ইনসাইড বাংলাদেশ

এবার সংলাপের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের চাপ


প্রকাশ: 03/11/2023


Thumbnail

মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস গতকাল পররাষ্ট্র সচিব মাসুম বিন মোমেনের সঙ্গে একান্ত বৈঠক করেছেন। তাদের মধ্যে কি আলোচনা হয়েছে সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিবকে রাজনৈতিক সহিংসতা এবং নির্বাচনের আগে সংলাপের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। 

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান খুবই দৃঢ় এবং স্পষ্ট। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বারবার বলছে যে তারা বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায় এবং সকল পক্ষ যেন এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে সেটি নিশ্চিত করতে চায়। এ লক্ষ্যেই যুক্তরাষ্ট্র প্রচ্ছন্নভাবে বিএনপির আন্দোলনের প্রতি এক ধরনের সহানুভূতি দেখাচ্ছিল। কিন্তু ২৮ অক্টোবর বিএনপি যে তাণ্ডব করেছে তাতে মার্কিন দূতাবাসও হতবাক হয়ে গেছে। এটি অকল্পনীয় বলেও মনে করছেন দূতাবাসের অনেকে কর্মকর্তারা। এর ফলে বিএনপি অনেকটা ব্যাকফুটে চলে গেছে এবং সরকার সুবিধাজনক অবস্থায় গেছে। যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন সময় সহিংসতার ঘটনার ক্ষেত্রে কঠোর বিবৃতি দেয় এবং তারা প্রতিবাদ জানায়। কিন্তু ২৮ অক্টোবর রাজারবাগে পুলিশ হাসপাতালে হামলা কিংবা একজন পুলিশ কনস্টেবলকে নিমর্ম ভাবে পিটিয়ে হত্যার ব্যাপারে দূতাবাস কোনো সহানুভুতি জানায়নি। এমনকি সাম্প্রতিক সময়ে গণমাধ্যমের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে এমন বক্তব্য  দেওয়ার পর যখন ৩২ জন সাংবাদিক আহত হয়েছেন ওই দিনের ঘটনায় তাদের প্রতিও মার্কিন দূতাবাসের সহানুভূতির প্রকাশ দেখা যায়নি। বরং মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস নির্বাচনে কমিশনে ছুটে গেছেন এবং সেখানে তিনি ব্রিফিংয়ে শর্তহীন সংলাপের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মনে করে যে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনের তফসিলের আগেই রাজনৈতিক পক্ষগুলোর মধ্যে শর্তহীন সংলাপ দরকার। এই সংলাপের জন্য যেন সরকার আহ্বান জানায় এবং পদক্ষেপ গ্রহণ করে সেজন্যই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও তৎপর হয়েছে বলে জানা গেছে। শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও নয়, যুক্তরাজ্যও এখন সংলাপের জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল জাতীয় সংসদে সমাপনী অধিবেশনে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে জানোয়ারদের সঙ্গে কোনো সংলাপ নয়। আওয়ামী লীগ সংলাপের ব্যাপারে এখন কঠোর অবস্থানে গেছে। 

আওয়ামী লীগের বিভিন্ন দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, সংলাপের আগে বিএনপিকে ক্ষমা চাইতে হবে এবং এই আন্দোলনের কর্মসূচি প্রত্যাহার করতে হবে। অন্যদিকে বিএনপি বলছে যে এই মুহূর্তে সংলাপের কোনো পরিবেশ নাই। তাদের শীর্ষ নেতারা সবাই গ্রেপ্তার। এই পরিস্থিতিতে সংলাপ সম্ভব নয়। তবে  মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মনে করছে যে নির্বাচন যদি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে হয় তাহলে সংলাপের কোনো বিকল্প নেই।  এই জন্য যুক্তরাষ্ট্র উভয় পক্ষকে সংলাপের জন্য আগ্রহী করে তোলার চেষ্টা করছে এবং সংলাপ ছাড়া যদি নির্বাচনের তফসিল ঘোঘণা করা হয় সেক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ করতে পারে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলেছে, শেষ পর্যন্ত যদি বিএনপিকে ছাড়া আওয়ামী লীগ নির্বাচনের পথে যায় তাহলে সেই নির্বাচনের ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নেতিবাচক অবস্থান গ্রহণ করবে রাখবে এবং এই ধরনের নির্বাচনকে স্বীকৃতি দেওয়া থেকে বিরত থাকতে পারে। এমনকি কি ওই নির্বাচনের পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নানা রকম চাপ এবং নানা রকম নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে। একারণেই আগাম সতর্কবার্তা দেওয়ার জন্য পিটার ডি হাস বিভিন্ন মহলে কথা বলছেন বলে জানা গেছে। এখন দেখা যাক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাপে শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে সংলাপ হয় কি না।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭