ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

অবসরের ১০ মাস পর মারা গেলেন চীনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং


প্রকাশ: 27/10/2023


Thumbnail

চীনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং মারা গেছেন। অবসরের ১০ মাস পর চীনের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর। বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হওয়ার পর মধ্যরাতে তার মৃত্যু হয়। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সিসিটিভির বরাতে এ খবর জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

সিসিটিভি জানিয়েছে, কেকিয়াং সাংহাইয়ে বিশ্রামে ছিলেন। হঠাৎ করেই হার্ট অ্যাটাক করেন তিনি। এরপর তাকে বাঁচাতে সকল ধরনের প্রচেষ্টা করা হয়। এমনকি সকল প্রচেষ্টা সত্বেও বৃহস্পতিবার রাত ১২টা ১০ মিনিটে তার মৃত্যু হয়।

উল্লেখ্য, চীনের ক্ষমতাসীন দল কমিউনিস্ট পার্টির দ্বিতীয় ক্ষমতাধর ব্যক্তি ছিলেন লি কেকিয়াং। ২০১৩ সাল থেকে প্রায় ১০ বছর চীনের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপালন করেছেন তিনি। মাত্র ১০ মাস আগে চীনের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে অবসরে যান কেকিয়াং। অবসরে যাওয়ার আগপর্যন্ত তিনি ছিলেন চীনা ক্ষমতা কাঠামোর দ্বিতীয় শক্তিশালী ব্যক্তি।

লি কেকিয়াং ১৯৫৫ সালের ১ জুলাই তারিখে আনহুয়েই প্রদেশের তিংইউয়েন জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা আনহুই প্রদেশের একজন স্থানীয় কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি ১৯৭৪ সালে স্কুল শিক্ষা শেষ করেন এবং সাংস্কৃতিক বিপ্লবের সময়ে বিশেষ গ্রাম কর্মসূচিতে অবদান রাখতে ঐ প্রদেশের ফেংইয়াং জেলায় প্রেরিত হন। এই কর্মসূচিতে যোগদানের মধ্য দিয়ে লি লি কেকিয়াং ঐ অঞ্চল থেকে কমিউনিস্ট পার্টি অফ চায়নাতে যোগদান করেন এবং অঞ্চলটির উৎপাদন বিষয়ক দলপ্রধানের দায়িত্ব লাভ করেন। দায়িত্ব পালনকালে তিনি মাও সেতুংয়ের চিন্তাধারার ওপর বিশেষ পারদর্শিতার স্বীকৃতিস্বরূপ একটি পুরস্কার লাভ করেন।

তরুণ অবস্থায় লি লি কেকিয়াং স্থানীয় জেলা পর্যায়ের রাজনীতিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে তার বাবার দেয়া প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন ও আইন বিষয়ে পড়ার উদ্দেশ্যে পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে যান। সেখানে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরিষদের সভাপতি নির্বাচিত হন। পরে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৮০ সালে তিনি কমিউনিস্ট ইয়ুথ লিগের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সম্পাদক পদ লাভ করেন। ১৯৮২ সালে তিনি কমিউন্সট ইয়ুথ লিগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ঘোষিত হন এবং সংগঠনের শীর্ষ নেতৃত্বে প্রবেশ করেন।

বিবিসি জানিয়েছে, ক্ষমতার প্রথাগত কোনও ভিত্তি না থাকা সত্ত্বেও লি কেকিয়াং দলীয় উচ্চ পদে উন্নীত হয়েছিলেন। তবে বিশ্লেষকরা বলেছেন, চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং তার চারপাশে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার সাথে সাথে কেকিয়াং তার ক্যারিয়ারের শেষ দিকে ক্রমবর্ধমানভাবে ক্ষমতা কাঠামোতে সাইডলাইনে পড়ে গিয়েছিলেন।

নিজের শেষ মেয়াদে কেকিয়াংই ছিলেন একমাত্র পদস্থ শীর্ষ কর্মকর্তা যিনি প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের অনুগত গোষ্ঠীর অন্তর্গত ছিলেন না। অভিজাত পিকিং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষিত এই নেতা অর্থনৈতিক নীতিতে বাস্তববাদী হওয়ার জন্য পরিচিত ছিলেন।

সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক বার্ট হফম্যান বিবিসির নিউজডে প্রোগ্রামে বলেছেন, ‘লি কেকিয়াং একজন অত্যন্ত উদ্যমী খোলামেলা মানুষ ছিলেন যিনি সত্যিই চীনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালে লি কেকিয়াং চীনের প্রধানমন্ত্রী হন। কিছুটা উদারপন্থি হিসেবে পরিচিত এই নেতা চীনের রাজনৈতিক-সামাজিক পরিসরে পরিবর্তন আনতে কাজ করবেন এমনটিই প্রত্যাশা ছিল। পশ্চিমা বিশ্লেষকদের অনেকে এই প্রশিক্ষিত অর্থনীতিবিদকে নিয়ে আশাবাদও ব্যক্ত করেছিলেন। কিন্তু বলা হয়, প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং নানাভাবে তার ক্ষমতা খর্ব করে দিয়েছিলেন।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭