ইনসাইড পলিটিক্স

চার ইস্যুতে সরকারকে ঘায়েল করতে চায় বিএনপি-জামায়াত


প্রকাশ: 04/11/2023


Thumbnail

বিএনপি-জামায়াত এখন এক দফা দাবিতে আন্দোলন করছে। উদ্দেশ্যহীন অবরোধ চলছে একের পর এক। আগামী কাল থেকে আবার ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ শুরু হতে যাচ্ছে। বিএনপি নেতারাও জানে যে এই অবরোধের মাধ্যমে সরকারকে চাপে ফেলা বা সরকারের পতন কোনটাই সম্ভব নয়। অবশ্য সরকারকে চাপে ফেলার জন্য আন্দোলন তাদের একটি বাইরের দৃশ্যমান অংশ মাত্র। ভিতরে ভিতরে তারা নানামুখী কৌশল গ্রহণ করছে সরকারকে চাপে ফেলার জন্য এবং সরকারকে বিপর্যস্ত করার জন্য। সরকার পতনের লক্ষ্যে বিএনপি-জামায়াত জোট ৪ টি কৌশল গ্রহণ করেছে। যে ৪ টি কৌশল আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয় বরং যে কৌশলগুলো বাস্তবায়ন হলে সরকার রীতিমতো চাপে পড়বে এবং নির্বাচনের আগে বড় ধরনের সংকট সৃষ্টি হবে দেশে। এই ৪ টি কৌশলের মধ্যে রয়েছে-

১. গার্মেন্টস অসন্তোষ: বিএনপি-জামায়াত, চৈনিক বাম জুনায়েদ সাকির পরিকল্পনায় গার্মেন্টসে অসন্তোষ সৃষ্টির এক নিবিড় কৌশল বাস্তবায়ন করে চলেছে। গত কয়েকদিন ধরেই গার্মেন্টসগুলোতে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে, নানা রকম গুজব ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। শ্রমিক মারা গেছে—এমন কথা বলেও গার্মেন্টস শ্রমিকদেরকে উত্তেজিত করা হচ্ছে। অনেক জায়গায় ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। বিএনপি-জামায়াত জোট এটি পরিকল্পিতভাবে করছে। নির্বাচনের আগে যদি গার্মেন্টসে অসন্তোষ তৈরি করা যায় তাহলে দুই ধরনের লাভ হবে। প্রথমত, এর ফলে সরকারের বিরুদ্ধে গার্মেন্টস শ্রমিকদের মাঠে নামানো সম্ভব হবে। একটা গণঅসন্তোষ তৈরি করার ক্ষেত্রে এটি একটি পটভূমির হিসেবে কাজ করতে পারে। দ্বিতীয়তঃ এর ফলে তৈরি পোশাক খাত যা আমাদের প্রধান রপ্তানির উৎস তাতে একটা ছেদ পড়বে। পোশাক খাতে রপ্তানি কমে যাবে। ফলে বৈদেশিক মুদ্রার আয় কমবে। এটি সরকারের ওপর একটি বড় ধরনের অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি করবে। তাই গার্মেন্টসে অসন্তোষ সৃষ্টি বিএনপি-জামায়াত এবং চৈনিক বামদের একটি চক্রান্তের অংশ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

২. প্রবাসী-আয় কমানো: প্রবাসী-আয় কমানোর লক্ষ্যে জামায়াতের কর্মকাণ্ড দীর্ঘদিন ধরে আছে। তারা মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে বিশেষ করে মাইকিং করে, সভা করে এবং বিভিন্ন কায়দায় শ্রমিকদেরকে বৈধ পথে টাকা পাঠাতে নিরুৎসাহিত করছে। বরং হুন্ডি ব্যবসার মাধ্যমে প্রবাসী ভাইদেরকে দেশে তার স্বজনদের কাছে টাকা পাঠানোর জন্য রীতিমতো ক্যাম্পেইন চলছে। এর ফলে গত কয়েক মাসে উদ্বেগজনকভাবে প্রবাসী-আয় কমেছে। যদিও অক্টোবরের সেই ধারা কিছুটা হলেও ফিরে এসেছে। তবে সামনে দিনগুলোতে বিএনপি-জামায়াতের এ সংক্রান্ত তাদের নেটওয়ার্ক আরও জোরদার করেছে বলে জানা গেছে। এর ফলে একদিকে যেমন বৈধ পথে রেমিট্যান্স আসছে না ফলে সরকার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দ্বিতীয়তঃ হুন্ডি ব্যবসা করে জামায়াত-বিএনপির অনেক নেতা বিপুলভাবে আর্থিক লাভবান হচ্ছে। এই কৌশলের ফলে সরকার বড় ধরনের অর্থনৈতিক সংকটে পড়বে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।

৩. দ্রব্যমূল্য অস্থিতিশীল করে তোলা: বাজারে সিন্ডিকেট তৈরি করা হয়েছে এবং সিন্ডিকেটের মাধ্যমে জিনিসপত্রের দাম অস্থিতিশীল করা হয়েছে। এটিও বিএনপি-জামায়াতের একটি কৌশল। খাতুনগঞ্জ সহ বিভিন্ন পাইকারি বাজারগুলোর নিয়ন্ত্রক হলো বিএনপি-জামায়ত। আর তারা যখন এটার নিয়ন্ত্রক তখন তারা বিভিন্ন কারসাজি করে জিনিসপত্রের দাম বাড়াচ্ছে। এর ফলে মানুষের ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকারের ওপর। এই কৌশলটি গত কিছুদিন ধরে বিএনপি-জামায়াত জোট সফলভাবে প্রয়োগ করেছে। বাজারে এখন অস্থির পরিস্থিতি। আলু, পেঁয়াজ ডিম সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের চরম উচ্চমূল্য। যা পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলেছে।

৪. গুজব: বিএনপি-জামায়াতের সরকারকে অস্থিতিশীল করার ক্ষেত্রে একটি বড় অস্ত্র হলো গুজব। বিভিন্ন সময়ে বিএনপি-জামায়াত জোট নানারকম গুজব সৃষ্টি করে সরকারকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা করছিল। এখন সে ধারা আরও বেগবান হয়েছে। বিশেষ করে ২৮ অক্টোবরের সহিংসতা এবং অন্যান্য ঘটনা নিয়ে বিএনপি-জামায়াত জোট যেভাবে গুজব ছড়াচ্ছে তা বিস্ময়কর। এই গুজব ছড়িয়ে তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করার একটি মিশনের নীরব বাস্তবায়ন করছে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। 

এই চার কৌশলে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারকে চাপে ফেলতে চাইছে। এখন দেখার বিষয় যে শেষ পর্যন্ত এসব নিয়ে সব পরিস্থিতি সরকার কিভাবে মোকাবেলা করে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭