ইনসাইড পলিটিক্স

মেজর (অব.) হাফিজের নেতৃত্বে আসছে আরেক বিএনপি?


প্রকাশ: 03/11/2023


Thumbnail

মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ একদা বিএনপির প্রভাবশালী নেতা ছিলেন। কিন্তু এখন অনেকটাই কোণঠাসা। সাম্প্রতিক সময়ে সরকারবিরোধী বড় ধরনের আন্দোলনেও তাকে সাইডলাইনে দেখা গেছে। আন্দোলনের ব্যাপারে তার নিজস্ব মতামত রয়েছে। তবে বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, মেজর হাফিজের সঙ্গে মূল সমস্যা লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার। মেজর হাফিজ বিএনপির সেই সমস্ত মুষ্টিমেয় নেতাদের একজন যিনি তারেক জিয়ার নেতৃত্বে পছন্দ করেন না এবং তারেক জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি ভুল পথে পরিচালিত হচ্ছে বলেও মনে করেন। 

২০১৮ সালের নির্বাচনের পর থেকে বিভিন্ন বিষয়ে বিএনপির নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে মেজর অবসরপ্রাপ্ত হাফিজের প্রকাশ্য মতদ্বৈধতা দেখা গেছে। যেমন- মেজর হাফিজ চেয়েছিলেন ২০১৮ নির্বাচনের পরে দলের শীর্ষ নেতাদের পদত্যাগ। কিন্তু সেই ঘটনাটি ঘটেনি তারেক জিয়ার হস্তক্ষেপের জন্য। তারপরও মেজর হাফিজকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়নি। তবে তিনি একাধিকবার কারণ দর্শানোর নোটিশ পেয়েছেন। কিন্তু বিএনপিতে এখনো তিনি জনপ্রিয়। বিশেষ করে মাঠ কর্মীদের মধ্যে তার বিপুল জনপ্রিয়তা রয়েছে। একজন সৎ রাজনীতিবিদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দলের ভেতরে এবং বাইরে তার খ্যাতি রয়েছে। বিশেষ করে কূটনৈতিক অঙ্গনে তাকে সম্মানের চোখে দেখা হয়। এলাকাতেও তার জনপ্রিয়তা প্রশ্নাতীত। মেজর হাফিজ সাম্প্রতিক সময় বিএনপির প্রকাশ্য রাজনীতিতে সরব না থাকলেও তিনি নেতাকর্মীদের সঙ্গে গভীর ভাবে যোগাযোগ করছেন। বিএনপি যে হঠাৎ করে ২৮ অক্টোবর সহিংসতার পথ বেছে নিল এবং সহিংসতার মাধ্যমে হরতাল এবং অবরোধের রাজনীতিতে ফিরে গেল এটিকে সমর্থন করছেন না মেজর হাফিজ এমনটিই জানিয়েছে বিএনপি এই নেতার নেতার ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো। বিএনপির এই পথকে তিনি ভুল পথ হিসেবেই মনে করেছেন। আর এ কারণেই বিএনপি মধ্যে যারা নির্বাচনে যেতে আগ্রহী তাদের সঙ্গে তিনি নতুন করে যোগাযোগ করছেন। 

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে মেজর হাফিজসহ বিএনপির একাধিক শীর্ষ নেতা মনে করেন যে এখন যদি নির্বাচনে যাওয়া যায় এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো যদি নির্বাচন কঠোরভাবে মনিটিরিং করেন তাহলে সরকারের পক্ষে নির্বাচনে কারচুপি করা অসম্ভব। বরং সে রকম একটি নির্বাচন হলে বিএনপির একটা ভালো সম্ভাবনা রয়েছে। কাজেই এই সহিংস আন্দোলনের কর্মসূচির ফলে বিএনপি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আন্দোলন করে নির্বাচন ঠেকানো যাবে না এবং শেষ পর্যন্ত আবার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসবে। তার চেয়ে বিএনপি যদি নির্বাচনকে আন্দোলনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করে অংশগ্রহণ করত তাহলে সেক্ষেত্রে ভালো হতো। এরকম মতামত নিয়ে এখন শুধু আলোচনাই নয় বরং একটা মেরুকরণ দৃশ্যমান হচ্ছে। মেজর হাফিজের নেতৃত্বে বিএনপিতে ভাঙ্গনের শব্দ শোনা যাচ্ছে। যে সমস্ত নেতারা নির্বাচনে আগ্রহী, এলাকায় যদের বিপুল জনপ্রিয়তা রয়েছে তারা যেকোনো সময় আলাদা একটা অবস্থান গ্রহণ করতে পারেন। বিশেষ করে এই হঠকারি রাজনীতি বিএনপিকে শেষ করে দেবে এমনটি মনে করছেন অনেকে। এরকম পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে সরকারকে নির্বাচনে চ্যালেঞ্জ জানানোটাই সঠিক বলে মনে করছেন তারা। আর এ কারণেই তাদের মধ্যে আলাপ আলোচনা বাড়ছে। ফলে আন্দোলনের যেকোনো পর্যায়ে বিএনপিতে যারা নির্বাচন করতে চান তাদের একটা পৃথক অবস্থান দৃশ্যমান হতে পারে যেখানে নেতৃত্ব দিতে পারেন বিএনপি নেতা মেজর অবসরপ্রাপ্ত হাফিজ।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭