ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগের কতিপয় নেতা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত?


প্রকাশ: 09/11/2023


Thumbnail

আওয়ামী লীগের মধ্যে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। যখন বিএনপি নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করছে। অন্যদিকে সরকার যে কোনও মূল্যে সংবিধান সমুন্নত রাখা এবং সাংবিধানিক বিধি অনুযায়ী নির্বাচনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পক্ষে দৃঢ় অবস্থান রেখেছে। ঠিক সেই সময়ে আওয়ামী লীগের ভিতর থেকে একটি চক্র আবার ষড়যন্ত্র করছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। তবে এই ষড়যন্ত্রের আকার, প্রকৃতি, অবয়ব সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।

কিছু কিছু আওয়ামি লীগের নেতাদের গোপন তৎপরতা নিয়ে দলের মধ্যে ক্ষোভ এবং অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর দুজন প্রভাবশালী, আওয়ামী লীগের অন্তত তিন জন সংসদ সদস্যের নাম এসেছে। এই সমস্ত ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আওয়ামী লীগের একজন এমপি মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছেন। বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে এক এগারোতে যারা সংস্কারপন্থি হিসেবে পরিচিত ছিলেন, তাদেরই একটি অংশ এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত।

এই ষড়যন্ত্র থেকে তারা কী লক্ষ্য অর্জন করতে চান তা এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট নয়। তবে বিভিন্ন সূত্র বলছে যে, পশ্চিমা দেশগুলো আওয়ামী লীগের মধ্যে যারা সংবেদনশীল, সহনীয় এবং যুক্তিবাদী তাদের সাথে একটি সুসম্পর্ক তৈরি করতে চাইছে। যে সম্পর্কের সূত্র ধরে তারা একটি রাজনৈতিক সমঝোতার পথে দেশকে নিয়ে যেতে চায়। এ কারণে আওয়ামী লীগের ওই সমস্ত নেতাদের সঙ্গে বিভিন্ন মহল এখন যোগাযোগ করছে। তবে আওয়ামী লীগের যারা এই ধরনের গোপন শলা পরামর্শে যুক্ত তারা কেউই দলে প্রভাবশালী নন। কিন্তু এটি নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে এক ধরনের চাপা ক্ষোভ এবং অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

উল্লেখ্য যে, ২০০৬ সালে নির্বাচন নিয়ে যখন এক অচলাবস্থা তৈরি হয়েছিল তখনও আওয়ামী লীগের এই নেতাদের মধ্যে কেউ কেউ বিভিন্ন মহলের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল এবং বিভিন্ন মহলের পরামর্শে এবং প্ররোচনায় আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ছিল এবং তাদের কারণেই সেই সময় এক-এগারো এসেছিল বলে অনেকে মনে করে। বিভিন্ন রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলছেন, ২০০৭ সালে এক-এগারো আসার পেছনে তৎকালীন ক্ষমতাসীন বিএনপির কিছু নেতা যেমন জড়িত ছিল, তেমনই আওয়ামী লীগের কিছু নেতাও জড়িত ছিল। তারা মনে করেছিল যে, নির্বাচনের চেয়ে বরং একটি অনির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতায় নিয়ে আসা নিরাপদ। সেই সময় আওয়ামী লীগ একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার চেয়েছিল। তবে আওয়ামী লীগ সভাপতি সুস্পষ্টভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সীমারেখা ৯০ দিনের মধ্যে সীমিত রাখার পক্ষে ছিলেন এবং যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে অস্বীকৃতি জানায়, তখন শেখ হাসিনাই প্রথম তার প্রতিবাদ করেছিলেন।

এবার উল্টোচিত্র হয়েছে। বিএনপি একটি দীর্ঘমেয়াদি তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায় এবং তারা ক্ষমতায় আসতে চায় না। বরং তারা মনে করে যে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে হটানোই তাদের প্রাথমিক বিজয়। এ লক্ষ্যে তারা এক দফা আন্দোলন করছে। তাদেরকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তা হল রাজপথ উত্যক্ত করা, একটি বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সৃষ্টি করে আন্তর্জাতিক দৃষ্টি আকর্ষণ করা। কিন্তু সেই দৃষ্টি আকর্ষণ করার ক্ষেত্রে বিএনপির আন্দোলন যতটা জোরালো হওয়া উচিত ছিল ঠিক ততটা জোরালো হয়নি। বরং এই আন্দোলন মুখ থুবড়ে পড়ে গেছে। আর এ কারণে একটি মহল এখন আওয়ামী লীগের মধ্যে বিভেদ এবং বিভ্রান্তির সৃষ্টির চেষ্টা করছে।

তবে বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, আওয়ামী লীগের যে সমস্ত নেতারা বিভিন্নভাবে যোগাযোগ করছেন তাদের প্রধান লক্ষ্য হল একটি সংলাপের পথ প্রশস্ত করা। আওয়ামী লীগের মধ্যে যারা বিভিন্ন দায়িত্বে আছেন, তারা যেন সংলাপের জন্য দলকে এগিয়ে নিয়ে যায় এবং দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এ ব্যাপারে পরামর্শ দেয়। সে লক্ষ্যেই তারা কথা বলছেন। তবে এই কথা বলা দলের হাইকমান্ডের সম্মতিতে নয় বলেই জানাচ্ছেন আওয়ামী লীগের একটি বড় অংশ।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭