ইনসাইড পলিটিক্স

রিজভী কি সরকারের এজেন্ট?


প্রকাশ: 12/11/2023


Thumbnail

রুহুল কবির রিজভী সরকারের এজেন্ট কি না—এ নিয়ে বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বিএনপিতে এ নিয়ে হচ্ছে নানামুখী আলাপ আলোচনা। রুহুল কবির রিজভী বিএনপির একজন ত্যাগী পরীক্ষিত নেতা হিসেবে পরিচিত। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব। অনেকেই মনে করেন, তার স্থায়ী কমিটির সদস্য হওয়া উচিত। কিন্তু তারেক জিয়ার ঘনিষ্ঠ না হওয়ার কারণে তিনি স্থায়ী কমিটির সদস্য হতে পারেননি। স্থায়ী কমিটির সদস্য হন না হন তার প্রতি দলের নেতাকর্মীদের রয়েছে অগাধ শ্রদ্ধা ভালোবাসা। কিন্তু সেই রিজভী এখন বিতর্কিত হতে চলেছেন। তাকে নিয়ে দলের ভিতর অনেক প্রশ্ন উঠেছে। 

অনেকেই মনে করছেন যে, রুহুল কবির রিজভী যেভাবে আপসহীন এবং আগ্রাসী মনোভাব দেখাচ্ছে, সেটা সরকারের ইশারায়। বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা গ্রেপ্তার হলেও রুহুল কবির রিজভী এখনও ধরা ছোঁয়ার বাইরে। সরকার তাকে গ্রেপ্তার করছে না ইচ্ছে করেই। বরং রুহুল কবির রিজভীকে বাইরে রেখে সরকার তার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে বলে বিএনপির কোন কোন নেতা মনে করেন। প্রতিদিনই বিভিন্ন স্থানে তাকে বিক্ষোভ করতে দেখা যাচ্ছে। ঝটিকা মিছিল করছেন। বিএনপির কর্মসূচিও ঘোষণা করেছেন এই নেতা। আর এ কারণেই মনে করা হচ্ছে, অন্য নেতাদের যখন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, তখন রিজভীকে কেন ধরাছোঁয়ার বাইরে রাখা হয়েছে তার নিশ্চয়ই কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে। 

বিভিন্ন মহল মনে করে যে রিজভীকে ধরাছোঁয়ার বাইরে রাখার একটি বড় উদ্দেশ্য হল বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখা। বিএনপিতে যে সমস্ত নেতারা এখন নির্বাচনের পক্ষে এবং যারা মনে করেন যে অস্তিত্ব রক্ষার জন্য নির্বাচনে যাওয়া উচিত, নির্বাচনে গিয়ে সরকারের ভুল ত্রুটি এবং নির্বাচনে পক্ষপাতিত্ব গুলো উন্মোচন করা দরকার তারা এখন রুহুল কবির রিজভীকে সরকারের এজেন্ড মনে করছেন। কারণ সরকার কোনো ভাবেই চায় না যে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। বরং বিএনপি নির্বাচনে এলে তারা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করবে, নির্বাচনকে বিতর্কিত করবে। এমনকি মাঝপথ থেকে সরে গিয়ে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করবে বলে সরকার মনে করে। আর এ কারণে বিএনপিকে দূরে রেখে অন্য সব রাজনৈতিক দলগুলো যে যার মতো করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করাটাই সহজ পথ হিসেবে আওয়ামী লীগ বেছে নিয়েছে। আর সেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য আওয়ামী লীগ এখন কাজ করছে। আর এ কারণেই বিএনপি নেতাদের ধরপাকড় এবং গ্রেপ্তার চলছে বলে অনেক বিএনপি নেতা মনে করেন। আর এই কারণেই তারা ভাবছেন যে বিএনপিতে যারা নির্বাচনমুখী, যারা সরকারকে চ্যালেঞ্জ দিয়ে নির্বাচন করতে চান, তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। আর রুহুল কবির রিজভীকে মুখপাত্র হিসেবে রাখা হয়েছে যেন বিএনপি কোনো অবস্থাতেই নির্বাচনে যেতে না পারে। বিএনপির যেন নির্বাচন থেকে দূরে থাকার সিদ্ধান্তে অটল থাকে এবং শেষ পর্যন্ত এই ধরনের অবরোধ, ভাঙচুর ইত্যাদি দিয়ে রাজনীতির মাঠে অস্তিত্বহীন অবস্থায় থাকে সেটাই আওয়ামী লীগ চায়। আর সেই চাওয়াটা পূরণ করেছেন রুহুল কবির রিজভী। 

বিএনপি যতক্ষণ পর্যন্ত হরতাল, নাশকতা, অগ্নিসংযোগের রাজনীতি করেনি, ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের ব্যাপারে সাধারণ মানুষের সহানুভূতি ছিল। কিন্তু রিজভীর মতো উগ্রবাদী নেতারা বিএনপিকে সহিংস রূপে নিয়ে গেছে। তাদের উস্কানিতে বিএনপি প্রধান বিচারপতির কার্যালয়ে হামলা করেছেন, পুলিশ কনস্টেবলকে নির্মমভাবে পিটিয়েছেন, এমনকি হাসপাতালে পর্যন্ত আক্রমণ করছে। এই সমস্ত তৎপরতা গুলো বিএনপিকে জনবিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে এবং কোণঠাসা করে ফেলেছে। বিএনপি এখন না পারছে আন্দোলন করতে না পারছে নির্বাচন করতে। এরকম একটি অবস্থা সৃষ্টির জন্য রিজভীর মতো দরকার। আর এ কারণেই আওয়ামী লীগ রিজভীকে এক ধরনের পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে বলেও বিএনপির অনেক নেতা মনে করেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭