ইনসাইড পলিটিক্স

টানা কর্মসূচি নিয়ে বিএনপি কর্মীদের ক্ষোভ-হতাশা


প্রকাশ: 06/11/2023


Thumbnail

নানা কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বিএনপি। ২৮ অক্টোবরের তাণ্ডবের পর ২৯ অক্টোবর হরতাল ডেকেছিল বিএনপি। এরপর একদিনের বিরতি দিয়ে তিন দিনের অবরোধ ডাকা হয়েছিল। শুক্র, শনি ছুটি থাকার পর আবার ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ এখন চলছে। আগামীকাল ৭ নম্বর উপলক্ষে বিএনপি কর্মসূচি বন্ধ রাখবে। বুধ, বৃহস্পতি আবার ৪৮ ঘণ্টা অবরোধ কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই সমস্ত কর্মসূচি পালন করে বিএনপির কি লাভ হচ্ছে এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে এখন প্রশ্ন উঠেছে। ক্ষোভ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে বিএনপির তৃণমূল থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মধ্যে। কারণ এই সমস্ত অবরোধের ফলে বিএনপির বহুমাত্রিক ক্ষতি হচ্ছে বলেই মনে করছেন বিএনপি নেতারা। 

প্রথমত, অবরোধে যে সমস্ত গাড়ি ভাঙচুর হচ্ছে, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটছে তা জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বিএনপি সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি করা হচ্ছে। বিএনপি সহিংস রাজনীতিতে বিশ্বাস করে, বিএনপি জ্বালাও-পোড়াও করে সরকারি দলের এই বক্তব্য আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পাচ্ছে, প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। এর ফলে বিএনপি সম্পর্কে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মহলের যে ইতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছিল তা আস্তে আস্তে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও সাধারণ মানুষ এই ধরনের অবরোধ-হরতালের ফলে কষ্ট পাচ্ছে। তাদের তারা ঝুঁকিতে থাকছে, তাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে, অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এর জন্য সরকারের চেয়ে তারা বিএনপিকে দায়ী করছে।

দ্বিতীয়ত, এ ধরনের অবরোধ কর্মসূচির ফলে বিএনপি নেতাকর্মীদের ধরপাকড় করা সরকারের জন্য সহজ হচ্ছে। সরকার এর ফলে বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক ভাবে কোনো চাপ অনুভব করছে না। বরং সাধারণ মানুষ সরকারের পদক্ষেপকে স্বাগত জানাচ্ছে। তারা মনে করছে সরকার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। আন্তর্জাতিক মহলও এ নিয়ে উচ্চবাচ্য করতে পারছে না। এর ফলে বিএনপি তৃণমূল থেকে নিঃশেষিত হয়ে যাচ্ছে। 

তৃতীয়ত, নির্বাচন প্রতিরোধের ক্ষমতা হারাচ্ছে বিএনপি। বিএনপি নেতাকর্মীরা মনে করছেন যে এ ধরনের টানা অবরোধের ফলে শক্তি ক্ষয় হচ্ছে, অধিকাংশ নেতাকর্মীরা গ্রেপ্তারে আছেন অথবা পলাতক অবস্থায় আছেন। এটি যদি চলতে থাকে এবং বিএনপি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন বর্জন করে তাহলে তাতে কোন লাভ হবে না। কারণ নির্বাচন প্রতিরোধ করার মতো শক্তি এবং ক্ষমতা বিএনপির থাকবে না। আর তাই আগাম আন্দোলন বিএনপির জন্য বুমেরাং হয়ে যাবে বলে অনেকে মনে করছেন।

চতুর্থত, বিএনপিকে ছাড়া নির্বাচনের পক্ষে যুক্তি। বিএনপি একটি সন্ত্রাসী সংগঠন, বিএনপি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বিশ্বাস করে না এরকম একটি বক্তব্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে আওয়ামী লীগ সফলভাবে প্রচার করছে। ফলে বিএনপিকে ছাড়া নির্বাচন অর্থপূর্ণ হবে না এমনটি কদিন আগে যারা মনে করছেন তারাও এখন তাদের অবস্থান থেকে সরে এসেছেন। বরং তারা মনে করছেন যে এ ধরনের কর্মসূচির ফলে বিএনপি প্রমাণ করছে যে তারা নির্বাচনে যেতে আগ্রহী নয়। তারা নির্বাচনের পথে বাধা সৃষ্টি করছে। 

এই সমস্ত কার্যকলাপের ফলে বিএনপির মধ্যে কর্মীদের মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে। বিএনপি কর্মীদের অনেকে বলছেন তারা পলাতক জীবনযাপন করছেন। এর বাড়িতে ওর বাড়িতে থাকতেন কিন্তু এভাবে বেশিদিন থাকা সম্ভব নয়। যারা গ্রেপ্তার হচ্ছেন তাদেরও খোঁজখবর নেতারা নিচ্ছেন না। ফলে সামগ্রিকভাবে কর্মীদের মধ্যে এ ধরনের হতাশা তৈরি হচ্ছে, অনেকে ক্ষুব্ধ হয়েছেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭