ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপি এখনো আশায় আছে যুক্তরাষ্ট্র কিছু একটা করবে


প্রকাশ: 07/11/2023


Thumbnail

২৮ অক্টোবরের তাণ্ডবের পর বিএনপির অনেকেই বিভ্রান্ত, অনেকেই বিচলিত, অনেকেই দিকভ্রান্ত। কিন্তু তারপরও লন্ডন থেকে নির্দেশনা আসছে টানা কর্মসূচি দিতে হবে। সেই কর্মসূচি বিএনপি না পালন করার মতো করেই পালন করছে। কর্মসূচির ডাক দিয়ে নেতাকর্মীরা যে যার ঘরে অবস্থান করছেন অথবা আত্মগোপনে থাকছেন। মাঠে খুব একটা পিকেটিং দেখা যাচ্ছে না। কিছু ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে গাড়ি ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটছে। এ রকম কর্মসূচির মানে কী? কেন এই ধরনের কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে?—এ নিয়ে যখন রাজনীতিতে আলোচনা তখন বিএনপির নেতারা এখনো আশার প্রদীপ জ্বালিয়ে রেখেছেন। তবে নিজেদের শক্তিতে না, এই আন্দোলন তীব্র হবে, বেগবান হবে, জনগণ আন্দোলনের সমর্থনে রাস্তায় নেমে আসবে—এমন কোন চিন্তাভাবনা থেকে বিএনপি আশাবাদী না। বিএনপির আশাবাদের প্রধান ভরসাস্থল হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। 

বিএনপির বিভিন্ন নেতারা এখনো আশা করছেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শেষ পর্যন্ত হয়ত সরকারকে একতরফা নির্বাচন করতে দিবে না এবং এ রকম নির্বাচন করলে কঠোর অবস্থানে যাবে। ইতোমধ্যে ভিসা নীতি দেওয়া হয়েছে, যার প্রয়োগ শুরু হচ্ছে সেই ভিসা নীতি আরও কঠোর ভাবে প্রয়োগ করা হবে। ভিসা নীতি ছাড়াও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা এবং নানা রকম নিষেধাজ্ঞা করে সরকারকে বেকায়দায় ফেলা হবে। ফলে নির্বাচন করলেই সরকার যে চাপমুক্ত হবে এমনটি নয়। বরং বিএনপির অনেক নেতারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কখন কিভাবে সরকারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবে সেই প্রহর গুনেই সময় কাটাছে। বিএনপির এখন একমাত্র ভরসাস্থল হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা দেশগুলো। তারা মনে করছে যে কিছু একটা ঘটবে, কিছু একটা ঘটনা হবে। কিন্তু নিজেদের আন্দোলন কতটুকু শক্তিশালী হবে বা নিজেরা এই আন্দোলনে জনগণকে কিভাবে সম্পৃক্ত করবে সে ব্যাপারে তাদের কোন ভাবনা নেই। তাদের কোন পরিকল্পনাও নেই৷ কারণ যে কর্মসূচিগুলো দেওয়া হচ্ছে সেই কর্মসূচিগুলো সরাসরি জনগণের বিরুদ্ধে যাচ্ছে এবং বিএনপি এখন জনগণকেই প্রতিপক্ষ বানিয়েছে।

বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সাথে কথা বলে দেখা গেছে, তারা মনে করছেন এছাড়া তাদের কাছে কোনো বিকল্প নেই। কারণ শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে নির্বাচন ঠেকানো যাবে না। এ ধরনের সহিংস তৎপরতা করলে আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যাবে এবং সেখান থেকে হয়ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নরা সরকারকে নির্বাচন বন্ধের জন্য একটি চাপ দেবে। 

ইতোমধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শর্তহীন সংলাপের ওপর গুরুত্ব দিয়েছে। সামনের দিনগুলোতে যখন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ব্যাপারে তাদের অবস্থান আরও স্পষ্ট করবে বলে তারা মনে করছেন। আর এই ধরনের মনোভাব যদি সৃষ্টি হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তাহলে সরকারের জন্য নির্বাচন করা কঠিন হবে। বিএনপির নেতারা দুই ভাগে তাদের আন্দোলনকে ভাগ করছেন। প্রথম ভাগ হল নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর্যন্ত। আর দ্বিতীয় হল নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর তারা একতরফা নির্বাচন প্রতিহতের জন্য কর্মসূচি গ্রহণ করবে এবং সেই কর্মসূচি অসহযোগ আন্দোলনের মতো হবে বলে তারা মনে করছে এবং তারা দেশে একটি অচলাবস্থা আতঙ্ক এবং সহিংস পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়, যাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো হস্তক্ষেপ করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া বিএনপির আন্দোলনে আর কোন আশাবাদের যুক্তি নেই।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭