ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপির প্রথম বিজয়!


প্রকাশ: 27/10/2023


Thumbnail

দীর্ঘ ১৭ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি প্রথম বিজয়ের স্বাদ পেল। অবশেষে নয়াপল্টনে তারা আগামীকালের সমাবেশ করতে যাচ্ছে। প্রথমে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল যে নয়াপল্টনের সমাবেশ করতে দেওয়া হবে না। তবে শেষ পর্যন্ত বিএনপির অনড় অবস্থানের কারণে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে নয়াপল্টনেই সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে বলে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা গেছে। এটি যদি শেষ পর্যন্ত সত্যি হয় তাহলে এটি হবে গত ১৭ বছরের মধ্যে বিএনপির প্রথম বিজয়।

এর আগে গত বছরের ১০ ডিসেম্বর বিএনপি ঢাকায় মহাসমাবেশ করেছিল। ওই মহাসমাবেশ নয়াপল্টনে করার ব্যাপারেও বিএনপি অনড় অবস্থানে ছিল এবং নয়াপল্টনে সমাবেশ করার জন্য ৭ ডিসেম্বর থেকে বিএনপি জমায়েত হতে শুরু করেছিল। কিন্তু পুলিশ প্রশাসন কঠোরভাবে সেই সময় পরিস্থিতি মোকাবিলা করে এবং বিএনপিকে নয়াপল্টন এলাকা থেকে সরিয়ে দেয়। ওই সময় বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সহ বেশ কয়েকজন গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। সেই সময় আটক হয়েও আবার ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল বিএনপির আরেক নেতা ডাকসু সাবেক ভিপি আমানউল্লাহ আমানকে। শেষ পর্যন্ত বিএনপি মহাসমাবেশ করেছিল গোলাপবাগে এবং সেই মহাসমাবেশ থেকে বিএনপির ছয় জন এমপি পদত্যাগ করেছিল। সরকারের পতনের লক্ষে তারা আবার নতুন করে বিভিন্ন জেলায়, বিভাগে পদযাত্রা, সমাবেশের মতো মামুলি কর্মসূচি দিয়েছিল। আর এবারও যখন বিএনপি নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ ডেকেছে তখন সেই মহাসমাবেশ শেষ পর্যন্ত বিএনপি করতে পারবে কি পারবে না তা নিয়ে সংশয় ছিল। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও তাদেরকে মহাসমাবেশ নয়াপল্টনে করতে দেওয়ার ব্যাপারে দ্বিধা দ্বন্দ্বে ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিএনপি নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে পারছে বলেই জানা গেছে।

অবশ্য রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি বিএনপির বিজয় নয়, এটি সার্বিক পরিস্থিতির কারণেই বিএনপি নয়াপল্টনে সমাবেশ করার অনুমতি পাচ্ছে। এর পিছনে প্রধান কারণ হলো আওয়ামী লীগের সমাবেশ। আওয়ামী লীগ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটের সমাবেশ করবে একই দিনে। কিন্তু ঢাকার পুলিশ কমিশনার আওয়ামী লীগকেও অন্য কোনো মাঠে সমাবেশ করার জন্য চিঠি দিয়েছিল। আওয়ামী লীগ এই পরিস্থিতিতে অন্য কোথাও সমাবেশ না করার ব্যাপারে অবস্থান গ্রহণ করে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এই অনড় অবস্থানের কারণে ঢাকা মহানগর পুলিশ প্রশাসনকে একটি সমঝোতা মূলক অবস্থানে যেতে হয় এবং দুপক্ষকেই ছাড় দিতে হয়।

এছাড়াও বিএনপির মহাসমাবেশ নিয়ে মার্কিন দূতাবাসের বেশ তৎপরতা ছিল। বিশেষ করে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস সরাসরি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রালয়ের কাছে ছুটে গিয়ে ছিলেন। তার সাথে তিনি এই সমাবেশের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছিলেন। ফলে শেষ পর্যন্ত যদি সমাবেশ না হয় তাহলে পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সরকারের ওপর আবার নেতিবাচক কোনো চাপ আসতে পারে। এরকম ধারণা থেকেও হয়তো সরকার শেষ পর্যন্ত বিএনপিকে সমাবেশ করার অনুমতি দিচ্ছে। তবে সরকারের ভিতর সবচেয়ে বড় যে চিন্তাটি কাজ করেছে তা হল শান্তিপূর্ণ অবস্থান।

পুলিশ প্রশাসন এবং সরকার মনে করেছে যদি বিএনপিকে সমাবেশ করতে না দেওয়া হয় তাহলে সারা ঢাকা শহরের সহিংসতা করতে পারে। বিশেষ করে একই দিনে জামায়াতের সমাবেশের কারণে পুলিশ প্রশাসনের মধ্যে এরকম একটা ধারণা হয়েছে যে বিএনপি এবং জামায়াত যৌথভাবে একটা সহিংস তৎপরতার চিন্তা ভাবনা করছে। এটা যেন তারা না করতে পারে এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশ যেন ঢাকা বজায় থাকে সেই জন্যই বিএনপিকে ঢাকায় তাদের পছন্দের জায়গায় সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে বিএনপির নেতারা এটিকে তাদের প্রথম বিজয় হিসেবে অভিহিত করছে। তারা মনে করছে যে সরকার যে পিছু হটতে শুরু করেছে একটি বড় প্রমাণ।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭