ইনসাইড পলিটিক্স

অশান্ত হয়ে উঠছে রাজনীতি: কি হবে পরিণতি


প্রকাশ: 28/10/2023


Thumbnail

হঠাৎ করে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে উঠেছে। আজ পুরো ঢাকা শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিল। এরকম আশঙ্কা অনেক মহলই করেছিলেন। কিন্তু সকলেই শেষ পর্যন্ত প্রত্যাশা করেছিল যে রাজনৈতিক দলগুলো সহনশীলতার পরিচয় দিবে এবং শেষ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমেই তাদের দাবি দাওয়া আদায়ের চেষ্টা করবে। কিন্তু সেটি আর হয়নি। আজ বিএনপির সমাবেশ স্থলে শুরু থেকে ছিল মারমুখী আচরণ এবং তারা একের পর এক সহিংসতার ঘটনা ঘটাতে থাকে। এরপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হস্তক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বিএনপি হরতালের ডাক দিয়েছে।তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছে, এটি সূচনা মাত্র। সামনের দিনগুলোতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে। এর ফলে কি হবে?

আগামী ৯০ দিনের মধ্যে দেশে একটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। কিন্তু নির্বাচনের আগে এধরনের সহিংসতা কি নির্বাচনকে অনিশ্চিত করে তুলবে? একটি অনির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতায় আসার পথ করে দিবে? এই প্রশ্নটি এখন সামনে চলে এসেছে।

বিএনপি কিছুদিন ধরেই নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। তারা বলছে যে এই দাবি আদায় ছাড়া তারা নির্বাচনে যাবে না। কিন্তু এই দাবি পূরণের লক্ষ্যে তারা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করবে এমন আশ্বাসও দিয়েছিল। যদিও বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মহল থেকে আশঙ্কা করা হয়েছিল যে বিএনপির কর্মসূচি শেষ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ থাকবে না। যেকোনো সময় তারা সহিংস হয়ে উঠতে পারে। তারা শুধু খোঁজ সুযোগ খুঁজছে। আজ সেই সুযোগটি পেয়েছে বিএনপি। আর এই সুযোগ পাওয়ার পরপরই বিএনপি যে তাণ্ডব চালিয়েছে তাতে জনমনে এখন নতুন করে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। সামনের দিনগুলোতে কি হয় তা নিয়ে চলছে নানামুখী জল্পনা কল্পনা।

বিএনপি এই হরতালের মাধ্যমে সামনের দিনগুলোতে আরও বড় ধরনের সহিংস কর্মসূচি গ্রহণ করে দেবে বলে অনেকেই মনে করছেন। তবে বিভিন্ন মহল মনে করছে যে বিএনপির আজকের এই ঘটনাবলি গুলো সরকারকে কঠোর অবস্থানে নিয়ে যেতে বাধ্য করবে। সরকার হয়তো এখন বিএনপির শীর্ষ নেতাদেরকে গ্রেপ্তার এবং আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের জন্য যা যা করা দরকার সব কিছু করবে। এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করলে বিএনপি হয়তো আরও সহিংস এবং জ্বালা-পোড়াওয়ের দিকে যেতে পারে। সবকিছু মিলে আগামী কয়েকটা দিন রাজনীতি উত্তাপের আগুনে জ্বলবে। এটির প্রভাব নির্বাচনের ওপর পড়ে কিনা সেটাই হলো শঙ্কার কথা। কারণ এইরকম সহিংস পরিবেশ হলে শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের পরিবেশও নষ্ট হয়ে যাবে। 

তবে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা বলছেন তারা যেকোনো উপায়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ এবং সংবিধানে বেঁধে দেওয়ার সময়ের মধ্যে নির্বাচন করতে বদ্ধপরিকর। এখন আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির মুখোমুখি অবস্থানে চলে গেছে। আওয়ামী লীগ যেমন নির্বাচন করতে চাইছে তেমনি বিএনপি একটি অসাংবিধানিক সরকারকে ক্ষমতায় আনতে চাইছে। আর এই পাল্টাপাল্টি অবস্থানের ফলে রাজনীতিতে যে সংকটের কালো মেঘ তা ঘনীভূত হওয়া শুরু করছে। বিএনপি সামনের দিনগুলোতে আরও বেশি হরতাল, অবরোধ এবং জ্বালাও-পোড়াওয়ের কর্মসূচি দেবে। অন্যদিকে জনগণের জানমাল নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য হয়তোবা সরকারও কঠোর পদক্ষেপ নেবে। এখন দেখার বিষয় এই ধরনের পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপ দেশকে কোথায় নিয়ে যায় এবং সামনের দিনগুলোতে এই সহিংসতার পরিণতি কি হয়। তবে এর মধ্য দিয়ে রাজনীতিতে সমঝোতার পথ আস্তে আস্তে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বলেই রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করছেন।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭