ইনসাইড পলিটিক্স

কেন সহিংস রাজনীতিতে ফিরে এলো বিএনপি


প্রকাশ: 28/10/2023


Thumbnail

বিএনপি আবার তার সহিংস রূপে আত্মপ্রকাশ করেছে। ২০১৩-১৪ সালে যে সন্ত্রাস, নৈরাজ্য এবং আগুন সন্ত্রাসের রাজনীতি শুরু করেছিল আজ হঠাৎ করে সে ধারায় ফিরে এলো দলটি। প্রথম থেকেই বিএনপি মারমুখী ছিল। বিএনপিকে যখন নয়াপল্টনে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হবে না বলে ঘোষণা করা হয়েছিল ঠিক সেই সময় বিএনপির অনড় অবস্থান অনেকের মধ্যে এই ধারণা তৈরি করেছিল যে বিএনপি এবার সহিংস রূপে আবার ফিরে আসবে।

নির্বাচনের জন্য আর মাত্র ৯০ দিনের সংবিধান বেঁধে দেয়ার সময় রয়েছে। তবে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন করতে চায় নির্বাচন কমিশন। এর আগেই যদি বিএনপি বড় ধরনের কোনো আন্দোলনের কর্মসূচি না দিতে পারে, সে ক্ষেত্রে নির্বাচন প্রতিরোধ করা বিএনপির জন্য অসম্ভব হয়ে পড়বে। আর এ কারণেই বিএনপি বড় ধরনের সহিংস এবং পুরনোরূপে ফিরে যেতে পারে এমন ইঙ্গিত ছিল। আজ তার বহিঃপ্রকাশ ঘটলো।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করার মুচলেকা দিয়েছিল বিএনপি। কিন্তু যখনই বিএনপির কর্মীরা সমবেত হতে শুরু করে, তারা একের পর এক বিভিন্ন ধরনের নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা করে। প্রথমে তারা কাকরাইলে গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটায়। এরপর প্রধান বিচারপতির বাসভবন আক্রমণ। অডিট ভবন আক্রমণ করে ফলে ক্রমশ পরিস্থিতি আতংকজনক হয়ে যায়। এরকম পরিস্থিতিতে জনগণের জানমাল হেফাজতের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি বিজিবিকে মাঠে নামানো হয়। বিজিবি মাঠে নামানোর পরেই বিএনপির মূল পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।

কিছুদিন ধরেই গুঞ্জন ছিল যে বিএনপি নয়া পল্টনে এসে অবস্থান গ্রহণ করবে এবং ঢাকা দখল করবে। ঢাকার সব প্রবেশমুখ বন্ধ করে দিয়ে তারা সরকার পতনের জন্য একটা অচল অবস্থা তৈরি করবে। কিন্তু হঠাৎ করেই তাদের সহিংস আচরণের ফলে সরকারের কঠোর ব্যবস্থা সমস্ত পরিকল্পনা ভেস্তে দেয়।

বিএনপির পরিকল্পনা ছিল যে সরকারি ভবনগুলোতে ভাংচুর জ্বালাও-পোড়াও করে তারা একটি পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে এবং বিভিন্ন পয়েন্টে নেতা-কর্মীরা অবস্থান গ্রহণ করবে। ফলে এই আন্দোলন টানা আন্দোলন হিসেবে বিবেচিত হবে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এর আগে বলেছিলেন যে এটি হবে আন্দোলনের মহাযাত্রা। ঠিক সেরকম একটি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যেই বিএনপি ছক এঁকেছিল। কিন্তু বিএনপির নেতারা চিন্তা করেননি যে সরকার এত দ্রুত সময়ের মধ্যে বিজিবিকে মাঠে নামাবে বিজিবিকে মাঠে নামানোর পরপরই বিএনপি নেতারা বুঝতে পারেন যে পরিস্থিতি পাল্টে যেতে শুরু করেছে। তখন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সভাস্থল ত্যাগ করেন এবং আগামীকাল হরতালের ঘোষণা দেন। এর ফলে আবার বিএনপি সহিংস রাজনীতিতে ফিরে গেল।

তবে কোন কোন রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করছেন যে গত কয়েকদিন ধরেই জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির নতুন করে সম্পর্ক হয়েছে। এই সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে জামায়াত বিএনপির সাথে সমান্তরালভাবে আবার আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা শুরু করেছে। আজ জামায়াত শাপলা চত্বর এলাকায় সমাবেশ ডেকেছিল। কিন্তু জামায়াত যেহেতু নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল নয়, সেই জন্য শাপলা চত্বর এলাকায় সমাবেশ করার অনুমতি দেয়নি আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সেখানে কঠোর অবস্থানের কারণে জামাত শেষ পর্যন্ত আরামবাগ এলাকায় অবস্থান গ্রহণ করে। যেহেতু জামায়াত বিএনপির প্রধান মিত্র এবং তারা শাপলা চত্বরে সমাবেশ করতে পারছে না, সে কারণেই একটা ঘোলাটে পরিস্থিতি তৈরি করার জন্য বিএনপি চেষ্টা করেছে।

তবে ধারণা করা হচ্ছে যে, বিএনপির এই হরতালের ফলে টানা কর্মসূচির ধারা শুরু হলো এবং বিএনপি এখন সহিংস আক্রমণাত্মক কর্মসূচির পথে যাবে। সরকার এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করে কিভাবে দেশকে নির্বাচনমুখী করে সেটাই এখন দেখার বিষয়।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭