ইনসাইড বাংলাদেশ

সামনে আসছে সংলাপ


প্রকাশ: 31/10/2023


Thumbnail

সহিংস রাজনীতির মধ্যেই সংলাপের নতুন করে গুঞ্জন উঠেছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল আগামী ৪ নভেম্বর ৪৪ টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ ডেকেছেন। বিএনপির পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের সঙ্গে বৈঠকের পরপরই নির্বাচন কমিশনের সংলাপ আবার ইঙ্গিতবাহী। ধারণা করা হচ্ছে শেষ পর্যন্ত নাটকীয় ভাবে সংলাপে যোগ দেবেন বিএনপি।

বিএনপি কিছুদিন আগে বলেছিল বিশেষ করে যখন মার্কিন প্রাক নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল পাঁচ দফা সুপারিশ দিয়েছিল তখন তাদের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন যে আওয়ামী লীগ যদি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে একমাত্র তখনই সংলাপ হতে পারে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি নীতিগতভাবে মেনে নেওয়া ছাড়া কোন সংলাপ হবে না বলেও মির্জা ফখরুল বলেছিলেন। কিন্তু সেই পরিস্থিতি এখন নাই। বিএনপি নিজের ভুলে নিজেই এখন খাদের ভিতর ঢুকে গেছে। এই পরিস্থিতি থেকে বিএনপির জন্য সংলাপের কোনো বিকল্প নাই। আর এ কারণেই মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস সহ বেশ কিছু পশ্চিমা দূতাবাস আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির মধ্যে একটি সংলাপের উদ্যোগ গ্রহণ করছে, যেটি হতে পারে বিএনপির নির্বাচনে আসার একটি পথ।

ইতোমধ্যে মার্কিন রাষ্ট্রদূত অথবা মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের কর্মকর্তারা সরকারের সাথেও সংলাপের গুরুত্ব নিয়ে আলাপ আলোচনা করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। যেহেতু সরকার আগে থেকেই বলেছে যে শর্তহীন সংলাপে তাদের কোনো আপত্তি নেই সেই জন্য সরকার সংলাপ করবে। তবে সংলাপ কিভাবে হবে সে নিয়ে বিভিন্ন মহলে নানা রকম মতামত রয়েছে। অনেকেই মনে করছেন যে সংলাপ হতে পারে নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে। এমনিতেই নির্বাচন কমিশন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সংলাপ করে। এবারও নির্বাচন কমিশন সংলাপ করার একটি চিন্তাভাবনা করেছিল। কিন্তু বিএনপির অনমনীয় অবস্থার কারণে দ্বিধান্বিত ছিল নির্বাচন কমিশন। তবে আজকে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠকের পর সংলাপ নিয়ে বিএনপির অবস্থান পাল্টে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সিইসির নেতৃত্বে সংলাপে যদি বিএনপি যায় তাহলে আলাদাভাবে সংলাপের কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই বলেও অনেকে মনে করেন।

দ্বিতীয় উপায়ে সংলাপ হল প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগ। প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের আগে সকল রাজনৈতিক দলগুলোকে সংলাপের জন্য ডাকতে পারেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী এরকম সংলাপ করেছেন। ২০১৩ এবং ২০১৮-তে প্রধানমন্ত্রী সংলাপ করেছিলেন। ২০১৩ সংলাপে বিএনপি যোগ দেয়নি। কিন্তু ২০১৮’র সংলাপে বিএনপি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতৃত্বে যোগ দিয়েছিল। এবারেও প্রধানমন্ত্রী সংলাপের আহ্বান জানায় কিনা সেটির জন্য অনেকেই অপেক্ষা করছেন।

তৃতীয়ত, রাষ্ট্রপতির নেতৃত্বে সংলাপ। যেহেতু নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি সকলে পক্ষ এবং সাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রপতি হলেন দেশের অভিভাবক। কাজেই রাষ্ট্রপতিও সকল রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপের অনুষ্ঠান করতে পারেন এবং সকল পক্ষকে নির্বাচনে নিয়ে আসার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারেন। 

তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে বর্তমান যে রাজনৈতিক সহিংসতা চলছে এটি বেশিদিন চলবে না। বিএনপি নিজেরাও বুঝতে পারছে যে এই ধরনের কর্মসূচি দিয়ে তাদের কোনো লাভ হবে না। বরং এর মধ্য দিয়ে তাদের অস্তিত্বই সংকটের মুখে পড়বে। আর এই কারণেই সংলাপের ব্যাপারে তারা আগ্রহী হয়ে উঠছে। তাছাড়া আন্তর্জাতিক চাপও রয়েছে সংলাপের পক্ষে। এর ফলে খুব শিগগিরই দেশে সংলাপ শুরু হতে যাচ্ছে বলে অনেকেই মনে করেন।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭