ইনসাইড পলিটিক্স

নির্বাচনের আগে কূটনীতিকদের এড়িয়ে চলার নীতিতে আওয়ামী লীগ


প্রকাশ: 03/11/2023


Thumbnail

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ কারও কথা শুনবে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হুমকি বা পশ্চিমা দেশগুলোর নানারকম পরামর্শ উপদেশ ইত্যাদিকে পাশে রেখে আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচন করতে চায়। আর একারণেই নির্বাচনের আগে কূটনীতিকদেরকে এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, গত কয়েক দিনে একাধিক কূটনীতিক আওয়ামী লীগের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চেয়েছে। কিন্তু তাদেরকে সাক্ষাতের অনুমতি দেওয়া হয়নি। শুধু তাই নয়, একটি প্রভাবশালী দেশের একজন রাষ্ট্রদূত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সময় চেয়েও পাননি। আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, এখন কূটনীতিকদের সাথে দেনদরবার করার সময় নয়। এখন নির্বাচন করার সময়। 

আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য স্বীকার করেছেন, দলের হাইকমান্ড থেকে বার্তা এসেছে এখন কূটনীতিকদের এড়িয়ে চলতে হবে। তারা কি বলবে না বলবে ইত্যাদি মাথায় না নিয়ে শুধুমাত্র নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাবেন। একবার নির্বাচন নির্বাচন করে ফেলার পর পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য কূটনীতিকদের সাথে ১০০ বার বসা যাবে এমন অভিমত আওয়ামী লীগের। আওয়ামী লীগ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে নির্বাচনের যে তফসিল নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করবে সে তফসিল অনুযায়ী নির্বাচন করতে হবে। নির্বাচনে যদি বিদেশি পর্যবেক্ষক আসেন তবে তাদেরকে স্বাগত জানানো হবে এবং এই সমস্ত পর্যবেক্ষকরা যেন অবাধে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে পারে সেই ধরনের সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক মহলে এটিও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে যে নির্বাচন হবে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ। এই নির্বাচনে কোনো রকম কারচুপি বা অন্যকিছু প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। কিন্তু নির্বাচনের আগে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য কূটনীতিকদের তত্পরতাকেও নিরুৎসাহিত করা হবে এবং এ কারণেই আওয়ামী লীগ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা এবং নির্বাচন হওয়া পর্যন্ত খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছাড়া কূটনীতিকদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করব না। বিশেষ করে সংলাপ, রাজনীতি ইত্যাদি বিষয়ে তো নয়। যদি কোন মন্ত্রণালয়ের বিষয়ে কোনো কূটনৈতিক কথা বলতে আসেন সেক্ষেত্রে মন্ত্রণালয় বিষয়ে শুধু তারা আলোচনা করবেন। কিন্তু বাংলাদেশের নির্বাচন কিভাবে হবে, সংলাপ হবে কিনা বিরোধী দলের ওপর কি ধরনের দমন নীতি গ্রহণ করা হচ্ছে ইত্যাদি বিষয় নিয়ে কোন ধরনের আলাপ-আলোচনাকে উৎসাহিত করবে না সরকার। কূটনীতিকদের পরামর্শ বা কূটনীতিদের চাপকে মাথায় না নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। 

আওয়ামী লীগ সরকার মনে করছে যে নির্বাচনের আগে কূটনৈতিক চাপ আরও বাড়বে। বিশেষ করে বিএনপি যদি শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তাদের অবস্থানে অনড় থাকে তাহলে এই চাপ আরও বাড়বে এবং নানা রকম ভয়ভীতি দেখানো হবে। আওয়ামী লীগ মনে করে যে কূটনীতিকদের যদি তারা একটু গুরুত্ব না দেয়, তাদের কথা যদি তাদের দূতাবাসে আ তাদের আমন্ত্রণে নৈশভোজ বা চা চক্রে মিলিত না হয় তাহলে কূটনীতিকরা আওয়ামী লীগের বার্তা বুঝবেন। আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করেন যে একটি স্বাধীন দেশের নির্বাচন এই দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তাই নির্বাচনের আগে কূটনীতিকদের সাথে আলোপ-আলোচনা বা তাদের কাছে নমনীয় থাকার কোনো কারণ নেই। যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ‍ও নিরপেক্ষ হয় তাহলে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। তবে কূটনীতিকরা নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছে এবং সামনে আরও করবে। এখন দেখার বিষয় এই চেষ্টাকে এড়িয়ে আওয়ামী লীগ কিভাবে কূটনীতিকদের চাপমুক্ত থেকে একটি নির্বাচনের আয়োজন করতে পারে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭