ইনসাইড পলিটিক্স

আন্দোলন এবং নেতৃত্ব নিয়ে লেজেগোবরে বিএনপি


প্রকাশ: 07/11/2023


Thumbnail

গতকাল বিএনপির পক্ষ থেকে আগামীকাল এবং বৃহস্পতিবার ৪৮ ঘণ্টা টানা অবরোধের ডাক দেওয়া হয়েছে৷ কিন্তু এর আগে যে দুই দফা অবরোধ ডাকা হয়েছিল সেই দুই দফায় অবরোধে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী ছাড়া আর কাউকেই মাঠে দেখা যায়নি। বিএনপির সিনিয়র নেতাদের মধ্যে এক ধরনের নিষ্ক্রিয়তা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অনেকে আবার পলাতক জীবনযাপন করছেন। যাদের বিরুদ্ধে মামলা নেই তারাও পালিয়ে থাকছেন অজ্ঞাত কারণে। যার ফলে আন্দোলনের মাঠ নেতৃত্বশূন্য। একজন লন্ডন থেকে বিভিন্ন রকম নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং সেই নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়নের জন্য কর্মীদেরকে কঠোরভাবে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। কর্মীরা রাস্তায় যেয়ে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হচ্ছেন, অনেকে পলাতক জীবনযাপন করছেন। কিন্তু তাদের পাশে বিএনপির কোনো নেতা নেই। নেতৃত্বহীন আন্দোলনে এখন বিএনপির অবস্থা অনেকটাই লেজেগোবরে হয়ে গেছে। এরকম পরিস্থিতিতে বিএনপি কতদিন আন্দোলন চালিয়ে যেতে পারবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। 

বিএনপির অনেকেই মনে করছেন যে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া সম্ভবত মনে করেছিলেন যে এরকম অবরোধ রাখলেই সরকার তাদেরকে সংলাপে ডাকবে, আলোচনায় ডাকবে। ফলে তারা তখন সরকারকে চাপ দেবে অথবা অন্য রকম একটি ভাবনাও তার মধ্যে থাকতে পারে। তাহল এ রকম অবরোধ-হরতালের ফলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশের ব্যাপারে নেতিবাচক মনোভাব গ্রহণ করবে এবং সরকারকে সমঝোতার জন্য চাপ সৃষ্টি করবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো বিএনপি আন্দোলনের নামে যা করছে তা সম্পূর্ণ ভাবে সন্ত্রাসী তৎপরতা, নাশকতা। এটি কোন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নয়। আর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড না হওয়ার কারণেই আন্তর্জাতিক মহল থেকে বিএনপির আন্দোলনের প্রতি সহানুভূতি ও সমর্থন জানানো হচ্ছে না। যদিও ইউরোপীয় ইউনিয়নের একজন উর্ধ্বতন বিএনপি নেতাদের গ্রেপ্তারের ওপর ব্যাপারে উদ্বেগ জানিয়েছেন। কিন্তু বিএনপির গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ইত্যাদি কেউ সমর্থন জানাতে পারছেন না৷ সরকারও জনগণের জানমাল রক্ষার জন্য কঠোর অবস্থানে গেছে। যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনের কঠোর প্রয়োগ করা হচ্ছে এবং সরকার এ ব্যাপারে শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি গ্রহণ করে করেছে। এর ফলে আবার ২০১৪ এর মতো একটি আন্দোলনের পরিণতি বিএনপির জন্য অপেক্ষা করছে বলে কেউ কেউ মনে করেন। 

২০১৪ সালে যেমন বিএনপি অবরোধ ডেকেছিল, কিন্তু সেই অবরোধ আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হওয়ার আগেই মানুষজন স্বাভাবিক জীবনে ফিরে গেছে। বিএনপি এখন সেই একই পথে পুনরাবৃত্তি করছে বা তার চেয়েও একটি শোচনীয় একটি অবস্থা বিএনপির হতে যাচ্ছে বলেও অনেকে মনে করছেন। তবে বিএনপির মধ্যে এখন ক্ষোভ অসন্তোষ দানা বেঁধে উঠেছে। বিশেষ করে বিএনপির কর্মীরা নেতাদের নিস্ক্রিয়তা, নির্লিপ্ততায় এবং নেতৃত্বহীনতায় ক্রমশ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে৷ কর্মীরা কোন দিক নির্দেশনা পাচ্ছেন না। বিএনপির কর্মসূচি কারা ঘোষণা করেছে এবং এই কর্মসূচি পালনের কৌশল কি—এ নিয়ে দলের কর্মীরা একেবারেই অন্ধকারে। আর এরকম অবস্থায় বিএনপির মধ্যে এক ধরনের হতাশা তৈরি হচ্ছে৷ তবে বিভিন্ন সূত্র বলছে যে, দলটির একটি বড় অংশ এই আন্দোলন থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিয়ে ক্রমশ নির্বাচনমুখী হচ্ছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭