ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগের মনোনয়ন: মাশরাফী 'হ্যাঁ', সাকিব ‌'না'


প্রকাশ: 10/11/2023


Thumbnail

সাকিব আল হাসান আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। এ জন্য দেনদরবার তদবিরও তিনি কম করেননি। এমনকি এশিয়া কাপের মাঝপথে ঢাকায় এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য। কিন্তু সবকিছুই জলে ভেস্তে গেছে। আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাকিব আল হাসান আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাচ্ছেন না। বরং সাকিব আল হাসান যেন আরও কিছুদিন ক্রিকেট খেলে এটি প্রত্যাশা করছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

অন্যদিকে গত নির্বাচনে নড়াইল থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছিলেন সাবেক জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মাশরাফী বিন মুর্তজা। তিনি সংসদ সদস্য হিসাবে যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। এলাকায় তার জনপ্রিয়তা অটুট রেখেছেন। একাধিক জরিপে তার জনপ্রিয়তার তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ জন্য দ্বিতীয় বারের মতো আওয়ামী লীগের টিকিট পেতে চাচ্ছেন জনপ্রিয় এই ক্রিকেটার। 

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, এবার মনোনয়নে আওয়ামী লীগের টিকিট পাওয়ার জন্য বেশ কয়েকজন বর্তমান এবং সাবেক ক্রিকেটার আগ্রহী হয়েছিলেন। এদের মধ্যে সাকিব আল হাসান ছিল অন্যতম। সাকিব আল হাসান নির্বাচন করার কথা প্রকাশ্যেই ঘোষণা করেছিলেন এবং এ নিয়ে তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন এর সঙ্গেও কথা বলেছিলেন। পাপন বিষয়টি তার এখতিয়ারভুক্ত নয়, এটি সম্পূর্ণ প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ারভুক্ত এমনটি জানিয়েছিলেন। আর এই কারণেই সাকিব আল হাসান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সাকিব আল হাসানকে মনোনয়ন না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগ। 

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ভরাডুবির সাকিব আল হাসানকে নিয়ে সৃষ্ট নানা রকম বিতর্কের প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগ তার ব্যাপারে ধীরে চলো নীতি অনুসরণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সাকিব আল হাসানকে ওয়ানডের অধিনায়ক করা হয়েছিল এবং এই অধিনায়ক হওয়ার পর তামিম বিতর্কে তিনি জড়িয়ে পড়েছিলেন। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ভালো সাফল্য না হওয়ার পিছনে অনেকেই অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের ভূমিকাকেও দায়ী করেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন এই মুহূর্তে সাকিব আল হাসানকে নিয়ে তীব্র সমালোচনা হচ্ছে। এ কারণেই আওয়ামী লীগ এই ঝুঁকিটা নিতে চাননি। 

তবে আওয়ামী লীগের অন্য একটি সূত্র বলছে, ভিন্ন কথা। তারা বলছে, সাকিব আল হাসান এখনও বাংলাদেশের ক্রিকেটের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এবং বাংলাদেশ ক্রিকেটের এ পর্যন্ত সবচেয়ে বড় তারকা হলেন সাকিব আল হাসানই। তাই ক্রিকেটে তার আরও কিছুদিন সার্ভিস চায় বাংলাদেশ। এই মুহূর্তে তিনি যদি রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন বা সংসদ সদস্য হন, সেক্ষেত্রে জাতীয় ক্রিকেট দলে একটা শূন্যতা সৃষ্টি হবে। সামনে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্ট রয়েছে। এই কারণেই সাকিব আল হাসানকে এখনই সংসদ সদস্য হিসেবে না রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন আওয়ামী লীগের অনেক। সবকিছু মিলিয়ে সাকিব আল হাসান আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাচ্ছেন না এটা মোটামুটি নিশ্চিত। 

বিভিন্ন সূত্র বলছে যে, সাকিব আল হাসান মনোনয়ন না পেলেও মাশরাফী বিন মর্তুজাকে রাজনীতিতে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভাবে সংযুক্ত করার পক্ষে আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকরা। তারা মনে করছেন যে মাশরাফীর মধ্যে একটি সহজাত নেতৃত্ব গুণ রয়েছে এবং সংসদ সদস্য হওয়ার পর নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও এলাকায় তিনি তার জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছেন। জনগণের কাছে তিনি একজন আস্থাভাজন জননেতা হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছেন। আর এ কারণেই দ্বিতীয় বারের মতো তিনি মনোনয়ন পেতে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে। মাশরাফী বিন মুর্তজা ছাড়াও সাবেক জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক নাঈমুর রহমান দুর্জয়ও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জের একটি আসন থেকে প্রার্থী হতে যাচ্ছেন। নাঈমুর রহমান দুর্জয়কে নিয়ে নানা বিতর্ক হলেও শেষ পর্যন্ত তিনি আওয়ামী লীগের টিকিট পাচ্ছেন বলে নিশ্চিত করেছে একাধিক সূত্র।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭