ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

গাজায় শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বোমা হামলা, নিহত অর্ধশতাধিক


প্রকাশ: 01/11/2023


Thumbnail

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ভয়াবহ এই বোমা হামলায় অর্ধশতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। আরও দেড় শতাধিক ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ওই ক্যাম্পের পাশেই ইন্দোনেশিয়া সরকার পরিচালিত একটি দাতব্য হাসপাতালের প্রধান মধ্যপ্রাচ্য ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল-জাজিরাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

অবশ্য ইসরায়েলি এই হামলায় নিহতের মোট সংখ্যা এখনও জানা যায়নি। এতে করে শরণার্থী শিবিরে হওয়া এই হামলায় প্রাণহানির সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বুধবার (১ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

গাজা সিটির উত্তরে অবস্থিত জাবালিয়া শরণার্থী ক্যাম্পটি ছোট্ট ওই ভূখণ্ডে থাকা আটটি শরণার্থী ক্যাম্পের মধ্যে সবচেয়ে বড়। জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩ সালের জুলাই মাসেও সেখানে এক লাখ ১৬ হাজারের কিছু বেশি নিবন্ধিত ফিলিস্তিনি শরণার্থীর বসবাস ছিল।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘উত্তর (গাজা) উপত্যকার জাবালিয়া শিবিরের একটি বিশাল এলাকাকে লক্ষ্য করে ইসরায়েলি হামলায় ৫০ জনেরও বেশি নিহত এবং প্রায় ১৫০ জন আহত হয়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও বহু মানুষ আটকে আছেন।’

এদিকে জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইসরায়েলের এক সামরিক কর্মকর্তা। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র রিচার্ড হেচট সিএনএনকে বলেছেন, ‘সেই এলাকায় হামাসের একজন সিনিয়র কমান্ডার ছিলেন। আমরা এটি অনুসন্ধান করছি এবং সেখানে কী ঘটেছে তা জানার সাথে সাথে আমরা আরও তথ্য নিয়ে হাজির হবো।’

১৯৪৮ সালে আরব যুদ্ধের পর থেকেই শরণার্থীরা ওই ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া শুরু করে। যেটির আয়তন মাত্র ১ দশমিক ৪ বর্গকিলোমিটার। জাবালিয়া ক্যাম্পে ১৬টি ভবনে ২৬টি স্কুল পরিচালিত হয়। এছাড়াও সেখানে রয়েছে একটি খাবার বিতরণ কেন্দ্র, দুইটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র, একটি পাঠাগার এবং সাতটি পানির কূয়া।

জাবালিয়ায় হামলার পর ধারণ করা বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজে শরণার্থী শিবিরের বাসিন্দাদের হামলার জেরে সৃষ্ট বড় বড় গর্তের চারপাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় এবং উদ্ধারকারীদের ধসে পড়া ভবনের নিচে বেঁচে থাকা লোকদের খুঁজে বের করার জন্য দৌড়ঝাঁপ করতেও দেখা যায়।

জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরের ৪১ বছর বয়সী বাসিন্দা রাগেব আকল বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে ধ্বংসস্তুপ দেখেছি। ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে থাকা বাড়িঘর ও শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গও দেখেছি এবং এই হামলায় বিপুল সংখ্যক মানুষ শহীদ ও আহত হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভূখণ্ডটিতে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা ইতোমধ্যেই সাড়ে ৮ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।

নিহতদের মধ্যে সাড়ে ৩ হাজারেরও বেশি শিশু, ২ হাজারের বেশি নারী এবং প্রায় পাঁচশো বয়স্ক মানুষ রয়েছেন। এছাড়া ইসরায়েলের এই বিমান হামলা থেকে বাদ যাচ্ছে না গাজার কোনও অবকাঠামো।

মসজিদ, গির্জা, স্কুল, হাসপাতাল, শরণার্থী শিবিরসহ বেসামরিক মানুষের বাড়ি-ঘর সব জায়গায় হামলা চালিয়ে আসছে তারা। একইসঙ্গে গত ৮ অক্টোবর থেকে গাজায় সর্বাত্মক অবরোধও আরোপ করে রেখেছে ইসরায়েল।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭