ইনসাইড পলিটিক্স

মাঠের নেতা শূন্য হয়ে যাচ্ছে আওয়ামী লীগে


প্রকাশ: 27/10/2023


Thumbnail

আওয়ামী লীগ এখন বিএনপির বিরুদ্ধে পাল্টা কর্মসূচি দিচ্ছে। বিএনপির কর্মসূচির সাথে সমান্তরাল ভাবে আওয়ামী লীগও কর্মসূচি দিচ্ছে। কিন্তু এই সমস্ত কর্মসূচি গুলো পালনের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে যে হাতে গোনা চার পাঁচজন নেতাই সবসময় সর্বক্ষণ সরব রয়েছেন এবং তারাই কাজ করছেন। দলীয় কার্যালয়ে হাতে গোনা পাঁচ ছয় জন কেন্দ্রীয় নেতাকে দেখা যাচ্ছে। বাকি নেতারা কোথায় এই প্রশ্ন উঠেছে। 

আওয়ামী লীগ গত কয়েকমাস ধরে নেতাকর্মীদেরকে চাঙ্গা করার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে রাখা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে বিরোধী দলের আন্দোলনে আমার লাভ হয়েছে। এখন নেতাকর্মীরা কাজ পাচ্ছে, তারা বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে থাকছে, এমপিরাও এলাকায় যাচ্ছেন। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে যে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে বা আওয়ামী লীগ সভাপতির অফিসে হাতে গোনা কয়েকজন যাচ্ছেন এবং তারাই মাঠের আন্দোলন গুলোর দেখভাল করছেন। অনেক বড় বড় পদ পাওয়া নেতারা কোন কিছুর মধ্যেই নেই। 

আওয়ামী লীগের যে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ নেতারা বিভিন্ন পদে আছেন, যাদেরকে মাঠের রাজনীতিতে একেবারেই নীরব দেখা যাচ্ছে তাদের মধ্যে ন্যূনতম হলেন প্রেসিডিয়ামের সদস্যরা। প্রেসিডিয়ামের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ, অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল ফারুক খানকে মাঠের কর্মসূচিতে তেমন সরব দেখা যায় না। দলীয় কার্যালয়েও তারা যান না। কর্মীদেরকে দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে বিভিন্নভাবে উজ্জীবিত করার পরামর্শ দেওয়া এই কাজেও তাদেরকে পাওয়া যায় না। একই ভাবে প্রেসিডিয়ামে সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক মাঝে মাঝে বক্তৃতা দেন বটে তবে দলীয় কার্যালয় কেন্দ্রিক রাজনীতির সঙ্গে তিনি মোটেও সম্পৃক্ত নয়, কর্মীদের সঙ্গে তাকে খুব একটা সার্বক্ষণিক যোগাযোগের মধ্যে দেখা যায় না। 

এ তো গেল প্রেসিডিয়ামের অবস্থা। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকদের মধ্যে ডা. দীপু মনি শিক্ষামন্ত্রীও দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি মন্ত্রণালয়ের বাইরে বিভিন্ন জায়গায় বক্তৃতা দেন বটে কিন্তু শুধু কর্মসূচি হলেই তাকে দেখা যায়। কিন্তু অন্য সময় তাকে দলীয় কর্মীরা কার্যালয়ে বা আওয়ামী লীগ সভাপতি কার্যালয় দেখে না।

আওমীলীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্যদের মধ্যে যারা আগে রাজনীতিতে সরব ছিলেন এদের মধ্যে আমির হোসেন আমু এখনও সরব রয়েছেন। কিন্তু তোফায়েল আহমেদ অসুস্থতার কারণে এখন সরব নেই। প্রেসিডিয়াম সদস্যদের মধ্যে শেখ ফজলুল করিম সেলিমকে কিছুদিন আগেও সরব দেখা গিয়েছিল। তিনি বিভিন্ন কর্মসূচিতে আসেন বটে কিন্তু দলীয় কার্যালয় কেন্দ্রিক কর্মীদেরকে নিয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে তার অনুপস্থিতিও চোখে পড়ে। আওয়ামী লীগে এই মুহূর্তে যারা সরব এবং সক্রিয়ভাবে মাঠের রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করছেন তাদের মধ্যে নিঃসন্দেহে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের অন্যতম। এর পরেই আছেন জাহাঙ্গীর কবির নানক, বাহাউদ্দিন নাছিম কর্মীদেরকে নিয়ে সার্বক্ষণিক ভাবে সংগঠন গড়ে তোলার কাজ করছেন। একই কাজ করছেন মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, সুজিত নন্দীরাও। এরাই আওয়ামী লীগের কর্মীদেরকে সজীব রেখেছে, এরাই বিভিন্ন কর্মসূচি প্রনয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করার কাজ করছেন। 

আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলছেন, একটি কর্মসূচি পালন মানে শুধু মঞ্চে এসে বক্তৃতা দেওয়া নয়। আওয়ামী লীগের বেশিরভাগ নেতা সেই কাজটি করছেন। একটি জনসভা ডাকা হলে জনসভাটি কিভাবে সফল হবে? কারা স্বেচ্ছাসেবক থাকবেন? কে কত লোক কোথা থেকে নিয়ে আসবে? ইত্যাদি খুঁটিনাটি বিষয়গুলো চূড়ান্ত করতে হয়। কিন্তু এই কাজটি করার মতো মাঠের নেতা আওয়ামী লীগের কমে যাচ্ছে। এটা আওয়ামী লীগের জন্য একটা বড় ধরনের উদ্বেগের বিষয় বলে অনেকেই মনে করছেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭