস্থিত হবে। এই সময় আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বাধ্য হয়েই তাদের সমাবেশে বাধা দেবে এবং এটিকেই তারা ইস্যু করে অন্য কর্মসূচির দিকে যাবে। আর বিএনপি এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি করতে চায় যে পরিস্থিতিতে সব দায় দায়িত্ব সরকারের ওপরেই বর্তাবে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭