প্রকাশ: 31/10/2023
শান্তিপূর্ণ
মহাসমাবেশে হামলার ঘটনায় সরকার ও পুলিশকে দায়ী করে ঢাকাস্থ বিভিন্ন দেশের দূতাবাস ও
জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় চিঠি দিয়েছে বিএনপি। সোমবার সকালে ভাংচুর-হামলা-অগ্নিসংযোগের ঘটনার তথ্য -উপাত্তসহ লিখিতভাবে জানিয়েছি দলটি।
চিঠিতে বলা
হয়েছে, এসব তৎপরতা সুষ্ঠু, অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের অন্তরায়। দলীয় সরকারের
অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় তা প্রমাণিত। চিঠির সঙ্গে কয়েকটি সিডি, বেশ কয়েকটি
স্থিরচিত্রও দেওয়া হয়। মহাসমাবেশ ঘিরে সহিংসতা এবং পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের
পক্ষ থেকে বিকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বিদেশি কূটনীতিকদের ব্রিফিংয়ের আগেই এই
চিঠি পৌঁছে দেয় বিএনপি।
চিঠিতে মহাসমাবেশের
দিন ঘটনার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কিভাবে কি ঘটেছে এবং কোনো প্রেক্ষিতে বিএনপিকে কঠোর
কর্মসূচিতে যেতে হয়েছে চিঠিতে তাও উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানান বিএনপির এক নেতা।
চিঠিতে বলা
হয়, সকাল থেকেই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে লাখো মানুষ নয়াপল্টনে উপস্থিত হয়। সকাল ৯টার মধ্যেই
সমাবেশস্থল ছাড়িয়ে আশেপাশের এলাকাগুলো বিএনপির নেতাকর্মীদের স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে।
এত বাধা-বিপত্তি সত্ত্বেও এই অভূতপূর্ব জনসমাবেশ আওয়ামী লীগ সরকার ও পুলিশ বাহিনীকে
আরও ভীত করে তুলে।
পূর্ব-পরিকল্পনা
অনুযায়ী, কাকরাইল মোড়ের কাছে পুলিশের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা বিএনপির শান্তিপূর্ণ
মহাসমাবেশ বানচাল করার উদ্দেশ্যে সহিংস আচরণ শুরু করে। তারা প্রধান বিচারপতির বাসভবনের
সংলগ্ন একটি গেটে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। যেখানে পুলিশ বাহিনীর পেশাদারী ও নিরপেক্ষ
ভূমিকা রাখা দরকার, সেখানে পুলিশ নিজেই আক্রমণাত্মক হয়ে মাত্রাতিরিক্ত শক্তিপ্রয়োগ
করা শুরু করে। যেখানে মূল জনসভার কেউ এই সহিংস ঘটনায় যুক্ত ছিল না, সেখানে পুলিশ বাহিনী
সম্পূর্ণ পূর্ব-পরিকল্পনামাফিক রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে জনসভায় হামলা শুরু করে।
মুহুর্মুহু
টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয় নিরীহ ও নিরস্ত্র জনগণের ওপর।
পুলিশের লাঠিচার্জ, রাবার-বুলেট নিক্ষেপ ও সাউন্ড গ্রেনেডে শত শত নিরস্ত্র নেতাকর্মী
ও সাধারণ জনগণ আহত হন।
চিঠিতে আরও
বলা হয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রত্যক্ষ মদদে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে আক্রমণ করে পূর্ব
নিয়োজিত অপরিচিত লোকজন। অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি, বাস, মোটরসাইকেলসহ বেশকটি
গাড়িতে আগুন দেয় তারা। হামলা করে রাজারবাগের কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে। এছাড়া কাকরাইল,
ফকিরাপুল, নাইটিঙ্গেল মোড় ও শান্তিনগর এলাকার কয়েকটি পুলিশ বক্স তারা পুড়িয়ে দেয়।
চিঠিতে মহাসমাবেশ
স্থলে আগে থেকেই ইন্টারনেট সংযোগ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দেওয়া, বিদ্যুৎ
সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও বক্তব্য প্রচারের মাইকের লাইন কেটে দেওয়ার কথাও জানানো হয়।
এছাড়াও বলা
হয়, পুলিশি সহিংসতার এক পর্যায়ে পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল ইসলামকে নির্মমভাবে হত্যার
শিকার হন। পুলিশের গুলিতে শহীদ হন বিএনপির অঙ্গ সংগঠন ঢাকা দক্ষিণ যুবদলের স্থানীয়
নেতা শামীম মিয়া। গভীরভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হন হাজার-হাজার গণতন্ত্রকামী মানুষ। বিএনপির
কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় অনেক নেতাকর্মী আজও হাসপাতালে সংকটাপন্ন অবস্থায় আছেন। পুলিশের
টিয়ার গ্যাসে আহত সাংবাদিক নেতা ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সদস্য রফিক ভূইয়ার মৃত্যু হয়।
চিঠিতে উল্লেখ
করা হয়, ভিডিওতে স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হামলা-ভাংচুর-অগ্নিসংযোগের ঘটনার আইনশৃঙ্খলা
বাহিনীর সদস্য ও আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী সংগঠনের নেতারা জড়িত। পরিকল্পিতভাবে একটি
সহিংস পরিস্থিতি তৈরি করে আওয়ামী লীগ ও পুলিশ বাহিনী। হামলা-ভাংচুর-অগ্নিসংযোগের সঙ্গে
বিএনপি বা অঙ্গ সংগঠনের কেউ জড়িত নয়। দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করে জোরপূর্বক
স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
এছাড়া চিঠিতে
বলা হয়, সমাবেশের দিন মূল মঞ্চে বিএনপি মহাসচিব, স্থায়ী কমিটির সদস্য, কেন্দ্রীয়
ও অঙ্গ সংগঠনের শীর্ষ নেতারা থাকলেও বিভিন্ন ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে মিথ্যা ও গায়েবি
মামলায় দেওয়া হয়েছে। এখন সারা দেশে গ্রেফতার অভিযান চালানো হচ্ছে।
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭