ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপিকে বাঁচাতে সুর পাল্টেচ্ছে সুশীলরা


প্রকাশ: 06/11/2023


Thumbnail

বাংলাদেশের কিছু সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা কদিন আগেও বিএনপির সাথে সুর মিলিয়ে কথা বলছিলেন। বিশেষ করে সরকার বিএনপির ওপর নির্যাতন নিপীড়ন করছে, বিএনপির মত প্রকাশের স্বাধীনতা দেওয়া হচ্ছে না, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কোনো বিকল্প নেই, বিএনপির শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে সরকার বাধা দিচ্ছে ইত্যাদি নানা অভিযোগের পাহাড় তুলেছিলেন। শুধুমাত্র যে এ সমস্ত অভিযোগ নিয়ে তারা টেলিভিশন টকশো, সংবাদপত্রের কলাম লিখতেন, তা না। এমনকি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও তারা এ নিয়ে নানা রকম নালিশ করেছেন৷ বিশেষ করে দূতাবাসগুলোতে ককটেল পার্টিতে সুশীলরা বিএনপির উকিল হিসাবেই পরিগণিত হচ্ছিলেন কিন্তু ২৮ অক্টোবর বিএনপির আত্মঘাতী আন্দোলন সবকিছু তছনছ করে দিয়েছে। সুশীলরা হতবিহ্বল বিভ্রান্ত হয়েছেন। তারা এক সপ্তাহ মোটামুটি নীরবতা পালন করেছেন। এখন তারা অন্য সুরে কথা বলতে শুরু করেছেন। 

সুশীলদের যারা ২৮ অক্টোবরের আগে বলছিলেন যে বিএনপির সংলাপে যেয়ে কি করবে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি ছাড়া সংলাপ অর্থহীন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব না ইত্যাদি তারা এখন শর্তহীন সংলাপের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। তারা সরকারের ওপর দায় চাপানোর জন্য নানারকম অজুহাত করছে। যে সুশীলরা কনস্টেবল আমিরুলের নির্মম হত্যাকাণ্ডের নিন্দা করেনি, যে সুশীলরা প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনার ব্যাপারে কোন রকম উদ্বেগ জানায়নি, যারা হাসপাতালে হামলার ঘটনাকেও উপেক্ষা করেছে তারাই এখন বিএনপির নেতাদের গ্রেপ্তার নিয়ে আর্তনাদ করছে, কান্নাকাটি করছে। বিএনপি নেতাদেরকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিয়ে ইনিয়ে-বিনিয়ে সরকারকে সমালোচনা করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু এই সমস্ত সুশীলা যদি পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল ইসলামের বর্বর হামলার নিন্দা জানাতেন বা হাসপাতালে হামলার বর্বরতার নিন্দা করতেন, তাহলে পরে তাদের বক্তব্যের কিছুটা বিশ্বাসযোগ্যতা থাকত। কিন্তু বাস্তবতা হল যে তারা এসব ঘটনায় উপেক্ষা করেছেন। বিএনপির প্রতি এক ধরনের সহানুভূতি দেখিয়েছেন। কাজেই সুশীলদের ব্যাপারে অনেকের মধ্যে নানা রকম প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে রাজনৈতিক সন্ত্রাস সহিংসতার বিরুদ্ধে তাদের অবস্থানের দ্বিচারিতা জনগণের মধ্যে নানারকম প্রশ্ন তুলেছে। 

এই সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা কিছুদিন আগে সংলাপ বিরোধী ছিলেন। তারা বলেছিলেন যে সংলাপের পরিবেশ তৈরি করতে হবে। সরকারকে কিছুটা ছাড় দিতে হবে। সেই সুশীলরাই এখন শর্তহীন সংলাপের কথা বলছে। তাহলে কি বিএনপিকে বাঁচানোর এজেন্ডা নিয়েছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। আমাদের সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা সবসময় এরকম পক্ষপাতমূলক আচরণ করেন। বিশেষ করে যারা বিভিন্ন সময়ে স্বাধীনতাবিরোধী অপ চক্রের দোসর হিসাবে পরিচিত ছিলেন, তারাই সুযোগ পেলেই আওয়ামী লীগের সমালোচনা করা, আওয়ামী লীগকে প্রশ্নবিদ্ধ করা এ ধরনের কাজে নিয়োজিত থাকেন। এখন যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আলোচনার মাঠে নেই, তখন সুশীলরা নতুন ইস্যুকে সামনে এনেছে। সেটি হলো সংলাপের ইস্যু। কিন্তু বিএনপি কি সংলাপের জন্য প্রস্তুত? বিএনপি কী ২৮ অক্টোবরের তাণ্ডবের জন্য অনুতপ্ত? তারা কি সেজন্য জন্য ক্ষমা চেয়েছে কিংবা বিএনপি কি মনে করে যে তারা এই ঘটনাগুলো ভুল করেছে? এখনও বিএনপির পক্ষ থেকে যে ধরনের অবরোধ এবং জ্বালাও পোড়াও কর্মসূচি করছে, সুশীলরা সে ব্যাপারেও নীরব কেন? এই প্রশ্নটি ক্রমশ জনমনে বড় হয়ে উঠছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭