ইনসাইড পলিটিক্স

ড. মঈন খান হতে পারেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব


প্রকাশ: 10/11/2023


Thumbnail

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গ্রেপ্তার হয়েছেন গত ২৯ অক্টোবর। ২৮ অক্টোবরের বিএনপির তাণ্ডব এবং নাশকতার পর যারা এই সমস্ত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত এবং নির্দেশদাতা তাদেরকে গ্রেপ্তারের অভিযানে নেমেছে সরকার। আর সেই অভিযানের অংশ হিসাবে প্রথমেই গ্রেপ্তার হন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পর আবার কারাগারে পাঠানো হয়েছে। 

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের অবর্তমানে কে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করবে? এ নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। সেই সময় লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া বলেছিলেন যে দ্রুতই একজন ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব নিয়োগ করা হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হিসেবে কাউকেও নিয়োগ দেওয়া হয়নি। ওই সময় আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব করার একটা পরিকল্পনা হয়েছিল বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। কিন্তু আমীর খসরু মাহমুদ গ্রেপ্তার হওয়ার পর তারেক ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের পরিকল্পনা থেকে পিছিয়ে আসেন। তবে এখন যেহেতু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সহসা মুক্তি পাচ্ছে না বলে ধারণা করা হচ্ছে এবং বিভিন্ন সমঝোতার ইস্যু এবং বিশেষ করে দূতাবাসগুলোর সঙ্গে যোগাযোগের একটা বড় ইস্যু সামনে এসেছে। এজন্য ড. মঈন খানকে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করা নিশ্চিত করেছে। 

গতকাল রাতে লন্ডনে পলাতক তারেক জিয়ার সঙ্গে ড. মঈন খান এবং আরও কয়েকজন বিএনপি নেতার কথা হয়।যাদের সাথে কথা হয়েছে তাদের মধ্যে স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আত্মগোপনে থাকা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ও রয়েছেন। এছাড়াও বিএনপির প্রবীণ কয়েকজন নেতার সঙ্গেও তারেক জিয়া কথা বলেছেন বলে জানা গেছে এবং সকলের মতামতের ভিত্তিতেই মঈন খানকে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব করার ব্যাপারে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। 

ড. মঈন খান মাঠে রাজনীতিতে তেমন গুরুত্বপূর্ণ এবং সরব না হলেও কূটনৈতিক মহলে তার ভাল পরিচয় রয়েছে। বিএনপি মনে করছে যে আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, নির্বাচনে যাওয়া, সরকারের সাথে দর কষাকষি করা এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বিএনপির অবস্থান তুলে ধরার জন্য মঈন খান গুরুত্বপূর্ণ। বিএনপি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে যায়, তাহলে তাকে অনেকগুলো সমঝোতা সংলাপে অংশগ্রহণ করতে হবে। নির্বাচন কমিশনে কিছু দাবি দাওয়া নিয়ে যেতে হবে, কূটনীতিকদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। আর এ কারণেই ড. মঈন খানকে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কারণ এখন শুধুমাত্র স্থায়ী কমিটির সদস্য এই পরিচয় দিয়ে কূটনীতিকদের সঙ্গে নীতিগত কোনো আলাপ আলোচনায় যেতে পারছেন না ড. মঈন খান। 

মঈন খানের সঙ্গে বিভিন্ন দূতাবাসের যে সম্পর্ক তা তার ব্যক্তিগত শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং অতীতের ঘনিষ্ঠতার কারণে। কিন্তু ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব না হলে তিনি বিএনপির নীতি নির্ধারক এবং মুখপাত্র হিসেবে বিবেচিত হবেন না। আর এ কারণেই এখন পর্যন্ত মঈন খানকে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এর ফলে তিনি বিএনপির মুখপাত্র হিসাবে বিভিন্ন কূটনৈতিক বৈঠকে নেতৃত্ব দিতে পারবেন। তাছাড়া বিএনপি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে যাওয়ার নাটকীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সেক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন সহ বিভিন্ন মহলের সাথে আলাপ আলোচনা এবং সমঝোতা প্রক্রিয়াতেও মঈন খান নেতৃত্ব দেবেন। 

তবে বিএনপির কোনো নেতা মনে করছেন যে, শেষ পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব কাউকে নিয়োগ দেওয়া হবে না। কারণ বিএনপি যদি নির্বাচনে যায় তাহলে তারা তাদের দলের নেতাকর্মীদের মুক্তি দাবি করবে এবং সেক্ষেত্রে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নাম সবার ওপরে আসবে। কারণ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে জেলে রেখে বিএনপি নির্বাচনে যাওয়ার কথা ভাবছে না। এরকম পরিস্থিতিতে যেকোনো সংলাপের শুরুতেই বড় মির্জা ফখরুলের মুক্তির বিষয়টি আসতে পারে। 

সরকারি বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, মির্জা ফখরুলের ব্যাপারে সরকার নমনীয়। যদি শেষ পর্যন্ত বিএনপি নির্বাচনে আসবে তাহলে যে সমঝোতা প্রক্রিয়া হবে তাতে মির্জা ফখরুল মুক্তি পেতে পারেন বলেও কেউ কেউ ধারণা করছেন। তবে সবকিছুই নির্ভর করছে লন্ডনে পলাতক যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের ওপর। বিএনপিতে কোনো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নেই, একক ব্যক্তির সিদ্ধান্তেই দল পরিচালিত হয়। কাজেই বিএনপিতে কখন কি ঘটবে তা কেউই অনুমান করে বলতে পারেন না।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭