ইনসাইড পলিটিক্স

রিজভী-মঈন খানকে নিয়ে বিএনপিতে ধূম্রজাল


প্রকাশ: 06/11/2023


Thumbnail

বিএনপিতে একের পর এক নেতারা গ্রেপ্তার হচ্ছেন। তাদের বিরুদ্ধে ২৮ অক্টোবর থেকে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে নাশকতা, সন্ত্রাস, সহিংসতার অভিযোগ উঠেছে। এই সমস্ত ঘটনার সঙ্গে তারা হয় প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত অথবা তার হুকুমদাতা হিসেবে এজাহারভুক্ত আসামি হয়েছেন। এই সমস্ত মামলার এজাহারভুক্ত আসামি হয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি এখন গোপন আস্তানা থেকে অনলাইনে বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। কিন্তু সরকার জানে যে তার অবস্থান কোথায়? তারপরও সরকার তাকে গ্রেপ্তার করছে না। একই রকম অবস্থা হয়েছে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খানের। তিনি বিভিন্ন জনসভায় এর আগে উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়েছিলেন। এখন তিনি তার বাসভবনে অবস্থান করছেন এবং সেখানে বিভিন্ন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে তিনি নিয়মিত বৈঠক করে যাচ্ছেন। কূটনীতিকদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন। তাতেও এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়নি। আর এই গ্রেপ্তার না করা নিয়ে বিএনপির মধ্যে ক্ষোভ অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। 

বিএনপির কর্মীরা মনে করছেন যে, তারা সরকারের সাথে গোপন যোগাযোগ রাখছেন। এ কারণেই তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে না। মঈন খানের ব্যাপারে বিএনপি নেতারা আগে থেকেই সন্দিহান ছিলেন। তিনি বিভিন্ন দূতাবাসের আস্থাভাজন ব্যক্তি, কূটনৈতিক অঙ্গনে তার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে৷ তা ছাড়া তিনি বিভিন্ন রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রেখে চলেন। এই কারণেই হয়তো তাকে কৌশলগত কারণে গ্রেপ্তার করছে না। কিন্তু সরকারের সঙ্গে তিনি দরকষাকষি করছেন এমন গুঞ্জনও বিএনপির মধ্যে আছে। কিন্তু রুহুল কবির রিজভীকে নিয়ে বিএনপির মধ্যে অনেক বেশি চাপা কথাবার্তা শুরু হয়ে গেছে৷ বিশেষ করে রুহুল কবির রিজভীকে কেন সরকার আশ্রয় প্রশ্রয় দিচ্ছে, তাহলে কি সরকারের মধ্যে রুহুল কবির রিজভীকে নিয়ে কোন গোপন এজেন্ডা রয়েছে? এমন বক্তব্য বিএনপির অনেক নেতাদের। 

বিভিন্ন সময় দেখা যায় যে রুহুল কবির রিজভী ব্যাপারে সরকারের আলাদা সহানুভূতির জায়গা। তাহলে কি রুহুল কবির রিজভীকে পাদপ্রদীপে আনতে চায় সরকার? এই ব্যাপারে সরকারের কি আলাদা পরিকল্পনা রয়েছে বা রুহুল কবির রিজভী কি সরকারের কাছে বিএনপির গোপন তথ্য ফাঁস করে দেন? এরকম একটি গোপন আঁতাত তাদের মধ্যে রয়েছে? অতীতেও বিএনপির বিভিন্ন নেতাকে দেখা গেছে যে, বাইরে লড়াকু এবং সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধাং দেহী। কিন্তু ভেতরে ভেতরে সরকারের সঙ্গে গোপন আঁতাত করে করে রাখছেন। বিভিন্ন আন্দোলনে বিএনপি যে ব্যর্থ হয়েছে তার একটি বড় কারণ হিসেবে বিএনপির অনেক নেতাকর্মী এটি মনে করেন৷ বিশেষ করে ২০১৮ নির্বাচনের আগে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করা হয়েছিল সেই ঐক্যফ্রন্টের যারা প্রকাশ্যে সরকারের বিপুল সমালোচনা করতেন, তারাই গোপনে গোপনে সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন এবং সরকারের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা নিতেন। এখন রুহুল কবির রিজভী বা ড. মঈন খান সেরকম চক্রের অংশ কি না তা নিয়ে বিএনপিতে নানামুখী আলোচনা চলছে। 

বিএনপির বিভিন্ন নেতারা বলছেন যে, সকলে যখন পলাতক তখন রুহুল কবির রিজভী কেমন করে এত নিরাপদ এবং নিশ্চিন্ত আছেন। তবে বিএনপির অনেক নেতাই মনে করেন, এটা সরকারের কৌশলগত অবস্থান। রুহুল কবির রিজভী বা মঈন খানকে গ্রেপ্তার না করে সরকার বিএনপির মধ্যে এক ধরনের বিভ্রান্ত করতে চাইছে। তবে সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, কোন নেতা ধরে সরকার কাউকে গ্রেপ্তার করছে না। বরং যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের প্রাথমিক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে তাদেরকে গ্রেপ্তারের আওতায় আনা হচ্ছে। তবে সরকার যাদেরকে গ্রেপ্তার করছে না তাদের ব্যাপারে বিএনপিতে সন্দেহ, অবিশ্বাস ক্রমশ বাড়ছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭