ইনসাইড বাংলাদেশ

আরেকটি এক-এগারো আনার ষড়যন্ত্র চলছে?


প্রকাশ: 07/11/2023


Thumbnail

বিএনপি আগামীকাল থেকে আবার ৪৮ ঘণ্টার টানা অবরোধ দিয়েছে। বিএনপির শীর্ষ নেতারা বলছে, আন্দোলনে বিজয়ী না হওয়া পর্যন্ত তাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। বিএনপি যখন এ ধরনের কর্মসূচি ঘোষণা করছে তখন রাজনীতিতে নানা রকম ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষ করে সুশীল সমাজের ভূমিকা, পশ্চিমা দেশগুলোর ভূমিকা ইত্যাদি নানামুখী তৎপরতা ক্রমশ দৃশ্যমান হচ্ছে। আর অন্যদিকে সরকার যেকোন ভাবে সংবিধান সমুন্নত রাখা এবং সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে নির্বাচন করার প্রত্যয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে দেশে আরেকটি এক-এগারো আনার ষড়যন্ত্র চলছে কিনা, তা নিয়ে বিভিন্নমুখী আলাপ আলোচনা চলছে।

২৮ অক্টোবর বিএনপি ঢাকা শহরে নারকীয় তাণ্ডব তৈরি করে। একজন পুলিশ কনস্টেবল আমিরুলকে নির্মমভাবে মধ্যযুগীয় কায়দায় সাপের মতো পিটিয়ে হত্যা করা হয়। বিএনপির উশৃঙ্খল কর্মীরা প্রধান বিচারপতির বাসভবন, রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে হামলা করে। এ ধরনের ঘটনায় দেশের জনগণ স্তম্ভিত হয়ে গেছে। এর ফলে বিএনপি গত কিছুদিন ধরে আন্দোলন করে যে জনআস্থা কিছুটা অর্জন করেছিল, সেই আস্থা পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। এই রকম একটি অবস্থায় বিএনপির আন্দোলন অনেকটাই মুখ থুবড়ে পড়েছে। তারা যে কর্মসূচি দিচ্ছে সেটা এক ধরনের গোয়ার্তুমি বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তবে বিভিন্ন সূত্র বলছে, কারো ইশারায় ইঙ্গিতে বিএনপি এই কর্মসূচিগুলো দিচ্ছে এবং এই কর্মসূচিতে পরিকল্পিত ভাবে বিভিন্ন ধরনের নাশকতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। বাসে অগ্নিসংযোগ দেওয়া, যানবাহনে ভাঙচুর ইত্যাদি করে বিএনপি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছে। কোনরকম আন্দোলন দৃশ্যমান না থাকা সত্ত্বেও আন্দোলন নিয়ে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা তৈরি হচ্ছে জনমনে। 

বিএনপির এই কর্মসূচির পেছনে কারো ইন্ধন রয়েছে বলেও অনেকে মনে করছে। বিশেষ করে কিছু কিছু বিদেশি দূতাবাস যারা এতদিন ধরে অহিংস আন্দোলনের কথা বলে আসছিল, সন্ত্রাস সহিংসতার পথ পরিহার করার জন্য বলেছিল, তারা এক ধরনের মৌনব্রত অবলম্বন করছে, যা ইঙ্গিতপূর্ণ। অন্যদিকে যে সুশীল সমাজ ২৮ অক্টোবরের ঘটনায় হতবিহ্বল হয়ে পড়েছিল, বিএনপির ভুলে তারাই যেন বিব্রত হয়েছিল, তারা আবার নতুন করে মুখ খুলতে শুরু করেছে। ইনিয়ে বিনিয়ে নানা রকম কথাবার্তা বলছে।

রাজনীতিতে একটু উস্কানি তৈরি করা একটি সহিংস পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য কোনো কোনো মহল কাজ করছে। একই সময়ে গার্মেন্টসে উত্তেজনা সৃষ্টি করা হয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে নির্বাচন বানচালের জন্য নীরবে কোন প্রক্রিয়ার বাস্তবায়ন চলছে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করছেন, আগামী নির্বাচন পর্যন্ত সময়ে দেশে নানামুখী ষড়যন্ত্র এবং চক্রান্তে চলবে। বিএনপি বুঝতে পারছে যে তাদের আন্দোলনে জনসমর্থন নেই। জনগণ এসব চাচ্ছে না। তারপরও তারা জোর করে আন্দোলন করছে কেন? নিশ্চয়ই তাদেরকে কেউ সাহস দিচ্ছে, মদত দিচ্ছে। অন্যদিকে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরাও এখন নীরবতা অবলম্বন করছেন কেন? এ নিয়ে কি তাদের কোনও উদ্দেশ্য আছে? সুশীল সমাজ এখন অন্যরকম সুরে কথা বলছে। সবকিছু মিলিয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের জন্য একটি মহল মাঠে নেমেছে। তারা আরেকটি এক-এগারো আনতে চায় কিনা সে নিয়েও নানা রকমের প্রশ্ন দেখা দিচ্ছে। 

এক-এগারো আনার ক্ষেত্রে রাজনীতির মাঠে যে উত্তাপ দরকার সেই উত্তাপ বিএনপি এখনও সৃষ্টি করতে পারেনি। বিক্ষিপ্ত ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ করে তারা দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছে বটে। কিন্তু এ দিয়ে কী সরকারকে চাপে ফেলা যাবে? তাদের আরেকটি এক-এগারো আনার স্বপ্ন কি বাস্তবায়িত হবে? এই প্রশ্নটি এখন সাধারণ মানুষের।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭