ইনসাইড বাংলাদেশ

মনোনয়ন যুদ্ধে আমলাদের হামলা


প্রকাশ: 08/11/2023


Thumbnail

নির্বাচন আইন অনুযায়ী একজন সরকারি কর্মকর্তা অবসর গ্রহণের তিন বছর পর্যন্ত নির্বাচন করতে পারবেন না। ১৯৭২ সালের গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ২০০৭ সালে সংশোধন করেছিল তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার। সেই সংশোধিত আইন অনুযায়ী এখন সরকারি আমলারা অবসরে যাবার তিন বছর পর্যন্ত নির্বাচনের অযোগ্য। কিন্তু সেই আদেশকে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। গতকাল সেই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি শুরু হচ্ছে। আজ এই শুনানির কথা থাকলেও তা হয়নি। আগামীকাল শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। এই আবেদনে সাবেক আমলারা এবং এখনও চাকরির শেষ মেয়াদে থাকা আমলারা প্রত্যক্ষ পরোক্ষ ভাবে যুক্ত আছেন। তারা বলছেন, এটা সংবিধানের লঙ্ঘন। 

একজন আমলা যখন অবসরে যান তখন তিনি আর দশজন নাগরিকের মতোই সাধারণ নাগরিক। এক্ষেত্রে তাকে তিন বছর নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করাটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ নিয়ে আদালত কি রায় দেয় সেটি নিয়ে বিভিন্ন মহলে নানা জল্পনা কল্পনা চলছে। তবে এই রায় যাই হোক না কেন, এবার নির্বাচনের মনোনয়ন যুদ্ধে আমলাদের হামলা লক্ষ্য করবার মতো। আমলারা যেন মনোনয়ন লাভের জন্য হামলে পড়ছেন। এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত হিসাবে দেখা যায় যে অবসরপ্রাপ্ত অন্তত ৫০ জন সাবেক সচিব আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে চান। আর এ লক্ষ্যে তারা এখন নির্বাচনের জন্য এলাকায় দৌঁড়ে বেড়াচ্ছেন। সরকারি দলের বিভিন্ন মহলে দেন দরবার-তদবির করছেন। শেষ পর্যন্ত তাদের ক’জন মনোনয়ন পাবেন এটি দেখার বিষয়। তবে সচিবদের পাশাপাশি প্রশাসনের সাবেক অতিরিক্ত সচিব, এমনকি যুগ্ম সচিব পর্যায়ে অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদেরও অনেকে মনোনয়নের জন্য নিজ নিজ এলাকায় দৌড়ঝাঁপ করতে দেখা গেছে। সব মিলিয়ে একশ জনের বেশি সাবেক আমলা এখন নির্বাচনের মাঠে আছে যারা আওয়ামী লীগের জন্য টিকিট চান। এর বাইরে এমন কিছু আমলা আছেন যাদের চাকরিতে অবসরের পর তিন বছর অতিক্রম হয়নি। এরাও এখন নির্বাচনের যুদ্ধে আছেন। তারাও আশা করছেন যে, শেষ পর্যন্ত যদি গণপ্রতিনিধি আদেশ ১৯৭২ এর সংশ্লিষ্ট ধারা বাতিল হয়ে যায়, তাহলে হয়ত তারা নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন লাভ করলেও করতে পারেন। এই নিয়ে তারা দৌড়ঝাঁপ করার জন্য বেশ মুখিয়ে আছেন। 

যে সমস্ত সাবেক আমলাদের অবসরের পর তিন বছর হয়নি, তাদেরও অনেকেই নির্বাচনে আগ্রহী এবং তাদের নির্বাচনী এলাকায় তৎপর লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এদের সংখ্যা ২০ জনের কম নয়৷ এদের মধ্যে অধিকাংশই আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত এবং নানা ভাবে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত৷ তবে এদের কেউ কেউ চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে আছেন। কারও কারও চাকরির মেয়াদ এখনও শেষ হয়নি। 

শুধু প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারাই নয়, সরকারি বিভিন্ন পদে থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে একাধিক ব্যক্তি আছেন, যারা আগামী নির্বাচনে আগ্রহী। এদের মধ্যে সরকারি চিকিৎসক ছিলেন এমন ব্যক্তিরা যেমন রয়েছেন, তেমনি প্রকৌশলী, কৃষিবিদ সহ বিভিন্ন পেশার সরকারের কর্মকর্তারাও রয়েছেন। সব মিলিয়ে বিভিন্ন স্তরে সরকারি কর্মকর্তাদের পাঁচ শতাধিক ব্যক্তি আছেন এখন নির্বাচনের মাঠে। যারা শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের টিকিটেই নির্বাচন করতে চান। এছাড়াও অনেকে বিএনপি, এমনকি জাতীয় পার্টি থেকেও মনোনয়ন প্রত্যাশী এবং সেখানে তারা যোগাযোগ করছেন। 

সাবেক আমলাদের কেউ কেউ আওয়ামী লীগের সুবিধা না করতে পেরে জাতীয় পার্টিতে গেছেন। ইদানীং বিএনপিপন্থী কিছু আমলাদের মধ্যে তৃণমূল বিএনপির প্রতি ঝোঁক বেড়েছে। তারাও আগামী নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী হতে আগ্রহী। তৃণমূল বিএনপি যেহেতু বলেছেন তারা তিনশ আসনে প্রার্থী দেবেন, এই জন্যই তাদের আগ্রহ বেড়েছে। সবকিছু মিলিয়ে এবার মনোনয়ন যুদ্ধে আমলারা বেশ বড় রকমের হামলা চালাচ্ছে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭