ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

কর্মদক্ষতা কমাচ্ছে প্রযুক্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 21/03/2018


Thumbnail

উন্নত অর্থনীতির বিভিন্ন দেশে উৎপাদনশীলতায় অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। আর এই অচলাবস্থার কারণ হিসেবে বারবার প্রযুক্তিকেই দায়ী করা হচ্ছে। কিন্তু প্রাযুক্তিক উন্নয়নে তো দেশের উৎপাদন বৃদ্ধি ও সম্ভাব্য সকল সমৃদ্ধি হবার কথা। তাহলে প্রযুক্তির উন্নয়নে কোথায় সমস্যা সৃষ্টি হলো?

হার্ভার্ডের মার্টিন ফেল্ডস্টেইন অবশ্য প্রযুক্তির উন্নয়নে আশাবাদী। তিনি বলছেন, আমাদের ধারণার তুলনায় উৎপাদনশীলতার বৃদ্ধি বেশি হয়ে থাকে। কেননা আমরা মোটের উপরে উৎপাদন ও সেবার উন্নয়নের একটি চিত্র দেখতে পাই। এমনকি সম্পূর্ণ অবদানের হিসেবও আমরা করি না। এই সকল পদ্ধতিতে হিসেবের ভুলগুলো দিন দিন গুরুত্ব পাচ্ছে।

নর্থওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের রবার্ট গর্ডন আবার এই বিষয়ে নিরাশা ব্যক্ত করেছেন। তিনি তিনি বিদ্যুৎ ও যানবাহন আবিষ্কারের সঙ্গে নয়া তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির তুলনা করে বলেছেন, আজকের দিনের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির আবিষ্কারগুলো পূর্বের মতো বড় অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আনতে পারবে না।

কিন্তু এটাও সত্য যে নয়া তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উৎপাদনশীলতায় পূর্বের প্রযুক্তির তুলনায় কোন অংশেই কম অবদান রাখছে না। তবে সাম্প্রতিক বছর গুলোতে এরও কিছু নেতিবাচক প্রভাব উৎপাদনশীলতা ও মোট দেশজ উৎপাদনের উপর দেখা গেছে।

তারপরও এখন তথ্য-প্রযুক্তির যুগ। প্রতিনিয়ত প্রযুক্তির পরিবর্তন হচ্ছে। মানুষ নতুন সব প্রযুক্তির সঙ্গে বরাবরের মতোই খাপ খাইয়ে নিয়েছে। এতে করে প্রযুক্তির উপর নির্ভরশীলতাও বেড়েছে তেমনই মানুষের ঝুলিতে যোগ হচ্ছে নিত্য নতুন সব দক্ষতা। সেই সঙ্গে আচার ব্যবহারেও আসছে পরিবর্তন। আজকের দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তির সঙ্গে সঙ্গে নিরাপত্তার প্রশ্নটিও উঠছে। এখন স্প্যাম, ভাইরাস, সাইবার আক্রমণসহ বিভিন্ন ভাবে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান এমনকি ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

তথ্য প্রযুক্তি আমাদের দৈনন্দিন জীবনকেও প্রভাবিত করছে। এর মধ্যেই আমাদের কাজ ও শেখার দক্ষতা অন্তর্নিহিত। কর্মক্ষেত্রে ইমেইল, ভিডিও, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহজেই কর্মীদের অন্যমনস্ক করে দিতে পারে। সেই সঙ্গে কাজের সময়ও অপচয় হয় অনেক। এই সমস্যাটি বহুল আলোচিত।

স্মার্ট ফোনে আবদ্ধ হয়ে পড়েছে এই যুগের যুবকেরা। ভিডিও গেম থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে তাঁরা আসক্ত হয়ে পড়েছে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে কর্মক্ষেত্রে যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের সুযোগে ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সী কর্মীরা বেশি সময় অপচয় করে। এমনকি স্কুলের ক্লাস রুমে ল্যাপটপের ব্যবহারও শিক্ষার্থীদের শিক্ষা প্রক্রিয়া ধীর করে।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় হাইওয়ে ট্রাফিক প্রশাসন এক জরিপে বলেছে, ফোন ব্যবহার করার সময় গাড়ি চালানোর জন্য প্রতি বছর প্রচুর সড়ক দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়। এই সকল দুর্ঘটনায় কমপক্ষে তিন হাজার ৪৭৭ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে অন্তত ৩ লাখ ৯১ হাজার মানুষ। এই সকল দুর্ঘটনার মধ্যে টেক্সট-ড্রাইভিংকে সর্বাধিক দায়ী করা হয়।

প্রযুক্তির অপব্যবহারের জন্য জীবন যাত্রার মানও কমে যাচ্ছে। হ্যাঁ, প্রযুক্তির কল্যাণে আমরা নানা তথ্য ও সংবাদ দ্রুত পাই। সেই সঙ্গে নানা মিথ্যা সংবাদ, প্রতারণা ও প্রচারনামূলক তথ্যে আমরা প্রতিনিয়ত বিভ্রান্তও হচ্ছি। এগুলো প্রযুক্তির নেতিবাচক দিক। তবে প্রযুক্তির সুফল বলে শেষ করা যাবেনা। আমরা যে এত দূর এসেছি কিংবা মানব সভ্যতা এত দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে এর পেছনে আধুনিক তথ্য ও প্রযুক্তির বড় অবদান রয়েছে।


বাংলা ইনসাইডার/ডিজি/জেডএ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭