ইনসাইড বাংলাদেশ

বেকায়দায় সুশীলরা: বিএনপিকে বাঁচানোর পথ খুঁজছেন


প্রকাশ: 31/10/2023


Thumbnail

বাংলাদেশের সুশীল সমাজের একাংশ গত কিছুদিন ধরেই বিএনপির মুখপাত্রে পরিণত হয়েছিলেন। তারা নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিকে যেমন সমর্থন করছিলেন ঠিক তেমনি বিএনপির প্রতি ক্রমশ সহানুভূতিশীল হয়ে উঠেছিলেন। অনেকেই বিএনপির চেয়ে বড় বিএনপি হয়ে উঠেছিলেন। বিভিন্ন লেখালেখি, টকশোতে তারা বিএনপির পক্ষে নানা রকম যুক্তি তর্ক উপস্থাপন করছিলেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার কেন প্রয়োজন, সরকারের নানা রকম সমালোচনা এবং বিএনপির নানা প্রশংসায় বন্যায় তারা ভাসিয়ে ছিলেন। কিন্তু ২৮ অক্টোবরের ঘটনায় এই সুশীলদের স্বপ্ন ভঙ্গ হয়, সুশীলরা হতবাক হয়ে গেছেন ২৮ অক্টোবরের তাণ্ডবে। 

সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো ২৮ অক্টোবরের ঘটনার সব ভিডিও ফুটেজ গুলো বিএনপির বিপক্ষে যায়। এই ভিডিও ফুটেজ গুলোতে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে বিএনপির কর্মীরাই প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা চালিয়েছে। তারাই রাজারবাগে পুলিশ হাসপাতালে ভাঙচুর করেছে। তারাই অডিট ভবনে হামলা করেছে। একজন পুলিশকে নির্মমভাবে অমানবিক কায়দায় পেটানোর ঘটনাটিরও ভিডিও চিত্র এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরছে, যাতে স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে বিএনপির সহিংস ক্যাডাররা এই ন্যাক্কারজনক মধ্যযুগীয় বর্বরতা করেছে। যার ফলে তাদের হাতে কোনো অস্ত্র, তাদের হাতে কোনো বক্তব্য নাই।

বিএনপির নেতারা ঢালাও গদবাধা পুরোনো বক্তব্য বলছেন যে সরকার পরিকল্পিতভাবে বিএনপির সমাবেশে হামলা করেছে। কিন্তু ভিডিও ফুটেজ গুলো তাদের বক্তব্যকে সমর্থন দেয় না। বরং এর মধ্য দিয়ে বিএনপি আবার হাস্যকর এবং খেলো একটি রাজনৈতিক সংগঠনে নিজেদেরকে পর্যবেসিত করেছে। এর ফলে বিএনপিকে যে সমর্থন করবে বা সরকার যে হামলা করেছে এটা যে প্রমাণ করবে তার কোনো পথ খুঁজে পাচ্ছেন না আমাদের তথাকথিত সেই সমস্ত সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। তারা যথেষ্ট বিপাকে পড়েছেন। তারপরও কেউ কেউ ইনিয়ে-বিনিয়ে কিছু বলার চেষ্টা করছেন। কিন্তু গত কয়েকদিন আগেও যেভাবে সুশীলরা বিএনপির পক্ষে রীতিমতো মাতম তুলেছিলেন তারা এখন অনেকটাই কোণঠাসা, বিব্রত। কি বলবেন না বলবেন তা নিয়ে তারা উপায় উপায় খুঁজে পাচ্ছেন না। আর এর ফলে বিএনপিপন্থী এই সমস্ত ভাড়াটে সুশীলদের একটাই অস্ত্র সামনে এসেছে তা হচ্ছে তারা মনে করছে যে এই ঘটনার ফলে লাভের ফসল কার ঘরে গেল? অর্থাৎ ২৮ অক্টোবরের সহিংসতা, ভাঙচুরের ঘটনায় সবচেয়ে বড় বেনেফিশিয়ারি হয়েছে আওয়ামী লীগ। কারণ এর ফলে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী বাধা অতিক্রম হয়েছে। এখন আওয়ামী লীগের জন্য আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন তা সেটা যেভাবেই হোক না কেন বিএনপি অংশগ্রহণ করুক না করুক সেটি বাস্তবায়ন করা কোনো কঠিন বিষয় হবে না। এর ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ পশ্চিমা দেশগুলো যারা এতদিন অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কথা বলে আসছিল তারাও আওয়ামী লীগকে দোষারোপ করতে পারবে না। এই পরিস্থিতির কারণেই সুশীলরা এখন নতুন নতুন তথ্য হাজির করেছে তা হলো যে আওয়ামী লীগ যেহেতু এই ঘটনা থেকে লাভবান হয়েছে সেজন্য আওয়ামী লীগ এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকলেও থাকতে পারে। কিন্তু আওয়ামী লীগ যে জড়িত তার কোনো প্রমাণ সুশীল বা বিএনপি কারো হাতে নেই। শুধু মুখের কথায় মানুষ এগুলো বিশ্বাস করছে না। তার চেয়েও বড় কথা হচ্ছে যে আবার হরতাল বা অবরোধ ইত্যাদি কর্মসূচি মানুষ মোটেও গ্রহণ করছে না। এই ধরনের কর্মসূচিকে মানুষ ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যান করছে। এই সুশীলরাই হরতাল-অবরোধের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় কথা বলেছেন। বিশেষ করে যখন আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে ছিল, হরতাল করেছিল, তখন এই সুশীলরা রীতিমতো চিৎকার চেঁচামেচি করেছিল হরতাল অবরোধের বিরুদ্ধে। এখন এই সমস্ত সুশীলরা কি বলবেন? আর এই কারণেই তাদের প্রচার অভিযান এখন থমকে গেছে। তারা বিভ্রান্ত হয়ে চিন্তা ভাবনা করছেন যে কোন পথে যাবেন, কিভাবে যাবেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭