ইনসাইড পলিটিক্স

ফখরুল জানালেন, আমি পুতুল


প্রকাশ: 09/11/2023


Thumbnail

গ্রেফতার হওয়ার পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছিল। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে ফখরুল বলেছেন, আমি পুতুল। আমি আসলে বিএনপির কোনো কিছুই জানি না। কোনও সিদ্ধান্তই নেই না। সব সিদ্ধান্ত আসছে লন্ডন থেকে। আমি শুধু প্রতিপালন করি মাত্র। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এটাও স্বীকার করেছেন যে, ২৮ অক্টোবর বিএনপির কর্মীরা যে নাশকতা ও তাণ্ডব করেছে সেটি তার নিয়ন্ত্রণে ছিল না এবং তিনি এই সম্পর্কে জানতেনও না। কর্মীদের দিয়ে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক দিয়ে এসব করিয়েছেন। গোয়েন্দাদের কাছে জিজ্ঞাসাবাদে মির্জা ফখরুল এরকম তথ্য দিয়েছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং বিএনপির আরও দুই নেতাকে মুখোমুখি দাড় করানো হয়েছিল। মুখোমুখি অবস্থায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন যে, আমার ক্ষমতা আমীর খসরু মাহমুদের চেয়েও কম। তিনি মহাসচিব হিসাবে আছেন এটুকুই যথেষ্ট। এই বয়সে অন্য কোন দলে যাওয়া বা নিজেকে গুটিয়ে নেয়া তার পক্ষে সম্ভব নয়। আর এ কারণেই অনেক কিছুই তাকে হজম করতে হয়।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন যে, ২৮ অক্টোবরে আমাদের মূল কর্মসূচি ছিল একটি সুন্দর সমাবেশ করা এবং এই সমাবেশের মাধ্যমে সরকারকে একটি ৪৮ ঘণ্টা বা ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয়া। এই আল্টিমেটামের মধ্যে যদি তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে না নেয়, তাহলে ঢাকা অভিমুখে পদযাত্রা কর্মসূচি করার পরিকল্পনা ছিল তাদের। কিন্তু কীভাবে কী হলো সে সম্পর্কে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কিছুই জানেন না।

তবে ফখরুল স্বীকার করেছেন যে তারেকের নিজস্ব বাহিনী রয়েছে। তারেক দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের চেয়েও তৃণমূলের কর্মীদের সঙ্গে বেশি সময় ব্যয় করেন। তাদের সঙ্গে কথা বলেন। শুধু তাই নয়, তাদের তিনি বিশ্বাসও করেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, বিএনপির কোন নেতা কী করেন, কোথায় যায় ইত্যাদির ব্যাপারে তারেকের এজেন্টরা সব সময় খোঁজ খবর রাখে। তারেক সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের পিছনে গুপ্তচর লাগিয়ে রেখেছে। যে গুপ্তচরদের কাজ হলো নেতারা কী করছেন না করছেন সে সম্পর্কে নিয়মিত খোঁজখবর তারেক জিয়াকে দেয়া।

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বীকার করেছেন যে ২৮ অক্টোবর যে ঘটনাটি ঘটেছে সেখানে তারেক জিয়ার লোকজন ছিল এবং তারাই প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা এবং পুলিশের উপর আক্রমণের ঘটনা ঘটিয়েছে। এটি কেন্দ্রীয় নির্দেশনা ছিলো না। তারেক জিয়া সরাসরি এই সহিংসতা এবং হামলা পরিচালনা করেছে বলেও জানা গেছে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন যে এই ক্যাডার বাহিনী তার নিয়ন্ত্রণে নেই। তারেক জিয়াই এটি নিয়ন্ত্রণ করেন এবং পরিচালিত করে। তারেক জিয়া যখন যে নির্দেশনা দেয় সেই নির্দেশনাই তারা পালন করে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রাজনীতি সম্পর্কে নিজের হতাশার কথা বলেছেন। বার্ধক্যের কারণে তিনি রাজনীতি থেকে অবসররে যেতে চান এমন বক্তব্যও রেখেছেন। তবে তিনি স্বীকার করেছেন যে

বিএনপির মহাসচিব হিসেবে তিনি নিয়মিতভাবে তারেক জিয়ার তাদের সাথে কথা বলেন এবং তারেক জিয়ার মতামতের বাইরে যাওয়ার ক্ষমতা তার নেই। কারণ তারেক জিয়ার মতামতের বাইরে গেলে নিশ্চিতভাবে তিনি বিএনপির কোন পদে থাকতে পারবেন না। তারেক জিয়া সঠিক না ভুল করছে। এই প্রশ্নের উত্তরে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সময়ই বলে দেবে।

তবে বিএনপির অন্য দুই নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সব বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করেননি। বরং ওই জিজ্ঞাসাবাদেই বিএনপির আরেক নেতার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঝগড়া শুরু হয় এবং মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকেও এর দায় বহন করতে হবে বলেও ওই নেতা সাফ জানিয়ে দেন।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭