কালার ইনসাইড

অভিনেত্রী হিমুর মৃত্যুর ঘটনায় বয়ফ্রেন্ড গ্রেফতার


প্রকাশ: 04/11/2023


Thumbnail

অভিনেত্রী হোমায়রা নুসরাত হিমু গত দুই থেকে তিন বছর ধরে অনলাইনে জুয়া খেলার অ্যাপ ‘বিগো লাইভ’-এ আসক্ত হয়ে প্রায় ২১ লাখ টাকা খুইয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত  হয়ে পড়েছিলেন। এসব নিয়ে বিভিন্ন সময় উরফি জিয়া ও হিমুর মধ্যে প্রায়ই কথা কাটাকাটি ও মনোমালিন্য হতো। বৃহস্পতিবার রাজধানীর উত্তরায় নিজ বাসায় অভিনেত্রী হুমায়রা নুসরাত হিমুর মৃত্যুর ঘটনায় তার ‘প্রেমিক’ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিনকে গ্রেফতার করার পর সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানায় র‌্যাব।  

শুক্রবার সন্ধ্যায় করা ওই সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, হিমু অনলাইন জুয়া খেলায় আসক্ত ছিলেন। তার জুয়া খেলার জন্য উরফি জিয়া গত চার মাসে অনেক টাকা দিয়েছে । সেই টাকা ও বিয়ে করা নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে হিমু আত্মহত্যা করে।

উরফি জিয়া র‌্যাবকে জানান, গত বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে তিনি হিমুর উত্তরার বাসায় যান। পরে অনলাইন জুয়াসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে হিমুর সঙ্গে তার ঝগড়া হয়। একপর্যায় হিমু ভাঙচুর করেন। বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে রুমের বাইরে থেকে একটি মই এনে রুমে ঢুকে পড়েন হিমু। রুমের সিলিং ফ্যানে আগে থেকেই বেঁধে রাখা প্লাস্টিকের রশিতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করবেন বলে হিমু উরফিকে জানান।

আগেও ৩/৪ বার হিমু আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছেন বলে এবারও তার কথাকে উরফি জিয়া পাত্তা দেননি, কিন্তু কিছুক্ষণ পর তিনি দেখতে পান হিমু সত্যি সত্যি গলায় ফাঁস নিয়েছেন। তখন হিমুকে নামানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। এসময় তিনি পাশের রুমে থাকা হিমুর মেকআপ আর্টিস্ট মিহিরকে ডেকে আনেন। পরে মিহির রান্নাঘর থেকে একটি বঁটি এনে রশি কেটে তাকে নিচে নামান।

উরফি, বাসার দারোয়ান ও মিহির মিলে হিমুকে বাসা থেকে রাজধানীর উত্তরার একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে আল মঈন জানান, ২০১৪ সালে হিমুর খালাতো বোনের সঙ্গে রুফির বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের কিছু দিনের মধ্যে পারিবারিক সমস্যার কারণে তাদের বিচ্ছেদ হয়। আত্মীয়তার সুবাদে রুফির সঙ্গে হিমুর পরিচয় হয়। খালাতো বোনের সঙ্গে রুফির বিচ্ছেদ হলেও তার সঙ্গে হিমুর নিয়মিত যোগাযোগ ছিল।

র‌্যাবকে রুফি জানান, বিচ্ছেদের পরে তিনি আরেকজনকে বিয়ে করলেও হিমুর সঙ্গে বিভিন্নভাবে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। প্রায় চার মাস আগে তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়। একপর্যায়ে তিনি হিমুকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিয়মিত তার বাসায় যাতায়াত শুরু করেন। তবে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া ও বাগবিতণ্ডা হতো।

র‌্যাবের বর্ণনায় জানা যায়, উরফি জিয়ার সঙ্গে ২০১২ সালে হিমুর পরিচয় হয়। তখন হিমু একাকিত্ব বোধ করে। এরপরই জিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ট হয়। 

র‌্যাব জানায়, রুফি ‘ও’ লেভেল শেষ করে টেক্সটাইল কেমিক্যালের ব্যবসা করতেন। ঘটনার দিন হিমুকে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করার পরে তিনি হিমুর ব্যবহৃত দুটি আইফোন ও গাড়ি নিয়ে দ্রুত হাসপাতাল থেকে চলে যান। পরে হিমুর গাড়ি তার উত্তরার বাসার পার্কিংয়ে রেখে দেন তিনি। এরপর মোবাইল ফোন দুটি বিক্রির উদ্দেশ্যে রাজধানীর বংশাল এলাকায় পালিয়ে যান। সেখান থেকে তাকে আজ গ্রেফতার করা হয়। তবে কেন হিমুর ফোন তিনি বিক্রির চেষ্টা করেছিল তা রুফি জানাননি। আইনি প্রক্রিয়া অনুযায়ী রুফিকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে র‌্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭