ইনসাইড বাংলাদেশ

বিএনপি ছাড়া নির্বাচন কি মানবে পশ্চিমারা?


প্রকাশ: 07/11/2023


Thumbnail

এখন যেভাবে নির্বাচনের প্রক্রিয়া গুলো এগোচ্ছে তাতে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাচ্ছে যে বিএনপিকে ছাড়াই একটি নির্বাচনের পথে হাঁটছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ ইতোমধ্যে তাদের কঠোর অবস্থান স্পষ্ট করেছে। আওয়ামী লীগের অবস্থান হল যে বিএনপি ২৮ অক্টোবর যা করেছে তা ক্ষমার অযোগ্য। এটি কোন রাজনৈতিক দলের কাজ হতে পারে না। আর এই কারণেই এই রকম একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে, সন্ত্রাসের কোন সংগঠনের সঙ্গে আওয়ামী লীগ কোন ধরনের সংলাপে যাবে না। বরং সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সব প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে। নির্বাচন কমিশনও ৪৪ টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করেছে। সেখানে অধিকাংশ রাজনৈতিক দল নির্বাচন কমিশনের ডাকে সাড়া দিয়ে বৈঠকে অংশগ্রহণ করেছে। সেই বৈঠকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল কিছু সুপারিশ দিয়েছে। নির্বাচন কমিশন এই সুপারিশগুলোর ব্যাপারে কাজ করবে বলে জানা গেছে। ৯ নভেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে সাক্ষাৎ করবেন এবং এখানে তিনি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল নিয়ে বিস্তারিত কথা বলবেন। 

ধারণা করা হচ্ছে, জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এখন যে  পরিস্থিতি বিরাজ করছে তাতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। আর বিএনপি যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে তাহলে এই নির্বাচন নিয়ে কি প্রতিক্রিয়া হবে—সেটি এখন রাজনীতিতে প্রধান আলোচনার বিষয়। পশ্চিমা দেশগুলো বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কি এরকম নির্বাচনকে স্বীকৃতি দেবে? এই নির্বাচন কি বৈধ হিসেবে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বিবেচিত হবে?—এটি হল এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। কারণ ২০১৪ এর মতো করে যদি একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে সেই নির্বাচন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাবে না বলেও ধারণা করা হচ্ছে। আর এটাই বিএনপির শক্তির প্রধান উৎস। তারা যদি এভাবে কর্মসূচি দিতেই থাকে তাহলে এক পর্যায়ে পশ্চিমা দেশগুলো সরকারকে নির্বাচন করার ক্ষেত্রে বাধা দিতে পারে বলেও অনেকে মনে করছেন। 

তবে সরকারের দায়িত্বশীল নেতারা বলছেন যে সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ এবং সরকার আশাবাদী যে তারা সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন করতে পারবে এবং নির্বাচন কমিশনকে এ ব্যাপারে সহযোগিতা দেবে। সরকার এখন বিএনপি ছাড়াই অন্যান্য প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো যেন নির্বাচনে আসে সে লক্ষ্যে কাজ করছে। আওয়ামী লীগ ছাড়াও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি সহ আরও কিছু রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করবে। এই সকল রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করলেই নির্বাচনে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ ভোটার উপস্থিতি হবে বলে আওয়ামী লীগ আশা করছে। বিএনপি থাকা না থাকা মূখ্য বিষয় নয়, মুখ্য বিষয় হল জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটারদের অংশগ্রহণ। আওয়ামী লীগের এখন প্রধান মনোযোগ ভোটারদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। 

আগামী ৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক ডেকেছেন। ওই বৈঠকে তিনি আওয়ামী লীগের নির্বাচনী রোডম্যাপ আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরকম অবস্থায় বিএনপিকে ছাড়াই একটি নির্বাচনী অভিযাত্রা দেশে শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে যে, বিএনপি ছাড়া নির্বাচনকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা দেশগুলো কতটুকু মানবে? অবশ্য ভারত বাংলাদেশ সরকারের অবস্থানের সাথে সহমত পোষণ করেছে। ভারতও মনে করে যে একটি রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করল কি করল না সেটা বড় কথা নয়। বড় কথা হল যে নির্বাচন হয় অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হচ্ছে কি না এবং ভোটাররা স্বাধীন ভাবে তাদের মতামত প্রয়োগ করছে কি না।

অনেকে মনে করছেন যে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচন পর্যন্ত সময়টা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনই নির্বাচন কেমন হয় সেটার ওপর নির্ভর করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর মনোভাব। যদি একটি ভালো গ্রহণযোগ্য স্বচ্ছ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় তাহলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হয়তো শেষ পর্যন্ত এই নির্বাচনের ব্যাপারে অনাগ্রহী থাকলেও তারা এই নির্বাচনকে বৈধতা দিতে আপত্তি করবে না। কারণ ৪০ শতাংশ বা ৫০ শতাংশ ভোটার উপস্থিতি থাকলে একটি নির্বাচনকে স্বীকৃতি দানে অস্বীকৃতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জানাবে কিভাবে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭