ইনসাইড পলিটিক্স

৫ ধাপে সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টির পরিকল্পনায় বিএনপি


প্রকাশ: 11/11/2023


Thumbnail

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের জন্য নানামুখী ষড়যন্ত্র চলছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বলেছেন যে ষড়যন্ত্র বানচাল করেই নির্বাচন করতে হবে। বিএনপি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিভিন্নরকম পরিকল্পনা করছে। একদিকে তারা নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করছে। এই আন্দোলনের অংশ হিসাবে আগামী কাল থেকে আবার চতুর্থ দফায় টানা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ শুরু হতে যাচ্ছে।

তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলছেন, এই সমস্ত অবরোধ বা জ্বালাও পোড়াও কর্মসূচি আইওয়াশ। এই কর্মসূচির মাধ্যমে বিএনপি তার অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে। আসলে বিএনপির মূল পরিকল্পনা একটি সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টি করা। যে সাংবিধানিক সংকটের মাধ্যমে একটি অনির্বাচিত সরকারের ক্ষমতায় আসার পথ তৈরি হবে। কীভাবে সাংবিধানিক সঙ্কট সৃষ্টি হতে পারে? এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে বিজেপির মধ্যে নানামুখী আলোচনা হচ্ছে।

একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, ৫ ধাপে সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টির পরিকল্পনা নিচ্ছে বিএনপি। এই সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টির বিএনপি যে কৌশল, সেগুলো হচ্ছে:

১। তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচন পেছানোর দাবি করবে বিএনপি: জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা সময়ের ব্যাপার মাত্র। চলতি সপ্তাহের যেকোনো সময় নির্বাচন কমিশন এই তফসিল ঘোষণা করতে পারে। বিভিন্ন সূত্র বলছে, আগামী মঙ্গল অথবা বুধবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে পারেন। আর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সাথে সাথে বিএনপি অন্য সুরে কথা বলবে। তারা নির্বাচনে যাওয়ার আগ্রহ দেখাবে এবং নির্বাচনের তফসিল পিছিয়ে দেয়ার দাবি জানাবে। এটি হলো বিএনপির প্রথম ফাঁদ।

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, যদি শেষ পর্যন্ত অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য আন্তর্জাতিক মহল চাপ সৃষ্টি করে এবং নির্বাচনের ব্যাপারে একটি সমঝোতার জন্য সংলাপের তাগিদ দেয়। তখন নির্বাচন কমিশন তফসিল পেছাতে পারে।

এখন নির্বাচন কমিশনের যে পরিকল্পনা তা হল নির্বাচনকে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে সম্পন্ন করা। এছাড়া ২৯ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন করার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। বিএনপি এটিকে কৌশলগত কারণে যদি জানুয়ারির ২৩ বা ২৪ তারিখে নিয়ে যেতে পারে তাহলে সেট হবে বিএনপির প্রথম কৌশলের বাস্তবায়ন।

২। নির্বাচনে অংশগ্রহণের নাটকীয় ঘোষণা: অনির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতায় আনার দ্বিতীয় কৌশল হিসেবে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা দেবে। কারণ বিএনপি যদি নির্বাচন বর্জন করছে বা নির্বাচন করবে না এমন ঘোষণা দেয় তাহলে আন্তর্জাতিক কোন মহলের কোনো সহানুভূতি বা সহযোগিতা পাবে না। এ কারণে বিএনপির দ্বিতীয় কৌশল হল তারা নির্বাচনের তফসিল পিছিয়ে দিলে শর্তসাপেক্ষে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চায় এমন একটি ঘোষণা দিবে।

এটি বিএনপি’র আরেকটি ফাঁদ, যেখানে বিএনপি দেখাতে চাইবে যে তারা নির্বাচনে আগ্রহী। সরকার তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দিতে চাচ্ছে না।

৩। প্রতিটি ধাপে নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা: নির্বাচনের ঘোষণার পর বিএনপি যদি শেষ পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেয় তাহলে প্রতি মুহূর্তে তারা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য নানামুখী বক্তব্য রাখবে, কথাবার্তা বলবে এবং নির্বাচনকে বিতর্কিত করার জন্য যা যা করা দরকার সেটা করবে। এটি বিএনপির অনির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতায় আনার তৃতীয় ধাপ।

৪। নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো: বিএনপির বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে এবং সরকার তাদের সাথে কি কি কর্মকাণ্ড করছে ইত্যাদি উল্লেখ করে নির্বাচন থেকে নিজেদের গুটিয়ে নেবে। যেকোন সময় তারা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবে এবং এমন একটি সময় সরে দাঁড়াবে যখন আসলে কারো কিছু করার থাকবে না।

৫। নির্বাচন হতে না দেয়া: নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর পরপরই বিএনপি নির্বাচন প্রতিরোধের ডাক দিবে। নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হচ্ছে না ইত্যাদি বলে তারা একটি ঝটিকা আন্দোলনের চেষ্টা করবে।

এই ৫ ধাপের মাধ্যমে তারা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বানচাল করতে চায় এবং এই পরিকল্পনা নিয়েই বিএনপি শেষ পর্যন্ত এগোবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭