ইনসাইড পলিটিক্স

নির্বাচন প্রশ্নে বিএনপিকে কোনো ছাড় দেবে না আওয়ামী লীগ


প্রকাশ: 12/11/2023


Thumbnail

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি আসবে কি আসবে না এটি বিএনপির একান্ত নিজস্ব রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ কোনো হস্তক্ষেপ করবে না এবং নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কোনো বিষয়ে কোনো ছাড় দেবে না। একাধিক কূটনীতিক মহলের কাছে আওয়ামী লীগ তার অবস্থান এবং বার্তা সুস্পষ্ট করেছে। নির্বাচনের তফসিলের আগেই আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে একটি সমঝোতার চেষ্টা করছে বিভিন্ন দূতাবাস। এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে তারা আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত অন্তত দুজন ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেছেন। তবে এই সমস্ত আলাপ আলোচনা এবং কথাবার্তার মাধ্যমে ইতিবাচক কোনো ফলাফল আসেনি। বরং আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সুস্পষ্টভাবে বলে দেওয়া হয়েছে যে, নির্বাচনের ব্যাপারে বিএনপিকে কোনো রকম ছাড় দেওয়া হবে না। কূটনীতিক মহল থেকে আওয়ামী লীগের কাছে পাঁচটি সমঝোতার প্রস্তাব নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। 

প্রথমত, কূটনীতিক বলেছিল যে, বিএনপির যে নেতাকর্মীদেরকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে সেই গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মীদের যেন মুক্তি দেওয়া হয়। জবাবে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কাউকে রাজনৈতিক কারণে গ্রেপ্তার করা হয়নি। বরং যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই। তারপরও সরকার এই সমস্ত গ্রেপ্তারকৃতদের ব্যাপারে বিশেষ বিবেচনা করবে। তবে সবার আগে বিএনপিকে নির্বাচনে আসার ঘোষণা দিতে হবে এবং আন্দোলন প্রত্যাহার করতে হবে। বিএনপি যতক্ষণ পর্যন্ত আন্দোলন প্রত্যাহার না করবে এবং নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা না দেবে, ততক্ষন পর্যন্ত তাদেরকে কোনো রকম ছাড় দেওয়া হবে না বলেই আওয়ামী লীগের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। 

কূটনীতিক মহল আওয়ামী লীগের কাছে দ্বিতীয় যে প্রস্তাব দিয়েছিল তা হল, বিএনপির সঙ্গে নির্বাচনকালীন সরকার এবং নির্বাচনের সময় কিভাবে দেশ পরিচালিত হবে সে ব্যাপারে একটি মাঝামাঝি অবস্থানে আসা। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মানার প্রয়োজন নেই। কিন্তু অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন যেন হয় সেটির ব্যাপারে দু পক্ষের মধ্যে একটি সমঝোতার চেষ্টা হতেই পারে এমন একটি মনোভাব দেখিয়েছিল বিদেশি দূতাবাসগুলো। এর জবাবে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী। সংবিধানে যেভাবে আছে সেভাবেই নির্বাচন হবে। আর এই ধরনের সমঝোতা বা আলোচনা তখনই হতে পারে যখন বিএনপি নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেবে।

তৃতীয়ত যে বিষয় নিয়ে কূটনীতিক মহল আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলাপ করছিল, তাহল বিরোধী দল হিসেবে বিএনপিকে নির্বাচনে সমান সুযোগ সুবিধা দেওয়া এবং একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা। জবাবে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, সংসদীয় গণতন্ত্রের দেশে বিরোধী দল হল সেই দল যারা সংসদে দ্বিতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা। বাংলাদেশে এখন বিরোধী দল হল জাতীয় পার্টি। আর যেহেতু বিএনপির কোনো সংসদে অবস্থান নেই। কাজেই তারা স্বীকৃত বিরোধী দল নয়। এই কারণেই বিএনপি সমান সুযোগ সুবিধা পাবে না। তবে একটি বড় রাজনৈতিক দল হিসেবে তাদের যা প্রাপ্য সেটি দিবে। নির্বাচন হবে অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ। এ ব্যাপারে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। 

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর বিএনপি নির্বাচন পেছানোর জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে যেতে পারে এবং একটি সম্মানজনক সময়সীমা তাদেরকে যেন দেওয়া হয়, যেন তারা প্রস্তুত হয়ে নির্বাচনে যেতে পারে সে পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে নির্বাচন কমিশন যে তফসিল ঘোষণা করবে সেখান থেকে পিছিয়ে যাওয়ার আর কোনো সম্ভাবনা নাই। আওয়ামী লীগ সেটা মানবে না।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭