ইনসাইড পলিটিক্স

১২৭ জন প্রার্থী পরিবর্তন করে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চূড়ান্ত


প্রকাশ: 10/11/2023


Thumbnail

গতকাল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে দিন থেকে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে সেদিন থেকে আওয়ামী লীগ তার মনোনয়ন ফর্ম বিক্রি করবে। মনোনয়ন ফরমের দাম ৩০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঐ কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে বলেছেন যে, নির্বাচনে কাদেরকে মনোনয়ন দেবেন তার তালিকা পুরোপুরি ভাবে চূড়ান্ত করা হয়েছে।

আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে নিশ্চিত করেছে যে, ৩০০ আসনের চূড়ান্ত মনোনয়ন তালিকা এখন প্রধানমন্ত্রীর টেবিলে। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে বর্তমানে যারা আওয়ামী লীগের এমপি আছেন তাদের মধ্যে অন্তত ১২৭ জন আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবেননা। তাদেরকে নির্বাচনে বাদ দেওয়া হচ্ছে। 

বিভিন্ন সূত্রমতে, আওয়ামী লীগ ধরে নিয়েছে বিএনপি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। কাজেই বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে এটা মাথায় রেখেই মনোনয়ন তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি গতকাল ইঙ্গিত করেছেন যে, বিএনপি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে আসবে মনোনয়ন বাণিজ্য করার জন্য এবং নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য।

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, ১৭২ জন পুরনো প্রার্থী আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জন্য আবার টিকিট পাবেন। ১২৭ জন যে নতুন প্রার্থী রয়েছেন, তাদের মধ্যে অন্তত ১০ জন রয়েছেন যারা ২০০৮ বা ২০১৪ নির্বাচন করেছে। ২০১৮ নির্বাচনে মনোনয়ন পাননি। এ রকম ব্যক্তিদের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেও বিভিন্ন সূত্র বলছেন। 

একেবারে নতুন এবং আনকোরা, ২০০৮ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত কোন নির্বাচনেই প্রার্থী হননি এমন অন্তত ৩০ জন আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। মনোনয়নে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ছাড়াও ব্যবসায়ী, সাবেক আমলা, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা এবং প্রাক্তন সেনা কর্মকর্তাদেরকেও রাখা হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে।

আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র বলছে, তরুণ এবং প্রবীণদেরকে মিলিয়ে এই মনোনয়ন তালিকা করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানাচ্ছে যে, এর মধ্যে তিনশ আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করলেও আওয়ামী লীগ শেষ পর্যন্ত শরিকদের জন্য ৫০টি আসন ছেড়ে দেবে। এ নিয়ে শরিকদের সঙ্গে খুব শিগগিরই বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যে আসনগুলো শরিকদের ছেড়ে দেওয়া হবে সেই আসনগুলোতে যারা আওয়ামী লীগের প্রার্থী আছে তাদেরকে পুরস্কৃত করা হবে। 

একাধিক সূত্র বলছে যে, আওয়ামী লীগ মহাজোটের অধীনে নির্বাচনে যাবে নাকি শুধুমাত্র ১৪ দলকে নিয়ে নির্বাচনে যাবে তা নিশ্চিত নয়।

আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সূত্র বলছে, কৌশলগত কারণে আওয়ামী লীগ ১৪ দলগত ভাবে নির্বাচন করতে চায়। জাতীয় পার্টিকে আলাদা অবস্থানে রেখে নির্বাচনে প্রার্থী দিতে চায়। কারণ বিএনপি যদি শেষ মুহুর্তে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেয় তাহলে কোন আসন যেন প্রার্থী শূন্য না হয় সেই বিষয়টি মাথায় রেখে আওয়ামী লীগ বিভিন্ন ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। 

একাধিক সূত্র বলছে যে, প্রার্থীতা মনোনয়নের ক্ষেত্রে জনপ্রিয়তাকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। তবে কিছু কিছু আসনে আওয়ামী লীগ কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করেছে। যে সমস্ত আসন ঝুঁকিপূর্ণ, যে আসনগুলোয় আওয়ামী লীগ কখনোই নির্বাচিত হতে পারেনি, সেই সমস্ত আসনে অপেক্ষাকৃত তরুণদেরকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, যেন তারা ভবিষ্যতে সংগঠন গোছাতে পারে। নির্বাচনে হারার পরও যেন তারা সাংগঠনিক কাজে নিজেদেরকে ব্যস্ত রাখতে পারে। 

আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সূত্র বলছে, যে যারা ত্যাগী ও পরিশ্রমী কর্মী তাদেরকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে বগুড়া, লক্ষ্মীপুরের মতো বিএনপি প্রবণ এলাকাগুলোতে সাংগঠনিক ব্যক্তিদেরকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। তবে এবারের নির্বাচনে চমক হিসাবে বড় বড় শিল্প গ্রুপের অন্তত তিনজন ব্যক্তি প্রার্থী হতে পারেন বলে জানা যাচ্ছে। এছাড়াও নির্বাচন প্রার্থীদের ক্ষেত্রে আরও কিছু নাটকীয় চমক থাকবে বলেও জানা গেছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭