ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপিকে আর সুযোগ দিতে চায় না আওয়ামী লীগ


প্রকাশ: 02/11/2023


Thumbnail

২৮ অক্টোবর বিএনপির ভুলের ফসল পুরোপুরি ঘরে তুলতে চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। বিএনপিকে এরকম চাপে রেখে এবং কোণঠাসা রেখেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করতে চায় আওয়ামী লীগ। বিএনপিকে আর কোনো সুযোগ দেবে না আওয়ামী লীগ। আর নির্বাচন পর্যন্ত সময় আওয়ামী লীগ যে কর্মপরিকল্পনাগুলো গ্রহণ করেছে তাকে ৫ ভাগে ভাগ করা যায়।

প্রথমত, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা: বিএনপি ২৮ অক্টোবর একজন পুলিশ কনস্টেবলকে নির্মম ভাবে মধ্যযুগীয় কায়দায় পিটিয়েছে। শুধু একজন পুলিশ কর্মকর্তাকেই বিএনপির কর্মীরা হত্যা করেনি বরং হাসপাতালে আক্রমণ করেছে। প্রধান বিচারপতির বাসভবন আক্রমণ করেছে। এগুলো প্রত্যেকটি ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেওয়া হয়েছে।

ওইদিন আকাশে ড্রোন উড়ছিল এবং প্রত্যেকটি ঘটনার সাথে কারা কীভাবে জড়িত তার ভিডিও ফুটেজ এখন সরকারের কাছে আছে। সরকার এই ভিডিও ফুটেজ ধরে ধরে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছে। আর যারা নেতা তাদেরকে নির্দেশদাতা হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ২৮ টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সামনে আরও নেতাকে গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানা গেছে।

অর্থাৎ সরকার এই সমস্ত সন্ত্রাস নাশকতার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যেতে চায়। কোনরকম ছাড় দিতে চায় না। এ নিয়ে সরকারের শূন্যতা নীতি এখন প্রকাশ্য হয়েছে। এর ফলে বিএনপি কোণঠাসা থাকবে বলে মনে করছে সরকার।

দ্বিতীয়ত, নির্বাচনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া: বিএনপি এখন চাপে এবং নেতারা পলাতক। এমন পরিস্থিতিতে অনেকেই রাজনৈতিক সংলাপ বা সমঝোতার কথা বলছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ সংলাপ বা সমঝোতার পথে গিয়ে বিএনপিকে সুযোগ দিতে চায় না। বরং নির্বাচনী রোডম্যাপ বাস্তবায়নের জন্য এগিয়ে যেতে চায়।

ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করে ফেলেছে। নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দিয়েছে যে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন করতেই হবে এবং নির্বাচনে কারা অংশ গ্রহণ করল না করল সেটি ভিন্ন বিষয়।

কাজেই বিএনপির নেতারা যখন পলাতক বা আত্মগোপনে সে সময় নির্বাচনীর আবহ দেশে তৈরি করা আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় লক্ষ্য।

তৃতীয়ত, আন্তর্জাতিক মহলের কাছে বিএনপি সম্পর্কে সুস্পষ্ট বার্তা দিতে চায় ক্ষমতাসীন সরকার: বিএনপি যে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। বিএনপি যে জ্বালাও-পোড়াও অগ্নিসংযোগ ছাড়া কোনো কিছু বোঝে না, এটি আন্তর্জাতিক মহলে প্রতিষ্ঠা করতে চায় আওয়ামী লীগ। এটি যদি প্রতিষ্ঠা করা হয়, তাহলে সে ক্ষেত্রে বিএনপি সম্পর্কে যাদের একটু সহানুভূতি বা ইতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছিল, তাদের মধ্যেও নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি হবে এবং তারা বিএনপির উপর অনাস্থা প্রকাশ করতে শুরু করবে।

চতুর্থত, জনগণকে সচেতন করা: জনগণকে সচেতন করার জন্য সরকার ইতিমধ্যে যে সমস্ত ঘটনাগুলো ঘটেছে, তার ভিডিও ফুটেজ, তার দায়দায়িত্ব কার কতটুকু ইত্যাদি; সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং মূলধারার গণমাধ্যমে প্রচার এবং প্রকাশ করছে। এর ফলে জনগণের মধ্যে বিএনপি সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি করা হবে এবং জনগণ বিএনপির থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে।

৫। প্রশাসন এবং আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে পাশে রাখা: ২৮ অক্টোবরের ঘটনায় পুলিশ বাহিনীর কাছে একটি সুস্পষ্ট বার্তা গেছে। বিএনপি যে কত নিষ্ঠুর নির্মম এবং তারা যে কী ধরনের প্রতিহিংসামূলক অবস্থানে যেতে পারে। তার প্রকাশ ঘটেছে ওই ঘটনায়। ফলে পুলিশের মধ্যে যারা মধ্যপন্থায় ছিলেন, যারা দোদুল্যমান ছিলেন, তারাও এখন মত পাল্টে ফেলেছেন। আর এই পরিস্থিতিকে কাজে লাগাতে চায় সরকার।

অর্থাৎ, বিএনপির পক্ষে কারও কোনো সহানুভূতি থাকবে না। বিএনপি মামলা এবং অন্যান্য চাপে থাকবে। এরকম একটি অনুকূল পরিস্থিতির মধ্যেই আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচন সম্পন্ন করে নির্বাচনের ফসল ঘরে তুলবে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭