ইনসাইড পলিটিক্স

নির্বাচনকালীন সরকারে থাকতে চায় জাতীয় পার্টি


প্রকাশ: 09/11/2023


Thumbnail

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। প্রধান নির্বাচন কমিশনার আজ মহামান্য রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া এর মধ্যে দিয়ে শুরু হয়েছে। আগামী সপ্তাহের যেকোন সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন এবং তখন তিনি নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক তফসিল ঘোষণা করবেন বলে জানা গেছে।

নির্বাচনকালীন সময়ে সরকার কাঠামো কী হবে এ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে নানা রকম আলোচনা চলছে। যদিও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বশেষ সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন বর্তমানে যে মন্ত্রিসভা আছে সেটিই নির্বাচনকালীন সরকারের মন্ত্রিসভা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। তিনি এটিও বলেছেন যে মন্ত্রিসভা ছোট করলে বিভিন্ন কাজকর্মের অসুবিধা হয়। মন্ত্রিসভা এ রকমই থাকবে। তারা রুটিন কাজ করবে।

তবে জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি নির্বাচনকালীন সরকারে হিস্যা চায়। তারা জাতীয় সংসদে যে রাজনৈতিক দলগুলো আছে তাদের সমন্বয়ে একটি নির্বাচনকালীন সরকার চায়। জাতীয় পার্টির নীতি নির্ধারক সভায় এরকম আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে। একইসাথে বিরোধী দল হিসেবে তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ অন্তত দুটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দাবি করেছে বলেও একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। তবে এ ব্যাপারে সরকারের প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।

অবশ্য এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, যে সমস্ত দল জাতীয় সংসদে আছে তাদের সমন্বয়ে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা যেতে পারে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৩ সালেও এরকম একটি সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। সেই সময় বিএনপি ছিল জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধীদল। জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সহ তারা যে মন্ত্রণালয় চায় সেই মন্ত্রণালয় দিয়ে একটি ঐক্যমতের নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই সময় বিরোধী দলের নেতা বেগম খালেদা জিয়া ওই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। বরং তিনি নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্তে অটল থাকেন। এমনকি প্রধানমন্ত্রী যখন তাকে গণভবনে চায়ের দাওয়াত দিয়েছিলেন, সেই দাওয়াতও তিনি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। এরপর বিএনপিকে ছাড়াই ২০১৪’র ৫ জানুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

২০১৮’র নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করলেও তারা নির্বাচনকালীন সরকারে থাকেনি। যেহেতু জাতীয় সংসদে তাদের অংশগ্রহণ ছিল না। তবে ওই নির্বাচনকালীন সরকারে জাতীয় পার্টিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোরও অন্তর্ভুক্তি ছিল। এখনকার মন্ত্রিসভা সম্পূর্ণভাবে আওয়ামী লীগের মন্ত্রিসভা। এমনকি আওয়ামী লীগের ১৪ দলের শরিকও এই মন্ত্রিসভায় সদস্য নয়। এর প্রেক্ষিতে শেষপর্যন্ত যদি বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে তাহলে নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্যতা দিতে এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতির জন্য সরকার নির্বাচনকালীন একটি সরকার গঠন করতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। সেই নির্বাচনকালীন সরকারে জাতীয় পার্টিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সদস্যদেরকেও আনা হতে পারে।

তবে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সূত্র বলছে যে, এই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণভাবে প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। কারণ বাংলাদেশের সংবিধানে মন্ত্রিসভা গঠনের এখতিয়ার সম্পূর্ণ ভাবে প্রধানমন্ত্রীর। প্রধানমন্ত্রী যাকে ইচ্ছা মনে করবেন, তাকে তিনি মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারবেন। তবে অনির্বাচিত ব্যক্তিদের সংখ্যা হবে এক দশমাংশ। অর্থাৎ ১০ জন সংসদ সদস্য মন্ত্রী হলে তাদের মধ্যে একজন মাত্র অসংসদ সদস্য মন্ত্রী হতে পারবেন। এখন দেখার বিষয় যে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনকালীন সরকার কীভাবে গঠন করেন এবং আদৌ নির্বাচনকালীন সরকারের সময় বর্তমান মন্ত্রিসভার পরিবর্তন করেন কিনা।

বিভিন্ন সূত্রগুলো অবশ্য বলছে যে, জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল যারা জাতীয় সংসদে আছেন তাদের সাথে নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী সংলাপ করতে পারেন। তবে সবকিছুই নির্ভর করছে নির্বাচন কমিশন কোন প্রক্রিয়ায় কবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে তার উপর।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭