ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

মার্কিন অস্ত্রবোঝাই জাহাজ আটকে দিল ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভকারীরা


প্রকাশ: 07/11/2023


Thumbnail

সারা বিশ্বে প্রতিদিনিই গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবিতে লাখ লাখ মানুষ বিক্ষোভ-সমাবেশ করছেন। বিশ্ববাসী, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহ গাজায় যুদ্ধবিরতি দাবি তুললেও তা আমলে নিচ্ছে না ইসরায়েল। এদিকে হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধে তেলআবিবকে অস্ত্র ও অর্থ দিয়ে সহায়তা করছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে যুক্তরাষ্ট্রের এমন প্রচেষ্টা রুখে দিতে এবার এক দুঃসাহসিক কাজ করেছেন ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভকারীরা।

ফিলিস্তিনের পক্ষে গতকাল সোমবার থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের টাকোমা বন্দরে বিক্ষোভ চালাচ্ছে একদল মার্কিন বিক্ষোভকারীরা। একটি মার্কিন যুদ্ধজাহাজ আটকে দিতে তাঁদের এই বিক্ষোভ। তাঁদের ধারনা, যুদ্ধাস্ত্র বোঝাই করে একটি যুদ্ধজাহাজ যুক্তরাষ্ট্র থেকে ইসরায়েল যাচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের টাকোমা বন্দরে মার্কিন সামরিক জাহাজ ভিড়লে খবর ছড়িয়ে পড়ে যে এই জাহাজে করে ইসরায়েলে অস্ত্রসহায়তা পাঠাবে বাইডেন প্রশাসন। এরপরই দুই শতাধিক ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভকারী টাকোমা বন্দরে ঢুকে বিক্ষোভ করেন। এমনকি ইসরায়েলকে দেওয়া অস্ত্র সহায়তা আটকে দিতে বিক্ষোভকারীদের কয়েক জন জাহাজের ওপরে উঠে পড়েন।

বন্দরটিতে বিক্ষোভকারীদের আশঙ্কা, এই যুদ্ধজাহাজে বোঝাই করে নেওয়া অস্ত্র ইসরায়েল চলমান সংঘাতে গাজার নিরীহ মানুষের বিরুদ্ধে ব্যবহার করবে। ৩১ দিন ধরে ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় প্রায় ৬ হাজার নারী–শিশুসহ ১০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। এ অস্ত্র পৌছালে আরও ফিলিস্তিনিকে হত্যা করতে সাহায্য করবে। 

আরব রিসোর্সেস অরগানাইজিং সেন্টারের কেস ম্যানেজার ও কমিউনিটি আউটরিচ সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করছেন ওয়াসিম হেজ। সংগঠনটি গতকাল টাকোমা বন্দরে প্রতিবাদ বিক্ষোভের আয়োজন করেছে। 

সংগঠনটির গণমাধ্যমবিষয়ক সমন্বয়ক ওয়াসিম হেজ বলেছেন, মার্কিন সরকার এসব অস্ত্র ইসরায়েলে পাঠাচ্ছে, আমরা এই সতর্কবার্তা দিতে এখানে এসেছি। আমরা মানুষকে জানাতে চাই যে গাজার ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর ইসরায়েলি গণহত্যায় সহায়তা করতে যুক্তরাষ্ট্র সরকার আমাদের বন্দর ব্যবহার করে চলেছে। 

হেজ বলেন একটি গোপন সূত্রে এআরওসি জানতে পেরেছে, এই জাহাজে অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম বোঝাই করা হবে। এখান থেকে জাহাজটি ইসরায়েল যাবে। এই ইসরায়েলই গাজায় অনবরত বোমা বর্ষণ করে যাচ্ছে।

তবে ওই সামরিক জাহাজটি আসলে অস্ত্র পরিবহন করছিল কি না বা সেটি আদৌ ইসরায়েলে যাচ্ছিল কি না, তা জানাতে পারেনি নিউইয়র্ক পোস্ট।

সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ তাৎক্ষণিকভাবে যাচাই করতে পারেনি। তবে পেন্টাগনের মুখপাত্র জেফ জারগেনসন কাতারভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেলকে এক ই-মেইল বার্তায় বলেন, আসলে জাহাজটি মার্কিন সামরিক পণ্য পরিবহনে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। জারগেনসন আর কোনো তথ্য জানাতে অস্বীকৃতি জানান।

তিনি লেখেন, প্রতিরক্ষা দপ্তরের নানা কর্মকাণ্ডের গোপনীয়তার খাতিরে  সামরিক পণ্য পরিবহনে ব্যবহৃত জাহাজ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া যাবে না। 

অবশ্য বিক্ষোভকারীদের বাধা সত্ত্বেও কয়েক ঘণ্টা পর ওয়াশিংটনের টাকোমা বন্দরের উদ্দেশে ছেড়ে যায় জাহাজটি।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কর্নেল ব্রায়ন জে ম্যাকগ্যারি বলেছেন, জাহাজটি মার্কিন নৌবাহিনীর। এটি মার্কিন সামরিক বাহিনীর মালামাল পরিবহন করে। তবে নিরাপত্তাজনিত কারণে এই জাহাজ ঠিক কোথায় যাবে, তা জানাননি ম্যাকগ্যারি।

প্রতিবাদকারীরা বৃষ্টির মধ্যে টাকোমা বন্দরে অপেক্ষমাণ কেপ ওরলান্ডো জাহাজকে কেন্দ্র করে রেইনকোট ও জ্যাকেট পরে এবং ছাতা নিয়ে কর্মসূচিতে অংশ নেন। তারা বন্দরমুখী সড়কে লাইন ধরে অবস্থান নেন।

এ সময় তাঁদের কাছে থাকা বড় ব্যানার দেখা যায় নানা ধরনের স্লোগান লেখা। বিক্ষোভকারীরা ফিলিস্তিনি পতাকা নাড়িয়ে ‘গাজাকে রক্ষা করো’, ‘ফিলিস্তিনকে মুক্ত করো’, ‘ইসরায়েলের অপরাধের জন্য আর কোনো কানাকড়ি সহায়তা নয়’, ‘ইসরায়েলকে কোনো সহায়তা নয়’সহ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।




প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭